মন খারাপ করেই বাড়ি ফিরলেন রিয়াদ

একবার মিরপুরের মূল মাঠে নামছেন, আবার চেষ্টা করছেন একাডেমি মাঠে নিজেকে একটু ঝালিয়ে নেয়ার। তবে কোনভাবেই মাঠ নামতে দেয়া হচ্ছেনা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। শেষ পর্যন্ত একটু অনুশীলনও করতে পারলেন না রিয়াদ। খানিকটা মন খারাপ নিয়েই তাই বাড়ি ফিরতে হলো এই ক্রিকেটারকে।

আপনি হয়তো একটু অবাক হতে পারেন। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মত ক্রিকেটার, বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ককে অনুশীলনে বাঁধা দিবেন এমন দুঃসাহস কার। রিয়াদ আসলে আজ মিরপুরে ঠিক করে মাঠেই নামতে পারেননি বৃষ্টির কারণে।

মিরপুরে আজ সকাল থেকেই থেমে থেমে কয়েক দফা বৃষ্টি হলো। বৃষ্টি একটু থামলে রিয়াদ প্রথম চেষ্টা করলেন মূল মাঠে খানিকক্ষণ নিজের শরীর গরম করতে। তবে রিয়াদ মাঠে নামতে না নামতেই আবার বৃষ্টির বাগড়া। এরপর ইনডোরের পাশে নেট গুলোতে একটু ব্যাটিং করতে চাচ্ছিলেন। তবে রিয়াদ নামতে না নামতেই আবার শুরু হলো বৃষ্টি।

শেষ পর্যন্ত আর সেভাবে অনুশীলনই করা হলো না মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। ইনডোরে খানিকক্ষণ শ্যাডো করেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে এই টি-টোয়েন্টি অধিনায়ককে। অবশ্য এরমধ্যে তেমন কোন ম্যাচ খেলারও সুযোগ নেই তাঁর সামনে। কেননা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শুধু টেস্ট ম্যাচ খেলতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ফলে এই সিরিজে তিনি থাকছেন না।

ওদিকে বাংলাদেশকে অনেক হারতে থাকা ম্যাচ জিতিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মিডল অর্ডারে নেমে নীরবে প্রতিপক্ষের হাত থেকে ম্যাচ করে আনতে পারার ক্ষমতার জন্যই সাইলেন্ট কিলার উপাধি পেয়েছিলেন। তবে ব্যাট হাতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সেই সার্ভিস বাংলাদেশ পাচ্ছেনা অনেকদিন ধরেই। ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে তাঁর ব্যাটের সেই ধাঁর নেই অনেকদিন ধরেই।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খুব বেশি ছন্দে ছিলেন না এই ব্যাটসম্যন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক হলেও তাঁর স্ট্রাইকরেট নিয়ে প্রশ্নটা অনেকদিন ধরেই। ব্যাট হাতে ঠিক টি-টোয়েন্টি মেজাজটা ধরতে পারছেন না এই অধিনায়ক।

যেমন ২০২১ সালে বাংলাদেশের হয়ে ২৬ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। সেখানে ২৩.৬১ গড়ে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল ৪৯৬ রান। ২৬ ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন মাত্র দুইবার। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল তাঁর স্ট্রাইকরেট। ২০২১ সালে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ছয় নম্বরে ব্যাট করা রিয়াদের স্ট্রাইক রেট ছিল মাত্র ১০৫.৩০। ফলে তাঁর এই মন্থর ইনিংস গুলো ভালো ভাবেই বাংলাদেশকে ভুগিয়েছে।

এছাড়া ওয়ানডে ক্রিকেটেও দেখা গিয়েছে একইরকম চিত্র। যেমন আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডে সিরিজেও রিয়াদের এমন ধীরগতির ইনিংস দেখা গিয়েছে। প্রথম দুই ম্যাচে একেবারেই ব্যর্থ হবার পর তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে খানিকক্ষণ বাইশ গজে থাকতে পেরেছিলেন। তবে ৫৩ বলের সেই ইনিংসটিতে ছিল না একটিও বাউন্ডারি। ৫৪.৭১ স্ট্রাইকরেটে করেছিলেন মাত্র ২৯ রান।

ছয় নাম্বারে নেমে রঙিন পোশাকের ক্রিকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের এই ইনিংস গুলো নিয়ে সমালোচনার জায়গা অনেক। রিয়াদ তাঁর ক্যারিয়ার জুড়ে যে ধরনের ব্যাটিং করে এসেছেন সেটা এখন আর তিনি পারছেন না। ফলে এই রিয়াদকে নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তাতেই পড়তে হচ্ছে বাংলাদেশকে।

অন্তত টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক রিয়াদের সামনে আসছে বেশ বড় কিছু চ্যালেঞ্জ। প্রশ্ন হচ্ছে রিয়াদকে সেগুলো টপকাতে পারবেন? নাকি বৃষ্টির মত সেসব বাধায়ও হতাশার সাগরে ঢুব দিবেন এই অধিনায়ক?

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link