আয়রনম্যান রোনালদো

মার্ভেলের কমিক অথবা সিনেমা সম্পর্কে অল্প-বিস্তর সবারই ধারণা আছে। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোও নিশ্চয়ই দু-এক খানা কমিক না পড়লেও সিনেমা দেখেছেন। তাঁকে হয়ত আয়রনম্যান চরিত্রটা বেশ প্রভাবিতই করে। কেননা হুট করে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, তিনি বুলেটপ্রুফ, তিনি লোহায় মোড়ানো।

বিশ্বকাপের উন্মাদনা শুরু হয়ে গেছে। প্রায় ২৮ দিনের মহাযজ্ঞ। সব দলই মুখিয়ে রয়েছে মাঠে নিজেদেরকে উজাড় করে দিতে। সেই তালিকায় পর্তুগালের নামটাও শোনা যাচ্ছে বেশ প্রবল সুরেই। পর্তুগালকে এবার বিবেচনা করা হচ্ছে এবারের বিশ্বকাপ শিরোপা প্রত্যাশী দল হিসেবে। কিন্তু কোথাও একটা গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। পর্তুগাল দলের অভ্যন্তরে সুবাতাস বইছে না। এমনটাই তো মত বিশ্ব মিডিয়ার। কিন্তু এবার সে বিষয়েই মিডিয়ার সামনে মুখ খুললেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।

তিনি তাঁর সতীর্থদের কাছে তাঁর বিষয়ে প্রশ্ন করতে বারণ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আবহাওয়া দারুণ। কোন সমস্যা নেই। আমরা সবাই ফোকাসড। আপনারা আমার সম্পর্কে প্রশ্ন না করে সাহায্য করতে পারেন। আমি বুলেট প্রুফ, লোহা বেষ্টিত। আপনারা অন্য খেলোয়াড়দেরকে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর বিষয়ে প্রশ্ন করেন তবে আমি মন খারাপ করব। আমি পছন্দ করব যদি আপনারা যদি বিশ্বকাপ এবং দল নিয়ে প্রশ্ন করেন।’

মূলত সাম্প্রতিক সময়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাথে তাঁর সম্পর্ক ও রেড ডেভিলদের সমসাময়িক বিষয় নিয়ে বিস্ফোরক সব মন্তব্য করে আলোচনা-সমালোচনায় জায়গা করে নিয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। দলের সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে এটা সুনিশ্চিত। কিন্তু গুঞ্জন ছিল জাতীয় দলের সতীর্থ ব্রুনো ফার্নান্দেসের সাথেও সম্পর্কে তিক্ততা বেড়েছে। তবে সেটাও মিডিয়ার সৃষ্টি। তেমনটাই মনে করেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।

তিনি বলেন, ‘প্রতিযোগিতার এই অন্তিম পর্যায়ে সব সময় বিতর্ক সৃষ্টি হয়। আমরা স্রেফ মজা করছিলাম। আমাদের সম্পর্ক দারুণ। তাঁর বিমান দেরি করেছিল। আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করছিলাম যে সে নৌকায় করে এসেছে কিনা।’ জোয়াও ক্যান্সেলোর বিষয়টিও পরিষ্কার করেছেন ক্রিশ্চিয়ানো, ‘সে অনুশীলনে মন খারাপ করেছিল। আমি তাঁকে বলেছি জেগে ওঠো। সেটাকে ঘিরে আপনাদের কাছ থেকে বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়েছে।’

তবে এত বিতর্কের মাঝেও রোনালদো নিজের তিনি নিজের লক্ষ্য রেখেছেন স্থির। তিনি এবারের বিশ্বকাপটা জিততে এসেছেন। এটা ধারণা করা হয় বর্তমান পর্তুগালের এই দলটি ইতিহাসের অন্যতম সেরা দল। এটা ক্রিশ্চিয়ানো বিশ্বাস করেন। এই দলটি নিয়ে তিনিও বড্ড আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘প্রজন্ম সেরা খেলোয়াড়রাই বিশ্বকাপ জিতবে। আমি বিশ্বাস করি এটাই সেরা প্রজন্ম। তরুণ ও অভিজ্ঞদের সংমিশ্রণে দারুণ একটি দল এটি।’

ক্রিশ্চিয়ানো দারুণভাবে উজ্জীবিত। এই দল নিয়ে তিনিও আত্মবিশ্বাসী। বিশ্বকাপ জিততেই পর্তুগাল এসেছে কাতারে। তবে একটা বিতর্কমুক্ত পরিবেশ চান ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। তিনি চান তাঁর দলের খেলোয়াড়দের মানসিকতায় কোন প্রভাব না পড়ুক। তেমনটা জানাতেই তাঁর হুট করে সংবাদ সম্মেলনে আসা, কোন ধরণের প্রচারণা ছাড়াই।

এবার যদি তিনি বিশ্বকাপ জিততে পারেন তবে কি তাঁকে আর মেসিকে ঘিরে হওয়া বিতর্কের অবসান ঘটবে? এমন প্রশ্নের জবাবে সোজাসাপ্টা উত্তরই দিয়েছেন রোনালদো। তাঁর মতে, এই দ্বৈরথ ও বির্তক শেষ হবে না। তিনি এটাও স্বীকার করেন এমন বহু মানুষ রয়েছে যারা তাঁকে পছন্দ করে না। এমন হওয়াও স্বাভাবিক। নিজের শেষ বিশ্বকাপটা রাঙিয়ে যেতে পারবেন কি না রোনালদো, সেটা সময়ই বলে দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link