এক সময়ের জায়ান্ট কিলার তাঁরা। নব্বইয়ের দশকে পাকিস্তান, ভারত কিংবা অন্য যেকোনো বড় শক্তিকে প্রায় বলে কয়েই হারাতে জানতো জিম্বাবুয়ে। তবে, সে যুগ হয়েছে বাসি। এখন অধ:পতনের পথে গিয়ে ঠেকেছে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট। এর মধ্য থেকেও যে তাঁরা মাঝে মধ্যে দুই একটা জয় পায় সেটা যেন বাতি পুরোপুরি নিভে যাওয়ার আগে দপ করে একটু জ্বলে ওঠা।
দেশের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ সেই ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে সোনার সময় কাঁটায় জিম্বাবুয়ে। সেবার নীল জার্সিধারীদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জেতে জিম্বাবুয়ে। সেটাই ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ জয়। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটে বড় রদবদল আসে ২০০৩ বিশ্বকাপের পর থেকে।
তবে, দুয়ারে যেহেতু আরেকটা ভারত-জিম্বাবুয়ে সিরিজ – তখন নব্বই দশকের স্মৃতি আসতে বাধ্য। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আফ্রিকান দেশটির অলরাউন্ডার রায়ান বার্লকেও এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হল।
তিনি বলেন, ‘সিরিজটা আমাদের জন্য জরুরী। প্রথমত, আমরা ভারতের বিপক্ষে নিয়মিত খেলার সুযোগ পাই না। তাই, যখনই পাই সুযোগের পুরো সদ্ব্যবহার করা দরকার। আর দ্বিতীয়ত, এটা বিশ্বের সেরা দলের বিপক্ষে খেলার সুযোগ। এখানে নিজের প্রতিভাকে আরো বড় ও ভাল মঞ্চে দেখানোর ব্যাপার থাকে। ফলে, এটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ।’
মগজের ওপর কোনো চাপ না দিয়েই বলা যায় লোকেশ রাহুলের নেতৃত্বে যাওয়া ওয়ানডে দলটাই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ফেবারিট। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু হবে ১৮ আগস্ট, হারারেতে। জিম্বাবুয়ের ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইট ওয়াশ হওয়াকেই সাদা চোখে সম্ভাব্য ফল বলে মনে হতে পারে, তবে রায়ান ব্রাল মনে করেন ভারতের বিপক্ষে আপসেট ঘটানোর সামর্থ্য আছে ওয়ানডের ১০ নম্বর দলের।
হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে নিয়মিত অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন নেই। অধিনায়কত্ব করবেন রেগিস চাকাভা। তাঁর নেতৃত্বেই সর্বশেষ বাংলাদেশ সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জিতেছে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের বিপক্ষে পারফরম্যান্স জিম্বাবুয়ের আশার পালে হাওয়া লাগিয়েছে।
বার্ল বলেন, ‘ভারতের বিপক্ষে জিততে না পারার কোনো কারণ নেই। আমাদের দেশের মাটিতে খেলার সুবিধা আছে। দেশে আমরা সম্প্রতি বেশ ভাল খেলছি। হ্যাঁ, মানুষ স্ট্রিক আর ফ্লাওয়ারদের দিনের কথা বলে হা-হুতাশ করবেই। কিন্তু, এখনও আমাদের নিজস্ব কিছু কিংবদন্তি আছে। আমাদের আছে রাজা (সিকান্দার রাজা), আরভিন (ক্রেইগ আরভিন) আছে, উইলিয়ামস (শন উইলিয়ামস) আছে। আমরা মাঠে নামার আগেই যদি হেরে যাই, তাহলে সমস্যা তো আমাদেরই ভেতরে। তাই, এই সিরিজটার ব্যাপারে আমরা খুবই ইতিবাচক। আশা করি, বিশেষ কিছুই অপেক্ষা করছে।’
বাঁ-হাতি মিডল অর্ডার ব্যাটার আর লেগ স্পিনার বার্ল জিম্বাবুয়ের হয়ে তিনটি টেস্ট, ২৮ টি ওয়ানডে আর ৪৭ টি টি-টোয়েন্টি খেলেন। সর্বশেষ বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের এক ওভারে ৩৪ রান তুলে তাঁক লাগিয়ে দেন। তিনি নিজের ব্যাটার হিসেবে অনুপ্রাণিত হন ভারতের ঋষাভ পান্তের কাছ থেকে।
২৮ বছর বয়সী বার্ল বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, ঋষাভ পান্তের কথা আমাকে বলতেই হবে। আমি তাঁর মধ্যে নিজেকে দেখি। ওর মগজটা যদি আমার থাকতো, তাহলে হয়তো আমিও ওর মত বাউন্ডারি হাঁকাতে পারতাম।’