বিখ্যাত সেই কেশবিন্যাসের পেছনের গল্প

সর্বকালের অন্যতম সেরা সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ড বলা হয় তাঁকে, তিনি হলেন ডি-বক্সের ত্রাশ। ১৯৯৮ বিশ্বকাপেও জিতেছিলেন সেরা খেলোয়াড়ের গোল্ডেন বল পুরষ্কার। ২০০২ সালের কোরিয়া-জাপান বিশ্বকাপে সেই রোনালদো হাজির হলেন অদ্ভুত এক চুলের স্টাইলে।

সর্বকালের অন্যতম সেরা সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ড বলা হয় তাঁকে, তিনি হলেন ডি-বক্সের ত্রাশ। ১৯৯৮ বিশ্বকাপেও জিতেছিলেন সেরা খেলোয়াড়ের গোল্ডেন বল পুরষ্কার। ২০০২ সালের কোরিয়া-জাপান বিশ্বকাপে সেই রোনালদো হাজির হলেন অদ্ভুত এক চুলের স্টাইলে। তবে সেই অদ্ভুত হেয়ার কাট তিনি কোনো ফ্যাশন সচেতনতা থেকে দেননি। ওমন হেয়ার কাট দিয়ে তাঁর ইনজুরি এবং ফিটনেস ইস্যু থেকে সকলের মনোযোগ সরানোর চেষ্টাই করেছিলেন রোনালদো, দ্য ফেনোমেনন।

১৯৯৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে হেরে রানারআপ হয় ব্রাজিল। কিন্তু সে বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন রোনালদো। এরপর ২০০২ বিশ্বকাপেও ব্রাজিলের সেরা তারকা হয়েই খেলতে গিয়েছিলেন তিনি। যদিও টুর্নামেন্ট শুরু থেকেই রোনালদোর ফিটনেস আর ইনজুরি ইস্যু মাথা ব্যাথার কারণ ছিলো ব্রাজিল ম্যানেজমেন্টের।

গণমাধ্যম আর ভক্তদেরও প্রবল আগ্রহ ছিলো রোনালদোর ফিটনেস নিয়ে। এসব থেকে দর্শক আর গণমাধ্যমের মনোযোগ সড়াতেই বিশ্বকাপ চলাকালীন অর্ধ গোলাকৃতির মত এক হেয়ার কাট দেন মাথার সামনের অংশে, এমনটা জানিয়েছেন রোনালদো নিজেই। কোনো ফ্যাশন সেন্স থেকে এ অদ্ভুত কাণ্ড করেননি তিনি।

ফিফা ডট কম-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে রোনালদো জানান, ‘সকলেই আমার পায়ের ইনজুরি নিয়ে আলোচনা করছিলো এবং আমি সেমিফাইনালে খেলতে পারব কিনা সে নিয়ে প্রশ্ন করছিলো।’ চোটের কারণে কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে পারেননি রোনালদো। এরপরই বিশ্বকাপে রোনালদো আর পাওয়া যাবে কিনা সে নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

রোনালদো ক্লান্ত ছিলেন ইনজুরি ইস্যুতে। তিনি বলেন, ‘ইনজুরি ইস্যুতে শুনতে শুনতে আমি ক্লান্ত এবং হতাশ ছিলাম। তাই আমি ওমন হেয়ার কাট দেই। আমি আমার সতীর্থ দের জিজ্ঞেস করেছিলাম এই হেয়ার কাট সমন্ধে। তারা বলেছিলো, এটি খুবই অদ্ভুত। তুমি এমন হেয়ার কাট রাখতে পারো না।’

কিন্তু রোনালদো নিজের পরিকল্পনার ব্যাপারে পরিষ্কার ছিলেন। ইনজুরি থেকে সকলের মনোযোগ সড়ানোর নিজস্ব এই টোটকা কাজে আসে রোনালদোর। সব আলোচনার অবসান ঘটিয়ে সেমিফাইনালে তুরস্কের বিপক্ষে মাঠে নামেন তিনি। সে ম্যাচে গোল করে ব্রাজিলকে ফাইনালেও তোলেন ফেনোমেনন রোনালদো। এরপর ফাইনালেও জোড়া গোল করে ব্রাজিলকে পঞ্চম শিরোপা জেতান সর্বকালের সেরা এই নাম্বার নাইন।

রোনালদোর সেই হেয়ার কাট খুব দ্রুতই বিখ্যাত হয়ে যায়। বিশ্বজুড়ে অনেকেই রোনালদোর এই হেয়ার কাট অনুকরণ করতে থাকেন। কিন্তু রোনালদো খুব দ্রুতই এই হেয়ার কাট সরিয়ে ফেলেন। এবং বিশ্বজুড়ে সব মায়েদের কাছে ক্ষমা চান যাদের সন্তানরা রোনালদো থেকে অনুপ্রানিত হয়ে এমন হেয়ার কাটে দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, ‘খুবই ভয়াবহ ছিল এটা। আমি সেসকল মায়েদের কাছে ক্ষমা চাই যারা তাদের সন্তানদের এমন হেয়ার স্টাইলে দেখেছেন।’

ইনজুরি থেকে ফিরে ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ জেতানো রোনালদো নাজারিও’র চুলের সেই অদ্ভুত কাট আইকনিক হয়ে আছে এখনো। রোনালদো ভক্তরাও ফেনোমেননকে নিশ্চয়ই এখনো মনে রেখেছেন সেই অদ্ভুত কেশবিন্যাসের জন্য।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...