আজকাল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট কেন ওয়ানডেতেও পর পর ছয় ছক্কার ঘটনা ঘটে প্রায়ই। আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও আজকাল এমন ঘটনাকে হারিকেন দিয়ে খোঁজার দরকার হয় না। তারপরও লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগে (এলপিএল) সেকুগ্গে প্রসন্নর তাণ্ডবময় ব্যাটিং ইতোমধ্যেই সাড়া ফেলেছে ক্রিকেট পাড়ায়। ম্যাচে ব্যাকফুটে থাকা কলম্বো স্টার্সকে জয় এনে দেন সিকুগে। ছয় বলের ছোট্ট এক ইনিংসে গড়েছেন রেকর্ডও!
ক্যান্ডি ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে ১৪৭ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে শেষ ১৩ বলে কলম্বোর প্রয়োজন তখন ৩৭ রান! নতুন ব্যাটার হিসেবে ক্রিজে তখন সেকুগ্গে প্রসন্ন। বিনুরা ফার্নান্দোকে ছক্কা হাঁকিয়ে ইনিংসের শুরু। শেষ ২ ওভারে দরকার ছিলো ৩১ রানের। সিকুগের তাণ্ডবে ২ বল বাকি থাকতেই ৫ উইকেটের জয় তুলে নেয় কলম্বো। শেষ ওভারে দরকার ছিলো ১৬ রানের।
প্রথম বলে লেগ বাইতে সিঙ্গেল হলে স্ট্রাইক পান সেকুগ্গে। লাহিরু কুমারার পর পর তিন বলে তিন ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে শ্বাসরুদ্ধকর এক জয় এনে দেন সিকুগে। শেষ ৩৭ রানের ৩২ রানই আসে সেকুগ্গের ব্যাটে। ৫ ছক্কায় ৬ বলে ৩২ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস উপহার দেন তিনি। দুর্দান্ত এক ইনিংসে জিতে নেন ম্যাচ সেরার পুরস্কারও।
এই ইনিংসের মধ্য দিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন রেকর্ড বইতেও। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে ২০ বা তার বেশি রানের ইনিংস খেলা যেকোনো ব্যাটারের মধ্যে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটধারী এখন সেকুগ্গে প্রসন্ন। ৫৩৩.৩৩ স্ট্রাইক রেটে বিধ্বংসী ইনিংসটি খেলেন তিনি। এই তালিকার আগের রেকর্ডটি ছিলো ক্যারিবিয়ান তারকা কার্লোস ব্র্যাথওয়েটের দখলে। ২০১৪ সালে রেড স্টিলের বিপক্ষে অ্যান্টিগা হকবিলসের হয়ে ৪ বলে ৩ ছক্কায় ২০ রানের ইনিংস খেলেন ব্র্যাথওয়েট। ৫০০ স্ট্রাইক রেটে খেলা ব্রাথওয়েটের ওই ইনিংসটি ছিলো সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটে।
এরপর গেলো বছর ২০২০ সালে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) শারজাহতে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে ২ চার ও ২ ছক্কায় ২০ রানের এক ক্যামিও খেলেন ক্রুনাল পান্ডিয়া। ৫০০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করা ক্রুনালের ইনিংসটি এই তালিকায় ব্রাথওয়েটের সাথে যৌথভাবে দুইয়ে আছে।
টি-টোয়েন্টিতে ২০ বা তার বেশি রান করা ব্যাটারদের মধ্যে ৫০০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করতে পেরেছেন মাত্র এই তিন জনই। কার্লোস ব্রাথওয়েট ও ক্রুনাল পান্ডিয়ার পর এই তালিকার শীর্ষে যুক্ত হলেন সেকুগ্গে প্রসন্ন। এছাড়া এই তালিকায় আরো আছেন আন্দ্রে রাসেল, আসিফ আলি, ক্রিস মরিসের মতো তারাকারাও।
অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের মতো লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগটা সেভাবে লাইমলাইটে আসছিলো না। তবে সেকুগ্গের ইনিংসে ক্রিকেট পাড়ায় আলোচনায় এসেছে এলপিএল। হটাৎ করেই যেনো এলপিএলের আমেজ বেড়েছে আগের চেয়ে দ্বিগুণ।