ওয়ানডে বিশ্বকাপ দিয়ে সাদা বলে নিজের আগমনী বার্তা দিয়েছিলেন রাচিন রবীন্দ্র; পুরো ক্রিকেট বিশ্ব জেনেছিল নতুন এক নক্ষত্রের উপস্থিতি। এরপর বাকি ছিল লাল বলে নিজের জায়গা করে নেয়া। সেটাও করে ফেললেন তিনি, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলার মধ্য দিয়ে রেকর্ড বইয়ে ঝড় তুললেন।
চার নম্বরে নেমে ৩৬৬ বল খেলেছেন এই তরুণ, করেছেন ২৪০ রান। ২৬টি চার আর তিন ছক্কায় সাজানো এই ইনিংসে ছিল পুরোদস্তুর টেস্ট মেজাজ। তাঁর এমন ব্যাটিংয়ের কল্যাণে প্রথম ইনিংস শেষে রানের পাহাড় গড়তে সক্ষম হয়েছে কিউইরা।
এই ম্যাচে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে ২৩২ রানের ম্যারাথন জুটি গড়েছিলেন তিনি। তারপর ড্যারেল মিশেলের সঙ্গে মিলে স্কোরবোর্ডে যোগ করেছেন আরো ১০৩ রান। শেষপর্যন্ত নিল ব্রান্ডের বলে আউট হওয়ার আগে পূর্ন করেছেন ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল হান্ড্রেড, সেই সাথে দলকে পৌঁছে দিয়েছিলেন অনন্য উচ্চতায়।
মজার ব্যাপার, এই ইনিংস দিয়েই টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মত তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেছেন এই বাঁ-হাতি। অবশ্য সেঞ্চুরি তো দূরে থাক, আগের ছয় ইনিংসে কখনো বিশ রানের বেশি করা হয়নি তাঁর। অর্থাৎ সেট হয়ে বড় রান করার সুযোগ পাওয়া মাত্রই কাজে লাগিয়েছেন তিনি, এটিই সম্ভবত সেরা ব্যাটারদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি – সুযোগ কাজে লাগানো।
এর মধ্য দিয়ে দারুণ এক কীর্তিও গড়েছেন এই উদীয়মান তারকা। লাল বলে মেইডেন সেঞ্চুরি করার ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এতদিন ছিল ম্যাথিউ সিনক্লেয়ারের দখলে। ১৯৯৯ সালে প্রথম শতক হাঁকানোর পর ২১৪ রানে থেমেছিলেন তিনি। তবে কিউই অলরাউন্ডার ভেঙে দিলেন সেই মাইলফলক, পূর্বসূরির চেয়ে ২৬ রান বেশি করেছেন তিনি।
ভারতের মাটিতে নিজের ব্যাটিং সত্তা প্রকাশ করে চমকে দিয়েছিলেন রাচিন রবীন্দ্র। তাই তো দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তাঁর এই পারফরম্যান্সে অবাক হওয়ার কিছু নেই; বরং নিখাঁদ মুগ্ধতা নিয়ে উপভোগ করার আছে অনেক কিছু। ক্যারিয়ারের বাকি দিনগুলোতেও এভাবে ক্রিকেটপ্রেমী আর ভক্ত-সমর্থকদের মুগ্ধ করে যাবেন তিনি, এটাই আপাতত প্রত্যাশা।