পারফরমিং আর্টে কোনো কিছুর শেষ যখন ঘনিয়ে আসে, তখন সেটার অপ্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি প্রকট হয়। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটে ‘আড়ালের সেনানী’ হিসেবে পরিচিত এই ব্যাটারের উপস্থিতি এখন শুধু প্রশ্নবিদ্ধই নয়, অপ্রাসঙ্গিকও বটে।
দেরিতে হলেও একটা বোধোদয় হয়েছে হয়েছে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কমতি আর খামতিটা ভক্তমহলের সামনেও এখন প্রকাশ্য। তিনি ফিনিশার হিসেবে এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মানানসই নন। সেটা বুঝে গেছে বাংলাদেশ। শুভঙ্করের ফাঁকিটা এখন প্রকাশ্য। রিয়াদের লড়াই দেখতে দেখতে ক্লান্ত সবাই, এখন শুধুই তাঁর বিদায়ের অপেক্ষা।
মুশফিকুর রহিম বিদায় বলে ফেলেছেন ওয়ানডে ক্রিকেটকে। এবার পালা মুশফিকের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেটাই বারবার রিয়াদকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন ভক্তরা। বলে দিচ্ছেন, রিয়াদ – থ্যাঙ্ক ইউ ফর ইওর সার্ভিস। বাট, অ্যানাফ ইজ অ্যানাফ! আপনি এখন আসতে পারেন, বিদায় বলে দিতে পারেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে।
মুশফিকের বিদায়ে বার্তা দিয়েছেন রিয়াদ। সেই বার্তায় মুশফিকের বিদায় নিয়ে হা-হুতাশ করেনি দর্শক। বরং, রিয়াদ কবে বিদায় নেবেন? – সেই প্রশ্নই এসেছে বেশি। এমনকি মুশফিকের বিদায়েও দর্শক মহলের কোনো আক্ষেপ নেই। বরং, এত দেরি কেন করলেন বিদায় নিতে – সেটা নিয়ে আক্ষেপ আছে।
দেশের ক্রিকেটে অবদান কম নয়, কিন্তু এখন কি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে থাকার মানে হয়? মুশফিক যেমন একটা সময় বুঝে নিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাঁর ভূমিকা ফুরিয়ে এসেছে, রিয়াদ কেন বুঝতে পারছেন না? একটা গল্পের শেষ টেনে দেওয়াটা কখনো সহজ নয়। সেটা আরও কঠিন হয়ে যায়, যখন কেউ নিজেকে বাস্তবতা থেকে আলাদা রাখতে চান। রিয়াদ ভাই, বাস্তবতাটা এখন বুঝে ফেলুন – এই কথাটা আমরা বলছি না, বলছে দর্শক। আপনি নিজের পোস্টের কমেন্ট সেকশন পড়ুন – বুঝে ফেলবেন।
এই ভাবনাটা দর্শকদের মধ্যে যতটা আছে, ততটা নেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) মধ্যে। তাঁরা ২০২৫ সালের জন্য ক্রিকেটারদের সাথে যে চুক্তির পরিকল্পনা দিয়েছেন, সেখানে বি ক্যাটাগরিতে আছেন মুশফিক ও রিয়াদ। রিয়াদ খেলেনই এখন মাত্র দুই ফরম্যাট। তাহলে কি তাঁকে দিয়ে আরও একটা বছর খেলিয়ে নিতে চায় বিসিবি!
বিসিবি না হয় অবুঝ, রিয়াদ কেন অবুঝ হবেন। দর্শক যেমন বুঝে ফেলেছেন, ভুল ঘোড়ায় এতদিন তাঁরা পয়সা ঢালছিলেন – সেটা রিয়াদও বুঝে ফেললেই হয়ে যায় এখন। বাংলাদেশ ক্রিকেট হাফ ছেড়ে বাঁচতে পারে। ৪০ বছর বয়সে এই ফিটনেস নিয়ে আর যাই হোক, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা যায় না। খেলা গেলেও সেটা নিয়ে কোনো সাফল্য আসে না। আর সাফল্য ছাড়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে বয়ে বেড়ানো মূল্যহীন!