কথায় আছে, প্রথমে দর্শনধারী পরে গুণ বিচারি। বাস্তব জীবনে বহুল প্রচলিত এই প্রবাদ আধুনিক ক্রিকেটেও প্রযোজ্য। কেননা এখন পারফরম্যান্স বিবেচনা করার আগে দেখা হয় ফিটনেস লেভেল। জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার পূর্বশর্ত শতভাগ ফিট থাকা, তবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ পারেননি ফিটনেস টেস্টে পাশ করতে।
অফ ফর্মে থাকা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ অনেকদিন ধরেই জাতীয় দলের বাইরে, যদিও এশিয়া কাপ আর বিশ্বকাপকে সামনে রেখে অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারকে দলে চাচ্ছেন অনেকে। নির্বাচকরাও ভাবনায় রেখেছিলেন তাঁকে। তাই তো রিয়াদকে রাখা হয়েছিল প্রাথমিক দলে, ফলে ফিটনেস ক্যাম্পে নিজেকে ফিট হিসেবে প্রমাণ করার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।
তবে সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। ইয়ো ইয়ো টেস্টে তাঁর স্কোর কেবল ১৭, যেখানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত বেঞ্চমার্ক ছিল ১৮.৫। সংখ্যা তত্ত্বেই স্পষ্ট, লম্বা সময় দলের বাইরে থাকা এই ডানহাতি যথেষ্ট ফিট নন; স্বাভাবিকভাবেই লাল-সবুজ জার্সিতে ফেরার কঠিন পথ আরো কঠিনতর হয়ে গেল রিয়াদের জন্য।
ইয়ো ইয়ো টেস্টে সর্বোচ্চ স্কোর করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, এই তরুণের স্কোর ১৯.৫। অবশ্য এটাকে চমক বলার সুযোগ নেই, বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ফিট ক্রিকেটার তিনি। এছাড়া আরেক তরুণ তানজিম হাসান সাকিব করেছেন ১৯.৩ এবং মেহেদি হাসান মিরাজের স্কোর ১৯.২। অন্যদিকে, এই ইয়ো ইয়ো টেস্টে সর্বনিন্ম স্কোর ছিল ১৬.৫।
ফিটনেস পরীক্ষা শেষে সব মিলিয়ে অবশ্য সন্তুষ্ট জাতীয় দলের ট্রেনার নিক লি। তিনি বলেন, ‘সবার (টেস্টের) পারফরম্যান্স প্রায় একই রকম ছিল। এখানে এমন ক্রিকেটারও ছিল যারা সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় দলের আশপাশে ছিল না বা ইনজুরিতে ছিল। তাদের কিছুটা কম ছিল স্কোর। তবে সব মিলিয়ে কেউ-ই কম গতিতে ছিল না। সবার ফলাফল মোটামুটি একই ব্রাকেটে ছিল।’
তবে সবকিছু ছাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে এখন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এমনিতেই এই ডানহাতিকে দলে চান না হেডকোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে, নির্বাচকরাও খুব একটা আগ্রহী নন মাহমুদউল্লাহকে স্কোয়াডে রাখতে। ফিটনেস টেস্টে ভাল করে তাদের মন গলাতে পারতেন এই তারকা, কিন্তু তা আর হলো কই।
চলতি মাসেই শুরু হবে এশিয়া কাপ, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ঘোষণা করা হবে স্কোয়াড। এমন অবস্থায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ফিটনেস টেস্টের ফলাফল নিশ্চিতভাবেই জায়গা পাওয়ার দৌড়ে পিছিয়ে দিবে তাঁকে। আবার অল্প কয়েকদিনের মধ্যে ফিটনেসে খুব একটা উন্নতি করতে পারবেন না তিনি, সবমিলিয়ে দলে ফেরার সম্ভাবনা আরো ক্ষীণ হয়েছে রিয়াদের।