বার্ল না হয় ছায়া পেলেন, কিন্তু…

নব্বইয়ের দশকে কী দারুণ এক সোনালি সময় কাটিয়েছে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট!

ফ্লাওয়ার ব্রাদার্স, হিথ স্ট্রিক, নিল জনসন কিংবা টাটেন্ডা টাইবুদের সময়ে ক্রিকেটের নতুন এক পরাশক্তি হিসেবে গড়ে উঠছিল দেশটি। তবে একবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকেই জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের গ্রাফ নামতে থাকে নিচের দিকে। বিশেষ করে ২০১০ সালের পর আর বলার মত কোনো সাফল্য নেই দেশটির। ফলে তাঁদের ক্রিকেটারদের অর্থনৈতিক অবস্থাও এখন বেহাল।

গত এক দশকে জিম্বাবুয়ে ওয়ানডে ম্যাচ জিতেছে মাত্র ছয়টি। এই সময়ের মধ্যে কোনো টেস্ট সিরিজ জয়েরও স্বাদ পায়নি দেশটি। ফলে ক্রমাগত ভেঙে পড়তে থাকে দেশটির ক্রিকেট অবকাঠামো। স্পন্সররা মুখ ফিরিয়ে নিতে থাকেন দলটি থেকে। ফলে জিম্বাবুয়ের জাতীয় দলের ক্রিকেটারদেরও এখন বেহাল অবস্থা। তাঁরই এক ভয়ানক চিত্র প্রকাশ পেয়েছে দেশটির ক্রিকেটার রায়ান বার্লের করা এক টুইটে।

জিম্বাবুয়ের এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান তাঁর জুতা ও তা সারানোর সরঞ্জামের যন্ত্রপাতির একটি ছবি টুইট করেন। সেখানে তিনি লিখেন, ‘কোনো স্পন্সর পাওয়ার সযোগ থাকলে আমাদের প্রতি সিরিজের পর জুতা আঠা দিয়ে জোড়া দিতে হতো না।’ রায়ানের সেই টুইট আবেগে আক্রান্ত করে কোটি ক্রিকেট প্রেমীকে। ক্রিকেট প্রেমীরা শেয়ার করতে থাকেন রায়ানের সেই টুইটটি। দু:খ প্রকাশ করেন জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের এই বেহাল দশার জন্য।

তবে রায়ানের সেই দু:খ শেষ হয় কয়েক ঘন্টার মধ্যেই। তাঁর টুইটটির উত্তর দেয় জনপ্রিয় স্পোর্টস ব্র্যান্ড পুমা। তাঁরা সেই টুইটে লিখে, ‘আঠা সড়িয়ে নেয়ার সময় এসেছে। আমরাই তোমাকে স্পন্সর করছি।’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কত শক্তি – তা এখান থেকেই থেকেই প্রমাণ হয়।

তখনই পুমাকে ধন্যবাদ দিয়ে রিটুইট করেন রায়ান। তিনি লিখেন, ‘পুমার সাথে যুক্ত হবার অপেক্ষায় আছি। আমার কাছে পৌছানোর জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।’ তাঁর কিছুক্ষণ বাদের পুমার সাথে আনুষ্ঠানিক কথোপোকথনের পর আবার টুইট করেন এই ক্রিকেটার।

সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি খুব গর্বিত যে আমি পুমার সাথে যুক্ত হতে চলেছি। এই সবকিছুই হয়েছে গত ২৪ ঘন্টায় ফ্যানদের অসাধারণ সাপোর্টে। আমি আপনাদের প্রতি ভীষণ কৃতজ্ঞ। সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।’

সবমিলিয়ে একটি টুইট থেকে স্পন্সর পেয়ে এখন ভীষণ খুশি রায়ান বার্ল। জিম্বাবুয়ের হয়ে তিন ফরম্যাটেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন এই ক্রিকেটার। মূলত ব্যাটসম্যান হলেও বল হাতেও যথেষ্ট কার্যকর রায়ান বার্ল। ২৭ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার তিনটি টেস্ট, ১৮ টি ওয়ানডে ও ২৫ টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন জিম্বাবুয়ের হয়ে।

রায়ান বার্লের সমস্যার না হয় সমাধান হয়েছে। কিন্তু, একই চিত্র জিম্বাবুয়ের বাকি ক্রিকেটারদের। তাঁদের সুদিন ফিরিয়ে আনতে হলে মাঠেও আবার জয়ের ধারায় ফিরতে হবে দেশটিকে। তবেই তো স্পন্সরদের দৃষ্টি ফিরবে দলটির দিকে।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link