ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর কোনটা? অবশ্যই উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। মাস খানেক বিরতির পর আবারো মাঠে ফিরছে ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই আসর। গ্রুপ পর্বের খেলা শেষ হয়ে গেছে অনেক আগেই। দিন আটেক পর শুরু হবে শেষ ষোলের লড়াই।
শেষ ষোলোতে আছে বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদ, পিএসজি, বায়ার্ন মিউনিখের মতো বড় বড় নাম। মেসি, রোনালদো, নেইমার, লেভানডফস্কিদের জাদু দেখার জন্য মুখিয়ে গোটা ফুটবল বিশ্ব।
পিএসজি-বার্সেলোনা লড়াইয়ের দিকে চোখ থাকবে অনেকের। এই ম্যাচের আগে দুই দলের অবস্থাটা ঠিক কীরকম?
লা লিগায় চির প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছেন বার্সেলোনা। অন্যদিক, আরো একধাপ নিচে পিএসজি। লিগ ওয়ানে তাদের অবস্থান তৃতীয়।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রাউন্ড অব সিক্সটিনে দেখা হচ্ছে বার্সেলোনা-পিএসজির। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এবারই প্রথম নয়, এর আগেও অনেকবার দেখা হয়েছে এই দুই পরাশক্তির।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে সেরা কামব্যাক বললে, আগে আসবে বার্সেলোনা বনাম পিএসজির ম্যাচের কথা। ২০১৭ সালের ঘটনা। শেষ ষোলের লড়াইয়ে প্যারিসে প্রথম লেগে ৪-০ গোলে হেরেছিল বার্সা। দ্বিতীয় লেগে ন্যূ ক্যাম্পে যা করলো বার্সা, তা সত্যিই অবিশ্বাস্য। পিএসজিকে কাঁদিয়ে ৬-১ গোলে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল তারা। যেখানে শেষ পাঁচ মিনিটে ৩ গোল দিয়েছিল স্প্যানিশ জায়ান্টরা। সেই ম্যাচের নায়ক ছিলেন সাবেক বার্সা বয় বর্তমান পিএসজি প্রাণভোমরা নেইমার জুনিয়র। বলতে গেলেই একাই হারিয়ে দেন তাঁর বর্তমান ক্লাবটিকে।
এরপর দলবদলের রেকর্ড গড়ে প্যারিসে পাড়ি জমান এই ব্রাজিলিয়ান সেনসেশন। ব্রাজিল তারকা পিএসজিকে এখনো বড় কোনো সাফল্য এনে দিতে পারেনি। ক্লাব ইতিহাসের প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে তুলেছিলেন। তবে শিরোপা এনে দিতে পারেননি।
মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে বার্সেলোনা। বার্সার ৪ জয়ের বিপরীতে পিএসজির জয় ২ টা; ড্র হয়েছিল ২ টা।
বার্সা-পিএসজির লড়াই হবে ঠিকই। তবে, লড়াই হবে আরেক জায়গায়। সাবেক ক্লাবের বিরুদ্ধে নেইমারের লড়াই। লড়াইটা বন্ধু লিও মেসির বিপক্ষেও। নেইমারকে আটকানোর জন্য বার্সা বস কোম্যানকে যে আলাদা ছক কষতে হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। পিএসজিও কী নির্ভার থাকতে পারবে? প্রতিপক্ষ দলে যে একজন লিও মেসি আছেন। নিজের দিনে যে প্রতিপক্ষের সব পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে পারেন। তাঁকে আটকানোর সর্বোচ্চ চেষ্টাই যে করবেন পিএসজি মাস্টারমাইন্ড পচেত্তিনো তা তো অনুমান করাই যায়।
বার্সেলোনা শিবিরে দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে প্লেয়ারদের ইনজুরি। তরুণ সেনসেশন আনসু ফাতি ছিটকে গেছেন। এই মৌসুমে লা লিগায়ও মাঠে নামা হবে না তাঁর! ডিফেন্ডার পিকে নাই অনেকদিন ধরে। ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার কোতিনহোও পুরোপুরি ফিট নয়। সর্বশেষ যোগ হয়েছে আরো দুইটা নাম সার্জিও রবার্তো ও রোনাল্ড আরাউহো। উরুগুয়ান ডিফেন্ডার আরাউহো রক্ষণে ভালোই আলো ছড়াচ্ছিলেন। তাঁকে হারিয়ে যেন দুশ্চিন্তা আরো বাড়লো বার্সার।
বার্সেলোনার মতো পিএসজির ইনজুরির তালিকা অতটা দীর্ঘ নয়। স্প্যানিশ লেফটব্যাক বার্নেট লিগামেন্টের ইনজুরিতে ভুগছেন। ফিরতে পারেন মার্চের মাঝামাঝি সময়ে। গোলরক্ষক কেইলার নাভাস, স্প্যানিশ মিডফিল্ডার আন্দ্রে হেরেইরারও ইনজুরি সমস্যা রয়েছে। তবে, পিএসজিকে স্বস্তি দিবে না সম্ভবত ডি মারিয়ার ইনজুরি! লিগ ওয়ানে মার্শেই এর বিপক্ষে পাওয়া চোট বার্সেলোনা ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছে তাঁকে!
বার্সেলোনা পিএসজির লড়াইটা হবে সমানে সমানে। কাউকে এগিয়ে রাখার সুযোগ নাই। তবে, এই লড়াইয়ে কে জিতবে, তাঁর জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে আরো কিছুদিন।