ডাগআউট থেকে মাঠ – বিতর্ক ছাপিয়ে রাজস্থানের নেতৃত্বে পাবেন কে?

রাজস্থান রয়্যালসের প্রধান কোচ হিসেবে রাহুল দ্রাবিড়ের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নাড়িয়ে দিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটিকে। পুনরায় যোগদানের মাত্র এক বছর পরেই কেন এই সিদ্ধান্ত? রয়্যালসের আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিং এ জানানো হয়, আরও বড় দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া সত্ত্বেও, তা গ্রহণ করেননি রাহুল।

রাজস্থান রয়্যালসের প্রধান কোচ হিসেবে রাহুল দ্রাবিড়ের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নাড়িয়ে দিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটিকে। পুনরায় যোগদানের মাত্র এক বছর পরেই কেন এই সিদ্ধান্ত? রয়্যালসের আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিং এ জানানো হয়, আরও বড় দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া সত্ত্বেও, তা গ্রহণ করেননি রাহুল।

তাঁর এই সিদ্ধান্তকে ব্যক্তিগত পছন্দ হিসাবে বর্ণনা করেছে দলটি। তবে ক্রিকবাজের একটি প্রতিবেদন আরও জটিল পটভূমির ইঙ্গিত দেয় – যার মধ্যে রয়েছে দলের নেতৃত্বের উপর ক্ষমতার লড়াই এবং কৌশলগত সিদ্ধান্তের প্রতি দ্রাবিড়ের অসম্মতি। বিশেষ করে ভবিষ্যতের অধিনায়কত্ব নিয়ে ম্যানেজমেন্টের সাথে একমত ছিলেন না দ্রাবিড়।

যেই দলের খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন, সেই দলের মেন্টর হিসেবে ফিরে আসেন ২০২৫ আইপিএলের আগে। তিনি হেড কোচের দায়িত্বে থাকাকালীন ২০২৪ এর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করে ভারত। কিন্তু গেলো আইপিএলে কোনো প্রাপ্তি নেই রাজস্থানের। পয়েন্ট টেবিলে তলানিতে থেকে শেষ হয় দলটির আইপিএল মিশন।

সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়, বড় পদ দেওয়ার কথা বলা হলেও সেখানে কার্যত হাত-পা বাঁধা থাকত রাহুল দ্রাবিড়ের। বলা হচ্ছে, সেটা এমনই একটা পদ যেখানে কোচের নিজস্ব কোনো স্বাধীনতা থাকত না। সেখানে তিনি নিজের মত কোনো কাজ করতে বা সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন না। বিশেষ করে মূল স্কোয়াড গঠন ও অধিনায়ক নিয়োগের ব্যাপারে তাঁর কোনো ভূমিকাই মানতে নারাজ ছিল রাজস্থান রয়্যালস।

এই দ্বন্দ্বের মূলে রয়েছে রিয়ান পরাগকে অধিনায়ক করার চেষ্টা, যেটা চাওয়া হচ্ছিল খোদ টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে। বিশেষ করে দীর্ঘদিনের অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসনের ইনজুরি সমস্যা ছিল। দলও সাফল্য পেতে ব্যর্থ হচ্ছিল। তাই, রিয়ান পরাগের মত তরুণ কাউকে দলের দায়িত্ব দেওয়ার কথা ভাবছিল রয়্যালস। অন্যদিকে, রাহুল দ্রাবিড়ের ভাল একটা বোঝাপড়া তৈরি হয়েছিল সাঞ্জু স্যামসনের সাথে।

পরাগ গেল মৌসুমে স্যামসনের অনুপস্থিতিতে একাধিক ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।  ব্যাট হাতে অবদান থাকলেও নেতৃত্বের জায়গা থেকে ব্যর্থ হন পরাগ। ২০২৪ সালটা দারুণ কাটে তাঁর। ১৫০ গড়ে পরাগ তুলে নিয়েছিলেন ৫৭৩ রান। ২০২৫ সালে ১৬৬ গড়ে ৩৯৩ রান করেন বটে, তবে তার অধিনায়কত্ব ও ইমপ্যাক্ট নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সেখানেই আপত্তি ছিল রাহুল দ্রাবিড়ের। 

রয়্যালস ম্যানেজমেন্টের রিয়ান পরাগকে নিয়ে আগ্রহ এখন তুঙ্গে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এই খেলোয়াড়ের ভক্তের সংখ্যা অনেক বেশি। যেহেতু গোহাটি স্টেডিয়াম রাজস্থানে রয়্যালসের হোম গ্রাউন্ড, তাই সেখানে প্রচারণার বিশেষ অংশ হিসেবে কাজ করতে পারেন পরাগ। এরই ধারাবাহিকতায় উঠে আসছে আরও দুই খেলোয়াড়ের নাম। যশস্বী জয়সওয়াল এবং ধ্রুব জুরেল, যারা ধরে রেখেছেন নিজেদের ফর্ম। 

সাবেক অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসনকে ঘিরেও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। রাজস্থান রয়্যালস তাদের স্কোয়াডে বড়সড় পরিবর্তনের পরিকল্পনা করছে, যেখানে সাঞ্জুকে ছেড়ে দেয়া হবে দল থেকে। সাঞ্জুর ভবিষ্যৎ নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজির অস্পষ্টতা দ্রাবিড়ের সিদ্ধান্তে বড় প্রভাব ফেলেছে। কারণ দ্রাবিড় দীর্ঘদিন ধরে সাঞ্জুর মেন্টর ছিলেন — ভারত ‘এ’ থেকে শুরু করে জাতীয় দল পর্যন্ত। সব মিলিয়ে দলটির ও সাঞ্জুর ভবিষ্যৎ এখন ঝুলছে ম্যানেজমেন্টের হাতে।

Share via
Copy link