বাংলাদেশ ক্রিকেটের আগামী ১০ বছরের জন্য সবচেয়ে বড় তারকা কে হবেন? মাশরাফি মোর্তজার কাছে এমন প্রশ্ন করা হলে, বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা অধিনায়ক খুব বেশি না ভেবেই বলেছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের নাম। সেই সাইফউদ্দিনই কিনা নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন বেশ লম্বা সময় ধরে। অমিত সম্ভাবনা নিয়ে বাংলাদেশ দলে অভিষেক হলেও সেই সম্ভাবনার ঝলক দেখাতে পেরেছেন খুব কমই।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে জায়গা পাওয়ার পরেও বাদ পড়ার পর থেকে ছিলেন না কোনো আলোচনায়। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) কেটেছে যাচ্ছে-তাই ভাবে। তবে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের শুধুটা ভালোই হয়েছে সাইফউদ্দিনের। নিজেকে ফিরে পাবার মঞ্চ হিসেবে যেন বেছে নিয়েছেন ডিপিএলকে। গাজী গ্রুপের সাথে পেস বোলিং এর দারুণ প্রদর্শনী দেখা গেছে সাইফউদ্দিনের বোলিংয়ে।
প্রথম স্পেলে ৪ ওভারে ১১ রানে সাইফ তুলে নেন মেহেদী মারুফের উইকেট। পরের স্পেলে সাইফ যেন আরোও ভয়ানক। ৪ ওভারে ১২ রান দিয়ে তুলে নেন, ৪১ রানে ব্যাট করা ইন্ডিয়ান রবি তেজার উইকেট। এরপর মেহেরাব হাসান ও আনামুল হকের উইকেটও নিজের করে নেন সাইফউদ্দিন। ম্যাচ শেষে ৯ ওভারে ৩০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন সাইফউদ্দিন। তাতে প্রতিপক্ষের ইনিংস থামে সবগুলো উইকেট হারিয়ে ১৫৩ রানে।
পুরনো সেই সাইফউদ্দিনের রানআপ, স্লোয়ার, ইয়োর্কারে, যেন আগের রূপে কিছুটা হলেও দেখা গেল তাকে। সদ্যই ব্যক্তিগত জীবনে নতুন ইনিংস শুরু করা সাইফউদ্দিনও নিশ্চয়ই ডিপিএলে দারুণ কিছু করে বিশ্বকাপ পরিকল্পনায় ঢুকে যেতে চাইবেন।
সাইফউদ্দিন বাংলাদেশের জার্সিতে সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছিলেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজে তিনি শেষ বাংলাদেশের হয়ে মাঠে নামেন। বাজে পারফর্ম করে বিশ্বকাপের দল থেকে নাম কাটা যায় মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের।
বাজে ফর্মের পাশাপাশি সাইফউদ্দিনের জন্য আরেক চ্যালেঞ্জ ছিল ইনজুরি। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে এই ইনজুরির সাথে লড়ছেন সাইফউদ্দিন। ফর্মে থাকা সাইফউদ্দিনের জন্য জাতীয় দলে ফেরাটা খুব বেশি কঠিন না হয়তো। পেস বোলিং অলরাউন্ডারের জায়গাটা সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ একটি দলের জন্য। সেই জায়গায় বরাবরই শূন্যস্থান থাকে বাংলাদেশ দলে।
তবে এখন সাইফউদ্দিনের জন্য চ্যালেঞ্জটা আরো বড়। ইতোমধ্যেই জাতীয় দলের দরজায় কড়া নাড়ছেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। দারুণ কিছু করতে না পারলে জাতীয় দলের দরজাটা ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাবে সাইফের জন্য। দীর্ঘদিন ধরে অফফর্মে থাকা সাইফউদ্দিনের জন্য তাই এখন প্রতিটা ম্যাচই একটি করে সুযোগ, দারুণ কিছু করে জাতীয় দলের বিবেচনায় আসার।