হারের বৃত্তে ব্যাঙ্গালুরুর ঘুরপাক

ম্যাক্সির ছক্কাবৃষ্টি, ডু প্লেসির সময়োপযোগী ইনিংস — ম্যাচটা জিততেই পারতো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। অন্তত এ দুই ব্যাটারের ব্যাটে চেপে সেই পথেই ছিল ব্যাঙ্গালুরু। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চেন্নাই সুপার কিংসের ২২৭ রানের রানপাহাড় আর টপকাতে পারেনি তাঁরা। আশা জাগিয়েও চেন্নাইয়ের বিপক্ষে তাদের পরাজয় জুটেছে ৮ রানে।

টসে হেরে এ দিন শুরুতেই রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের উইকেট হারায় চেন্নাই সুপার কিংস। তবে চেন্নাইয়ের ব্যাটারদের জ্বলে ওঠা শুরু হয় তার পর থেকেই। রুতুরাজের পর ব্যাটিংয়ে নেমে ব্যাঙ্গালুরুর বোলারদের উপর চড়াও হতে শুরু করেন আজিঙ্কা রাহানে। তবে সাবলীল ব্যাটিং করতে থাকা এ ব্যাটার ইনিংস তেমন বড় করতে পারেননি। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান ৩৭ রানে।

তবে দারুণ গতিতে চেন্নাইয়ের ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাওয়া রাহানে ফিরে গেলেও রানগতি পরবর্তীতে থামেনি। বরং চার নম্বরে ব্যাট করতে এসে ব্যাঙ্গালুরু বোলারদের উপর একটা ছোটখাট ঝড় বইয়ে দেন শিভাব দুবে। আর ওপেনিংয়ে নামা ডেভন কনওয়েও ততক্ষণে নিজের খোলস ছেড়ে আক্রমণাত্বক ভূমিকায় আবর্তিত হতে শুরু করেন।

এ দুই ব্যাটারের জুটি থেকে আসে ৮০ রান। আর এই জুটিতেই ২০০ রান সংগ্রহের পথে দারুণভাবে এগিয়ে  যায় চেন্নাই। কনওয়ে এ দিন ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূরণ করার পর হয়ে ওঠেন আরো আগ্রাসী। বোলারদের ধেয়ে আসা বলে চার ছক্কা তুলে নেওয়ার দিকেই তখন তাঁর পূর্ণ মনোযোগ। তবে সেঞ্চুরির পথে হাঁটা কনওয়ে সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন ঐ আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়েই। ৬ চার আর ৬ ছক্কায় ৮৩ রানের রানের ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত থামেন এ কিউই ব্যাটার।

কনওয়ের এমন দুর্দান্ত ইনিংস খেলার দিনে ফিফটি পান শিভাব দুবেও। ফিফটির পর অবশ্য উইকেটে আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি এ ব্যাটার। ২৭ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলে ফিরে যান।  তবে এ ইনিংস খেলার পথে চারের চেয়ে ছক্কা মারার দিকেই যেন এ দিন চোখ ছিল দুবের। ৫২ রানের এ ইনিংস সাজিয়েছেন ২ চার আর ৫ ছক্কার মিশেলে।

কনওয়ে, দুবের ঝড়ো ইনিংসেই ২০০ পেরোনো স্কোরের পথ পেয়ে যায় চেন্নাই। তবে শেষ দিকে রাইডু, মঈনদের ছোট দুটি ক্যামিওতে শেষ পর্যন্ত ২২৭ রানের রানপাহাড়ে চাপে চেন্নাই সুপার কিংস।

২২৮ রানের এমন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। প্রথম ওভারেই কোহলির উইকেট হারানোর পর, এর কিছুক্ষণ বাদে মাহিপল লোমরারও ফিরে যান দ্রুতই। তবে ব্যাঙ্গালুরুকে এমন অবস্থা থেকে পথ দেখাতে শুরু করেন ফাফ ডু প্লেসি আর গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।

সাময়িক বিপদ প্রতিহত করে কিছুক্ষণ বাদে চেন্নাইয়ের বোলারদের উপর পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন ম্যাক্সওয়েল। চেন্নাইয়ের দেওয়া রান পাহাড় টপকে যাওয়ার পথে এক রকম বিধ্বংসী রূপেই আবির্ভূত হয়েছিলেন অজি এ ব্যাটার। সাথে ডু প্লেসিও দারুণ সঙ্গ দিচ্ছিলেন।

আর তাতে ২২৮ রানের লক্ষ্যে ঠিকঠাক ভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিল ব্যাঙ্গালুরু। মাত্র ২৪ বলেই ফিফটি তুলে নেন ম্যাক্সওয়েল। অপর পাশে ফাফ ডু প্লেসিও পৌঁছে যান ব্যক্তিগত অর্ধশতকে। আর এতেই এ দুজন ব্যাটার নিজেদের জুটিতে পেরিয়ে যান শত রান।

তবে শেষ পর্যন্ত ১২৬ রানের এ জুটি ভেঙ্গে যায় ম্যাক্সির আউটে। ৩ চার আর ৮ ছক্কায় সাজানো ৩৬ বলে ৭৬ রানের ইনিংস খেলা ম্যাক্সওয়েল আউট হওয়ার পরই মূলত ম্যাচ ঝুঁকে যায় চেন্নাইয়ের দিকে। এর কিছুক্ষণ বাদে ডু প্লেসিও আউট হয়ে ফিরে গেলে ম্যাচ থেকে এ প্রকার ছিটকে যায় ব্যাঙ্গালুরু।

অবশ্য শেষে দিনেশ কার্তিকের ১৪ বলে ২৮ রানের ক্যামিও কিছুটা সম্ভাবনা জাগিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চেন্নাইয়ের দেওয়া ২২৮ রানের লক্ষ্যে আর পৌঁছানো হয়নি ব্যাঙ্গালুরুর। নির্ধারিত ২০ ওভারে তাদের ইনিংস থেকে ২১৮ রানে।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link