নতুন ব্যাট পাওয়ার পর প্রত্যেক ক্রিকেটার সেই ব্যাটের স্ট্রোক নিরীক্ষা করে নেয়। নুহায়েল সানদিদও ঠিক সে কাজটাই করে দেখলেন মিরপুর একাডেমি মাঠে। সদ্যই যে একটা ব্যাট উপহার পেলেন তিনি। জাতীয় দলের ক্রিকেটার শেখ মেহেদী সানদিদকে উপহার দিয়েছেন সেই ব্যাট।
তা পরখ করে দেখতে কয়েকদফা বলের সন্ধান করলেন তিনি। এরপর নিজের হাতেই পরীক্ষা করে নিলেন ব্যাটের স্ট্রোক। তারপর সেই ব্যাট দেখালেন বাবা কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনকে। হ্যা, নুহায়েল সানদিদ দেশ বরেণ্য কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের বড়পুত্র।
সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালদের মত তারকা ক্রিকেটারদের কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে সালাহউদ্দিনের। তার কোচিং দক্ষতার সুনাম দেশ ছাপিয়ে ছড়িয়ে গেছে সর্বত্র। সেই কোচের ছেলে সানদিদও বেছে নিয়েছেন ক্রিকেটকে। এমনকি এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগেও খেলছেন সানদিদ।
গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমির স্কোয়াডে জায়গা করে নিয়েছেন সানদিদ। ঢাকা প্রথম বিভাগ ক্রিকেটেও তিনি খেলেছেন গাজী টায়ার্সের হয়ে। কলাবাগান ক্রিড়া চক্রের বিপক্ষে একটি ম্যাচে চারটি উইকেট বাগিয়েছিলেন সানদিদ। এরপরই দল প্রথম বিভাগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রিমিয়ার লিগে উন্নিত হয়েছে। আর সেই সাথে প্রিমিয়ার লিগে খেলার সুযোগ পেয়ে গেছেন সানদিদ।
কেননা তিনি যে অনন্য। তার বাবাই তাকে হতে বলেছিলেন অনন্য। সানদিদকে সালাউদ্দিনই বানিয়েছেন একজন চায়নাম্যান বোলার। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে খুব কাছ থেকেই দেখেছেন সালাউদ্দিন। তিনি জানেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বা-হাতি স্পিনার হিসেবে সাকিবকে ছাড়িয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। তাছাড়া পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে সাকিবের সাথে তুলনা হওয়াও অবধারিত। সেটাও আবার নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে ছেলের ক্যারিয়ারে।
বাংলাদেশের ক্রিকেটের খুঁটিনাটি যার জানা, তার কাছ থেকে এতটুকু দূরদর্শিতা তো প্রত্যাশিতই। তাইতো ছেলেকে হতে বলেছেন চায়নাম্যান। জাতীয় দলের তারকারা যার কাছে আশ্রয় খোঁজে, তার পরামর্শকে অবহেলা করবার দু:সাহস কিশোর সানদিদ আর কিভাবেই বা দেখাবেন!
তিনি দেখাননি। তিনি অনন্য হয়েই বিচরণ করতে চাইছেন। এখন তো রীতিমত বাবার প্রতিপক্ষ বনে গেছেন তিনি। বাবা প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের কোচ। অন্যদিকে সানদিদ রয়েছেন গাজী টায়ার্সের ডেরায়। যদিও সানদিদ এখনও কোন ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি।
অনূর্ধ্ব ১৮ টুর্নামেন্টে খেলে আসা এই চায়নাম্যানের এখনও বহুদূর যাওয়া বাকি। তবে প্রিমিয়ার ডিভিশনে তার অভিষেকটা নিশ্চয়ই স্মরণীয় করে রাখতে চাইবেন সানদিদ। শেখ মেহেদীর ব্যাট দিয়ে না হোক, নিজের স্পিন ঘূর্ণিতেই দলকে এনে দিতে চাইবেন জয়।