ফুটবল পাড়ার জয়গান এখন শুধুই আর্জেন্টিনাকে ঘিরে। ৩৬ বছর পর দেশটি বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেয়েছে। তাই বাড়তি উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে বুয়েন্স আয়ার্স থেকে শুরু করে রোজারিও, এমনকি সারা বিশ্বের আর্জেন্টিনার সমর্থকদের মাঝে। আলবিসেলেস্তাদের জয়োল্লাস যেন রূপ নিয়েছে এক ধরনের জলোচ্ছ্বাসে। তবে এর মাঝে বেশ কিছু বিতর্কও দানা বেঁধেছে। এমবাপ্পের ছবিযুক্ত পুতুল নিয়ে মক করায় বেশ সমালোচনার মুখে পড়েছেন এমি মার্টিনেজ। তবে এবারের বিতর্কটা হয়েছে জনপ্রিয় রন্ধনশিল্পী ‘সল্ট বে’ কে নিয়ে।
১৮ ডিসেম্বর লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে ফ্রান্সকে ফাইনাল হারানোর পর আর্জেন্টিনার পুরো দল ট্রফি নিয়ে উদযাপনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সমস্যাটা সেখানে নয়। সমস্যা হলো, সল্ট বে কে ঠিক কিছুক্ষণ বাদেই মাঠের ভিতরে ঢুকতে দেখা যায়। শুধু তাই নয়, এক পর্যায়ে তাঁকে ট্রফি হাতেও উদযাপন করতে দেখা যায়। এখন এই জনপ্রিয় রন্ধনশিল্পী কেন মাঠের ভিতর প্রবেশাধিকার পেল এবং তাঁর হাতে কেন ট্রফি গেল সেটি নিয়েই তোপের মুখে পড়েছে ফিফা।
ফিফার নিয়ম বলছে, ‘বিশ্বকাপ ট্রফি একটি অমূল্য সম্পদ। এটা বিশ্বকাপ জয়ী খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ, পরিবার ও রাষ্ট্র প্রধান ছাড়া কেউ স্পর্শ করতে পারে না।’
ফিফার এমন নিয়ম বেশ কিছু বছর ধরেই কড়া নজরদারিতে দেখা হচ্ছে। তাই ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থার এ নিয়মের লঙ্ঘন হয়েছে বলে অনলাইন পাড়ায় প্রথম দিকে একটা শোরগোল শুরু হয়। শুরুর এ সময়ে ফিফার নীরব ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকে। অবশেষে নীরবতা ভেঙ্গে ফিফা এ নিয়ে তদন্ত করার একটি ঘোষণা দিয়েছে। লুসাইল স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের সমাপনী অনুষ্ঠানে একজন কিভাবে মাঠে প্রবেশ করতে পারে, সেটা নিয়ে পর্যালোচনা করছে ফিফা এবং সেই সাপেক্ষে অভ্যন্তরীণ পদক্ষেপও নেয়া হবে বলে জানিয়েছে তারা।
সল্ট বে মূলত তুরস্কের একজন শেফ। তাঁর আসল নাম নুসরেত গোকচে। তুরস্কের এই রন্ধনশিল্পীর আবার সারা বিশ্বে প্রচুর জনপ্রিয়তা রয়েছে। স্টেক তৈরির পর স্টেকের উপর হাত বাঁকিয়ে বিচিত্র এক ভঙ্গিমায় লবন ছিটানোর দৃশ্যের কারণে তিনি হঠাতই সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয়তা পাওয়া শুরু করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি নিজেকে ‘সল্ট বে’ বলে প্রকাশ করেন।
সল্ট বে’র এমন জনপ্রিয়তা অবশ্য ঠুনকো নয়। বেশ ক’বছর ধরেই তিনি রীতিমত সেলিব্রেটি বনে গিয়েছেন। এমনকি লিওনেল মেসি,ডেভিড বেকহাম, কিলিয়ান এমবাপ্পে, নেইমার আর্তুরো ভিদালদের সাথেও তাঁর বেশ সখ্যতা রয়েছে। তাদের সাথে বেশ কয়েকটি ভিডিওতেও তাঁকে দেখা গিয়েছে।
যাহোক, কিচেনের সল্ট বে এবার আলোচনায় মাঠের কান্ডে। তিনি যা করেছেন ইতিহাস ও ঐতিহ্য বিবেচনায় তা রীতিমত নিয়ম লঙ্ঘনের মতো। এ নিয়ে সারাবিশ্বে শোরগোলের আঁচটার দিকে চোখ রাখলেই বুঝা যায়। এখন দেখার পালা ফিফার তদন্তে সল্ট বে ঠিক কোন শাস্তির মুখে পড়েন।