না, কোনো গালগল্প নয়। তিনিই বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ফুটবলার। তাঁর সম্পদের পরিমান স্বয়ং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর চেয়ে ২৭ গুণ বেশি। এমনকি তিনি লিওনেল মেসির চেয়ে ৩৩ গুণ ও নেইমার জুনিয়রের চেয়ে ৫০ গুণ বেশি সম্পদশালী।
অথচ, তাঁর বয়স মাত্র ২১-২২ বছর। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী এই খেলোয়াড়টির নাম ফাইক জেফরি বোলকায়াহ। ব্রুনেই-এর তরুণই নাকি সম্পদের দিক থেকে রোনালদো-মেসি-নেইমারদের ছাড়িয়ে গেছেন।
২০১৬ সাল থেকে তিনি ছিলেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব লেস্টার সিটিতে। ২০২০ সালে সেই ক্লাব ছেড়ে যোগ দিয়েছেন পর্তুগালের ক্লাব ম্যারিটিমোতে। এর আগে চেলসি, আর্সেনাল ও সাউদাম্পটনের যুব দলে খেলেছেন। যদিও, এখন অবধি ক্লাব ফুটবলে একটাও পেশাদার ম্যাচই খেলতে পারেননি তিনি।
তারপরও কিভাবে তিনি এত সম্পদশালী হলেন? কারণ, পারিবারিক ভাবেই অনেক সম্পদের মালিক ফাইক। তিনি হলেন ব্রুনেই-এর সুলতান হাসান বোলকায়াহ’র আপন ভাতিজা।
ফেইক-এর মোট সম্পদের পরিমান শুনলে রীতিমত আকাশ থেকে পড়বেন। তিনি মোট ২০ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক। শুধু তাই নয়, তিনি ব্রুনেই রাজ্যের ভাবি উত্তরসূরীদের একজন। সেখান থেকেও তাঁর সম্পদের পরিমান ১৫ বিলিয়ন ডলার।
ফেইকের বাবা হলেন জেফরি বোলকায়াহ। ব্রুনেইয়ে তাঁর প্রভাবও কম নয়। সালতানাত সামলানোর পাশাপাশি পরিবারটি তেল ব্যবসার জন্য বেশ বিখ্যাত। আর এটাই হল তাঁদের আকাশচুম্বি সম্পদের রহস্য।
ব্রুনেই-এর রাজপুত্র, মানে ফাইক বোলকায়াহ’র বয়স তখন মাত্র সাত বছর। তাঁকে মুগ্ধ পপ সম্রাট স্বয়ং মাইকেল জ্যাকসনের একটি প্রাইভেট কনসার্টের আয়োজন করেছিলেন তাঁর বাবা। এক কনসার্টের পেছনেই তিনি খরচ করেছিলেন ১৭ মিলিয়ন ডলার।
শুধু ব্যাংক ব্যালান্স নয় ফেইকের বিলাসবহুল জীবনের উপকরণগুলোর পরিমানটাও বাকিদের চেয়ে অনেক বেশি। তাঁর আছে ২৩০০ টি বিলাসবহুল গাড়ি, আটটি বোয়িং বিমান, পাঁচটি ইয়ট, ৫০০ টি বাড়ি ও বেশ কয়েকটি প্রাসাদ। শখের বশে বাঘের বাচ্চাও পোষেন।
যে পরিমান সম্পদের মালিক তিনি, তাতে চাইলেই নিজের জন্য ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে আলাদা একটা দলই কিনে ফেলতে পারেন ফেইক। চাইলে সেই দলে নিয়মিত খেলতেও পারেন। তবে, এমন কিছু করার কোনো ইচ্ছা ফেইকের নেই।
তিনি বলেন, ‘আমি অনেক ছোট বেলা থেকে ফুটবল খেলি। মাঠে কাটানো সময়টা আমি উপভোগ করি। আরো বেশি উপভোগ করি সেই সময়টা যখন আমার পায়ে বল থাকে। আমি সত্যিকারের একজন ফুটবলার হয়ে উঠতে চাই। এই যাত্রায় সব সময়ই আমি নিজের পরিবারকে পাশে পেয়েছি।’
তবে, সম্পদশালী হওয়া আর ইউরোপিয়ান লেভেলে ভাল মানের ফুটবলার হওয়ার মধ্যে পার্থক্যটা যে আকাশ পাতাল সেটা এই ক’দিনে ভালই বুঝতে পেরেছেন ফেইক। ব্রিটেনের ব্র্যাডফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা নেওয়া ফেইক বলেন, ‘বিশ্বের সেরা কিছু ক্লাবের সাথে থাকতে পারাটা আমার চোখ খুলে দিয়েছে। আমি বুঝেছি যে, বড় ফুটবলার হওয়ার সামান্য একটু সুযোগ পাওয়ার জন্যও কঠোর পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই।’
তাঁর জন্ম লস অ্যাঞ্জেলেসে। জন্মসূত্রে তাই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। যুক্তরাষ্ট থেকে সেখানকার বয়সভিত্তিক দলে যোগ দেওয়ার সুযোগও এসেছিল। সেই হাতছানি পেছনে ঠেলে ব্রুনেই জাতীয় দলের হয়েই তিনি নিজের আন্তর্জাতিক অভিষেক করেছেন। ২০১৬ সাল থেকে জাতীয় দলের হয়ে পাঁচটি ম্যাচ খেলে একটি গোলও করেছেন তিনি। অধিনায়কত্বও করেছেন।