রংপুর রাইডার্স সবার চেয়ে আলাদা যেখানে

গত কয়েক আসর জুড়ে কয়েকজন দেশীয় ক্রিকেটারকে নিজেদের পোস্টার বয় বানিয়ে নিতে পেরেছে তাঁরা, নিজস্ব একটা সমর্থকগোষ্ঠি তৈরি করতে পেরেছে। এখন সোহান, শেখ মেহেদীর কথা ভাবলেই রাইডার্স বাহিনীর কথা মনে পড়তে বাধ্য। আবার উল্টো ব্যাপারটাও সত্যি।

ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২৬ রানের, প্রায় অসম্ভব সেই সমীকরণ মিলিয়ে ফেলেন নুরুল হাসান সোহান। অবিশ্বাস্য সেই জয়ের রেশ কাটতে না কাটতেই রংপুর রাইডার্স আরো একবার বিস্ময় জাগালো লাল-সবুজের ক্রিকেটাঙ্গনে। খুলনা টাইগার্সের হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচটা চোখের পলকে কেড়ে নিয়েছে তাঁরা।

খুলনার তিন ওভারে প্রয়োজন ছিল মাত্র ২২ রানের; অথচ শেখ মেহেদী, আকিফ জাভেদ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন নিজেদের ওভারে যথাক্রমে চার, ছয় এবং তিন রান খরচ করেন। এই জয় আসলে রংপুরের দুর্দান্ত প্ল্যানিং, এক্সিকিউশন এবং ক্রিকেটীয় সামর্থ্যের প্রমাণ দেয়।

অবশ্য দলটার মাঝে এসব থাকবে সেটাই স্বাভাবিক, তা নাহলে টানা সাত ম্যাচ জেতা সম্ভব হতো না কোনদিনই। এর মধ্য দিয়ে প্রথম দল হিসেবে চলতি বিপিএলে নক আউট নিশ্চিত করলো তাঁরা।

রংপুর বিপিএলের ফ্রাঞ্চাইজি হলেও পেশাদারিত্ব বিবেচনায় আইপিএলের ফ্রাঞ্চাইজির সঙ্গে তুলনা করতে পারবেন। গত কয়েক আসর জুড়ে কয়েকজন দেশীয় ক্রিকেটারকে নিজেদের পোস্টার বয় বানিয়ে নিতে পেরেছে তাঁরা, নিজস্ব একটা সমর্থকগোষ্ঠি তৈরি করতে পেরেছে। এখন সোহান, শেখ মেহেদীর কথা ভাবলেই রাইডার্স বাহিনীর কথা মনে পড়তে বাধ্য। আবার উল্টো ব্যাপারটাও সত্যি।

তাছাড়া প্রতি বছর দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ স্কোয়াড তৈরি করে দলটা। প্রতিটা সিদ্ধান্ত ভেবেচিন্তে নেয় তাঁরা, এই যেমন হাসান মাহমুদকে এবার ডেরায় ভেড়াতে না পেরে আরেক ডেথ ওভার স্পেশালিস্ট সাইফউদ্দিনকে ঠিকই নিয়ে নিয়েছে। এছাড়া অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের অভাব খুশদিল শাহকে দিয়ে কিছুটা হলেও পূরণ করতে পারছে।

মানে কোন কোন জায়গায় কেমন খেলোয়াড় দরকার, সেটা পরিকল্পনা করে – সেই মাফিক দল সাজায় রংপুর। অধিনায়কের কথাও ভাবুন, অন্যদলগুলো যেখানে একেক মৌসুমে একককে জানেন অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দিয়েছে সেখানে সোহান রংপুরের অবিসংবাদিত নেতা – অনেকটা যেন মহেন্দ্র সিং ধোনি এবং চেন্নাই সুপার কিংসের ছায়া।

সব মিলিয়ে ফ্রাঞ্চাইজিটি আসলে রোল মডেল হয়ে উঠেছে বাকি সবার জন্য, মাঠ কিংবা মাঠের বাইরে তাঁদের প্রচেষ্টা অনন্য করে তুলেছে। সেজন্যই রংপুর রাইডার্স গ্লোবাল সুপার লিগ জিতলে অবাক হওয়ার কিছু থাকে না, টানা সাত ম্যাচ জিতলেও না। বরং, এই রংপুরকে দেখে শেখা উচিৎ বিপিএলের বাকি সব ফ্র্যাঞ্চাইজির।

Share via
Copy link