পরিণত ব্যাটিংয়ের অতিমানবীয় হুঙ্কার

মনে রাখার মতন একটা ব্যাটিং পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন এই উইকেটরক্ষক, স্বল্প দিনের ক্যারিয়ারে এরই মধ্যে তিনি উঠে এসেছেন ক্রিকেট বিশ্বের আলোচনায়। সামর্থ্যের সমানুপাতিক হারে সমর্থকদের প্রত্যাশা আছে তাঁর ওপর, দক্ষিণ আফ্রিকা যে নবজাগরণের গান গাইছে সেখানে তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতেই হবে।

মাত্র দশ ম্যাচের ক্যারিয়ার; কিন্তু রায়ান রিকেলটন শিখে ফেলেছেন কিভাবে প্রতিপক্ষকে কাঁদিয়ে ছাড়তে হয়, কিভাবে প্রতিপক্ষের আত্মবিশ্বাস দুমড়ে মুচড়ে দিতে হয়। এইতো পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে একটা ম্যারাথন ইনিংস খেললেন তিনি, হাঁকিয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি।

শুধু দশ ম্যাচের ক্যারিয়ার এতটুকু বললে অন্যায় হবে, এবারি প্রথম ওপেনিং করতে নেমেছিলেন প্রোটিয়া তারকা। আর প্রথম দানেই তিনি মারলেন ছক্কা – তাঁর ইনিংসটাই এখন ওপেনার হিসেবে অভিষেকে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।

এদিন খুব যে টেস্ট মেজাজে ব্যাটিং করেছেন তাও কিন্তু নয়, মোটামুটি ওয়ানডে গতিতেই রান তুলেছেন এই ব্যাটার। অথচ শুরুতে খাদের কিনারায় পৌঁছে গিয়েছিলেন তাঁর দল, স্কোরবোর্ড ৬১/০ থেকে ৭২/৩ এ রূপ নেয়। পাক বোলাররা তখন আগুন ঝরাচ্ছিলেন উইকেটে।

সেই আগুনের বিপরীতে তিনি হয়ে উঠলেন শীতল বরফ, একেবারে ঠান্ডা মাথায় বিপর্যয় সামাল দিলেন। টেম্বা বাভুমার সঙ্গে গড়েছেন ২৩৫ রানের দুর্দান্ত একটা জুটি; সেঞ্চুরির পর বাভুমা অবশ্য থেমে গিয়েছেন। তবে তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারেনি কেউই।

কাইল ভেরাইনের সঙ্গে শতাধিক রানের আরেকটি জুটি গড়ে পাকিস্তানকে এক রকম কোণঠাসা করে ফেলেছেন রিকেলটন। সেই সাথে পূর্ণ করেছেন ব্যক্তিগত মাইলফলক, রেকর্ড বইয়ে নিজের নাম লিখিয়েছেন।

রোমাঞ্চকর একটা লড়াই শেষে আগের ম্যাচেই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল। আর সেটা বোধহয় বিধ্বংসী হয়ে উঠতে বাড়তি জ্বালানি দিয়েছে এই বাঁ-হাতিকে। তাছাড়া আগের ম্যাচে ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি, সেটার প্রতিশোধ নেয়ার একটা ব্যাপার নিশ্চয়ই ভাবনায় ছিল তাঁর।

সব মিলিয়ে মনে রাখার মতন একটা ব্যাটিং পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন এই উইকেটরক্ষক, স্বল্প দিনের ক্যারিয়ারে এরই মধ্যে তিনি উঠে এসেছেন ক্রিকেট বিশ্বের আলোচনায়। সামর্থ্যের সমানুপাতিক হারে সমর্থকদের প্রত্যাশা আছে তাঁর ওপর, দক্ষিণ আফ্রিকা যে নবজাগরণের গান গাইছে সেখানে তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতেই হবে।

Share via
Copy link