এক দশক ধরে বৈশ্বিক শিরোপা ঘরে তুলতে পারেনি ভারত। সর্বশেষ লন্ডনের ওভালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২০৯ রানে হেরে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা খুইয়েছে রোহিত শর্মার দল। এ নিয়ে গত ১০ বছরে চারবার বৈশ্বিক আসরে রানার্স আপ হলো ভারত। আর এতে করেই আলোচনাটা বেশ সরব হয়ে উঠেছে। কোচ হিসেবে রাহুল দ্রাবিড়ের জায়গাটা এখন বেশ নড়বড়ে। এমনকি বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিবি) কোচ পাল্টানোর পথেও হাঁটতে পারে।
ভারতের প্রতিনিয়ত এমন তীরে এসে তরী ডোবা নিয়ে, এরপর থেকেই দলকে নিয়ে সমালোচনায় যোগ দিয়েছেন সাবেক ক্রিকেটাররা। সৌরভ গাঙ্গুলি যেমন ওভালের এ ফাইনাল হারের পিছনে টপ অর্ডার ব্যাটারদের অফ ফর্মকেই দায়ী করেছেন। একই সাথে তিনি দুষলেন কোচ রাহুল দ্রাবিড়কেও।
তবে সৌরভ গাঙ্গুলির এ মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আবার কোচ রাহুল দ্রাবিড় জানিয়েছেন, ‘ব্যাটিং অর্ডারের প্রথম ৫ জনই এই মুহূর্তে দেশের সর্বোচ্চ ৫ অভিজ্ঞ ও সেরা ব্যাটার। এই দলটা নিয়ে আমরা অস্ট্রেলিয়াতে জিতেছি, ইংল্যান্ডের মাটিতেও এরাই দেশকে জয় এনে দিয়েছে। তারা সবাই দুর্দান্ত ব্যাটার। হ্যাঁ। আমি মানছি। তাঁরা শেষ ম্যাচে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি।’
এ ছাড়া তিনি আরো যুক্ত করে বলেন, ‘আসলে কিছু উইকেট খুব চ্যালেঞ্জিং হয়। ওভালের এই উইকেটও ভালই ছিল। কিন্তু এই সব উইকেটের কন্ডিশন এমনই হয় যে, ফলাফল কেন্দ্রিক ম্যাচ হয় বেশি। ভারতে অবশ্য তা হয় না। মূলত, এ কারণে আমাদের ভাবনায় জয়ের ভাবনা ছাড়া বিকল্প কিছু ছিল না।’
সৌরভ গাঙ্গুলির প্রত্যুত্তরে ভারতীয় কোচের এমন অজুহাত অবশ্য মেনে নিতে পারেন নি ভারতের আরেক সাবেক ক্রিকেটার সুনীল গাভাস্কার। রাহুল দ্রাবিড়ের ব্যাখ্যার বিপরীতে তিনি বলেন, ‘আমরা ভারতকে নিয়ে কথা বলতে চাই। নির্দিষ্ট কোনো খেলোয়াড়কে নিয়ে নয়। এটা তো সত্যই যে, শেষ কয়েক বছরে ভারতের বেশ কিছু ব্যাটারের ব্যাটিং গড় অবনমিত হয়েছে। এটা কেন হচ্ছে? কোনো অজুহাত না দিয়ে আগে এটা নিয়ে কাজ করা উচিৎ, কথা বলা উচিৎ।’
এ নিয়ে আরো যুক্ত করে তিনি বলেন, ‘অজুহাত দেখানোর কিছু নেই। এখানে সবার আগে স্পটভাষী হতে হবে। টপ অর্ডাররা এখানে ব্যর্থ হয়েছে, এটা সবার কাছেই দৃশ্যমান। এখানে তাদের রক্ষা করে বলার কিছু নেই। কেউ আমাকে বলুন, শুরু থেকে ওদের ব্যাটিং কৌশল কেমন ছিল। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের সঙ্গে এই অ্যাপ্রোচ কি আসলেও মানানসই ছিল?’
গত এক দশকে ভারতের বড় সাফল্য বলতে মহাদেশীয় টুর্নামেন্টেই সীমাবদ্ধ। ২০১৬ ও ২০১৮, এই দুই আসরে এশিয়া কাপ জিতেছিল তাঁরা। সুনীল গাভাস্কারের মতে, ‘এভাবে চলতে থাকলে ভারতের বড় ট্রফি জেতার আর স্বপ্ন দেখার দরকার নেই। তাঁদেরকে এরকম মহাদেশীয় ট্রফি জিতেই তুষ্ট থাকতে হবে।’