চ্যাম্পিয়ন হবার মতই দল গড়েছে আইপিএলের প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন রাজস্থান রয়্যালস। তবে রাজস্থান একাদশের একটি জায়গাই যেন দর্শকদের সমালোচনার বিষয়বস্তু। বেশ কয়েক মৌসুম ধরেই রাজস্থান দল খেলছেন রিয়ান পরাগ। কিন্তু হাতে গোণা দুই-একটা ম্যাচ বাদে খুব একটা কিছু করে দেখাতে পারেননি এই অলরাউন্ডার।
গতকাল পরাগের সুযোগ ছিল সব সমালোচনার জবাব দেবার। কিন্তু পরাগ ব্যর্থ হলেন আরো একবার। ১২ বলে ১৫ রানে নট আউট থেকে দলকে জেতাতে তো পারেননি উল্টো দলকে হারের মুখে ঠেলে দিয়েছে তাঁর এই ইনিংস।
বয়সটা মাত্র ২১। খেলেছেন ফিনিশিং রোলে। ছোট কাঁধে তাই দায়িত্বটা অনেক বড় পরাগের জন্য। এই পজিশনে খুব বেশি সাফল্য না পেলেও বারবার তাঁর ওপরই আস্থা রাখছে রাজস্থান ম্যানেজমেন্ট। পরাগের সামর্থ্যের ওপর বরাবরই অনেক আস্থা রাজস্থানের। এমনকি একদিন পরাগ মাহেন্দ্র সিং ধোনির মত ফিনিশার হবেন সেই প্রত্যাশাও করা হতো। তবে বরাবরের মত এবারও যেন নিজের ওপর প্রত্যাশার চাপটা নিতে ব্যর্থই হলেন পরাগ।
১৫৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে এক পর্যায়ে রাজস্থানের প্রয়োজন ছিল ছয় ওভারে মাত্র ৫৬ রান। কিন্তু অমন পরিস্থিতি থেকেও হেরে গেছে রাজস্থান৷ লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাট করা পরাগের ১২ বলে ১৫ রানের ইনিংসকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন অনেকে।
এমন ইনিংস খেলার পর চারদিক থেকে সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছেন পরাগ। সমালোচনা করেছেন ভারতের সাবেক কোচ রবি শাস্ত্রীও। শাস্ত্রী মনে করেন, এই ম্যাচে রাজস্থানের যতটুকুই জেতার সুযোগ ছিল তা নষ্ট করেছেন পরাগ। ছয় নম্বরে ব্যাট করতে এসে দলের চাহিদা মেটাতে পুরোপুরি ব্যর্থ পরাগ। মোকাবেলা করা প্রথম আট বলে মাত্র চার রান করে দলে ফেলেন প্রবল চাপের মুখে।
শাস্ত্রী বলেন, ‘তারা স্যামসন, বাটলার ও জয়সওয়ালকে হারায় কিন্তু শেষের দিকে তাদের পর্যাপ্ত ব্যাটার ছিল। আমার মতে, যখন রিয়ান পরাগ ব্যাটিংয়ে এল এবং প্রথম আটটি বল খেললো সেখানেই ম্যাচের গতিবিধি নির্ধারিত হয়ে গেছে। অন্য প্রান্তে পাডিকালও ছন্দ হারিয়ে ফেলেছিল। তখন শুধুমাত্র সিংগেলের মাধ্যমে রান আসছিল। মাঝে ২৮ টি বল তারা খেলেছে কোনো বাউন্ডারি মারা ছাড়াই। যখন এমন লম্বা একটা সময় আপনি বাউন্ডারি মারবেন না তখন আপনি নিজেই বিপদ ডেকে আনবেন।’
শাস্ত্রী আরো বলেন, ‘তারা জানতো তারা কত স্কোর তাড়া করছে। সৌভাগ্যবশত তারা টেবিলের শীর্ষে আছে এবং তারা এই ম্যাচ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারবে। ব্যাটিং অর্ডারে কি পরিবর্তন করা উচিত সেটিও তারা জানতে পারবে। পরাগকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল, সে কেমন খেলে সেটিও দেখে নেয়া গেছে। তাদের অনেক শক্তিশালী একটা ব্যাটিং লাইনআপ আছে। তাদের আরো আগেই ম্যাচ শেষ করার পথে যাওয়া উচিত ছিল।’
শুধু রবি শাস্ত্রীই নন, পরাগের পারফরম্যান্স নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অনেকে তো রাজস্থান দলের ওপর স্বজনপ্রীতির অভিযোগও আনছেন পরাগের ওপর এমন অতি আস্থা দেখানোয়। অনেকেই আবার টুইটারে সরাসরিই লিখছেন, পরাগ কি কারণে দলে ?
এই উত্তরটা এখন কেবল পরাগ নিজেই দিতে পারবেন!