৫৬৮ দিন বাদে তিনি ফিরলেন। কার্যত তৃতীয় পেসার হিসেবে একাদশে সুযোগ পেয়েছেন তিনি। আর এসেই বাজিমাত করেছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। উইকেট শিকারের দারুণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। চট্টগ্রামের বুকে প্রত্যাবর্তনের অধ্যায়টা রঙিনই হলো বটে।
প্রতিপক্ষে জিম্বাবুয়ে। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নেই দলটি। শক্তি-সামর্থ্যের বিচারে বেশ পিছিয়ে রয়েছে। তবুও মাঝে মধ্যে বাংলাদেশকে চমকে দিতে দারুণ পছন্দ করে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল। তেমন একটি দলের বিপক্ষে পরখ করে দেখা হচ্ছে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে।
বিশ্বকাপের ভাবনায় থাকা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন নিজেকে প্রমাণের এই ক্ষুদ্র সুযোগ হেলায় অন্তত হারাননি। উইকেট বাগিয়েছেন ৩টি। অবশ্য সুযোগ ছিল চারটি উইকেট নিজের করে নেওয়ার। প্রথম আঘাত হিসেবে তিনি তুলে নেন অভিষিক্ত জয়লর্ড গুম্বিকে। নিজের অভিষেক ম্যাচের ব্যাটিং যাত্রাটা মোটেও খারাপ করেননি জয়লর্ড। তাকে আউট করতে শর্ট ফাইন লেগে তাসকিন আহমেদকে রেখেছিলেন সাইফউদ্দিন।
লেগ স্ট্যাম্প লাইন ধরে এগিয়ে যাওয়া বলটা ব্যাটের সহয়তায় সেখানেই পাঠান গুম্বি। প্রত্যাবর্তনের দিনে প্রথম উইকেট প্রাপ্তি তার। এরপর লুক জংগিকে মিড অনে আটকে ফেলেন তিনি। সে যাত্রায় সাইফউদ্দিনকে সহয়তা করেন তাওহীদ হৃদয়। শেষ উইকেট হিসেবে ব্লেসিং মুজারাবানিকে বোল্ড করেন দারুণ এক বলে।
ইনজুরি সাইফউদ্দিনের ক্যারিয়ারকে পিছিয়ে দিয়েছে অনেকটাই। এমনকি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দশম আসরও খেলা নিয়ে জেগেছিল সংশয়। তবে লড়াই করবার একটা দারুণ মানসিকতা অর্জন করে ফেলেছেন সাইফউদ্দিন। তিনি ইনজুরি কাটিয়ে ফিরলেন দশম বিপিএলেই।
শুধু কি ফিরলেন? ওই যে লড়াই করবার স্পৃহা ছিল তার মাঝে। তিনি তাই ফরচুন বরিশালের হয়ে সর্বোচ্চ লড়াইটুকু করলেন। বরিশালের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলারে পরিণত হন তিনি। বিপিএলে বরিশালের শিরোপা খরায় বারিধারা হয়ে ঝড়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
সেই ধারায় জাতীয় দলের দরজা আরও একবার খুলে যায় তার জন্যে। তিনি সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করলেন লাল-সবুজের নতুন এক অধ্যায়ে। এই অধ্যায়েও উইকেট শিকারে তার সমস্ত মনোযোগ। জিম্বাবুয়েকে দিয়ে শুরু হওয়া নতুন এই যাত্রায় সামনে আসবে আরও কঠিন সব প্রতিপক্ষ। তাদের বিপক্ষেও কার্যকর পারফরমেন্স উপহার দেওয়ার সূচনাই যেন তিনি করলেন।
জিম্বাবুয়ে পড়েছিল ব্যাটিং বিপর্যয়ে। তবে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ায় সিকান্দার রাজার দল। ঠিক সে কারণেই ডেথ ওভারেও বোলিং করবার সুযোগ পান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ইনিংসের একেবারে শেষ বলে হ্যামিলটন মাসাকাদজার উইকেট তার পকেটেই ঢুকতে পারতে যদিনা তিনি নো-বল করে বসতেন। তবুও প্রত্যাবর্তন হয়েছে তার দারুণ। মাত্র ১৫ রান খরচায় নিয়েছেন ৩ উইকেট। এই ধারা অব্যাহত রাখতে চাইবেন বিশ্বকাপেও।