শাহিন আফ্রিদি ইজ ব্যাক!

টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে ঘিরে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের উপর আশঙ্কার যে ঘনকালো মেঘ ছিল, তা একটি মাত্র খবরেই অনেকটা কেটে যেতে চলেছে। স্রেফ খবর না বলে বরং এটাকে পাকিস্তানের জন্য দারুণ এক সুখবর বলা উচিত। কারণ, দলে ফিরছেন বিধ্বংসী বোলার শাহীন শাহ্‌ আফ্রিদি। যে কোনো দলকে একা হাতে গুড়িয়ে দিতে সক্ষম যে পেসার। শাহিন শাহ আফ্রিদি দলে ফেরা মানে পাকিস্তান দল দ্বিগুণ শক্তিতে এবার বিশ্বকাপ মিশনে নামতে যাচ্ছে।

পাকিস্তানের পেস বোলিংয়ের কাণ্ডারি শাহিন আফ্রিদি গত আগস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টে চোট পেয়েছিলেন। সেই চোটের কারণে এশিয়া কাপ থেকেও ছিটকে গিয়েছিলেন। যদিও প্রতিপক্ষ দলে টপ অর্ডার ব্যাটারদের জন্য এটা ছিল স্বস্তির বিষয়।

এশিয়া কাপে পদে পদে পাকিস্তান বোলিং লাইন আপে শাহিনের না থাকা টের পেয়েছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সাত ম্যাচবিশিষ্ট টি- টোয়েন্টি সিরিজেও খেলেননি তিনি। এই সময়গুলোয় তিনি ছিলেন চোট কাটানোর প্রক্রিয়ার মধ্যে।

পাকিস্তানি ভক্ত- সমর্থকদের বিশ্বকাপের আগে একটাই চাওয়া ছিল যেন দলে এই কার্যকরী পেসার ফিরে আসেন। এইদিকে টিম ম্যানেজমেন্টরও প্রত্যাশা ছিল শাহিন যত দ্রুত পারুক, ফিট হয়ে ফিরুক।

সেই উদ্দেশ্যেই বাইশ বছর বয়সী এই পেসারকে টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াডেও রাখা হয়েছিল। অবশেষে হাঁটুর চোট কাটিয়ে উঠেছেন শাহীন। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান রমিজ রাজা নিজেই শাহিনের ফিট হওয়ার কথাটি ঘোষণা করেছেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, ভারতের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের ম্যাচে মাঠে নামবেন শাহিন।

পিসিবির চেয়ারম্যান রমিজ রাজা বলেন, ‘আমি দু’দিন আগে শাহিন শাহ আফ্রিদির সাথে কথা বলেছি। ওর শারীরিক অবস্থা এখন অনেকটাই ভাল। দ্রুত চোট সারছে। ডাক্তাররা আমাকে তার ভিডিও পাঠিয়েছে। সেখানে তাঁরা জানিয়েছে শাহিন এখন ৯০ শতাংশ ফিট। তবু আমরা ঝুঁকি নিতে চাইনি। যেহেতু তাঁর চোটটি বেশ গুরুতর, তাই আমরা চাই সে ১১০ শাতাংশ ফিট হয়েই মাঠে নামুক। অবশ্য শাহীন আমাদের বলেছে সে এখন ১১০ শতাংশ ফিট। সে আমাকে বলেছে যে, সে অস্ট্রেলিয়ায় যাবে এবং সেখানে অনুশীলন ম্যাচ খেলবে। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য সে প্রস্তুত।’

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আসন্ন ২৩ অক্টোবর ভারতের বিপক্ষে প্রত্যাবর্তন ঘটবে শাহিন আফ্রিদির। শাহিনের ফিট হওয়া পাকিস্তানের জন্য যতটা উত্তেজনার বিষয়, অন্যদিকে ভারতের জন্য তা অশনি সংকেতও বটে। গেলবার এই শাহিনেই নাস্তানাবুদ হয়েছিলেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা। এবার অস্ট্রেলিয়ার মত দ্রুত গতির পিচে, শাহিন আফ্রিদি আরও বিধ্বংসী রূপ ধারণ করতে পারে। শাহিনের ফেরার কথা ঘোষণা দিয়ে রমিজ রাজা হয়তো প্রতিপক্ষ দলগুলোকে মৃদু হুশিয়ারিই দিলেন যেন।

শাহিনের ফিরে আসা আর যাই হোক পাকিস্তানের শিবিরে দারুণ স্বস্তি ফিরিয়ে আনবে। টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে ঘিরে পাকিস্তানের জন্য যতগুলো সংকট ছিল তন্মধ্যে অন্তত বোলিং সাইডের শঙ্কাটা কাটলো। যদিও এখনও দলে ‘মিডল অর্ডার ক্রাইসিস’ও বেশ মাথাব্যাথার বিষয় হয়ে সামনে দাড়িয়ে আছে।

অন্তত পাকিস্তান দল বোলিং লাইন আপে পূর্ণ শক্তি নিয়েই মাঠের মোকাবেলায় নামতে যাচ্ছে। আপাতত অপেক্ষা করতে হচ্ছে ভারত- পাকিস্তান ম্যাচটির। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মাঠের লড়াইয়ে শেষমেশ কেউ হয়ত হারবে, কেউবা জিতবে। কিন্তু দিনশেষে নিঃসন্দেহে, আমাদের মত ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য সেটি দারুণ একটি উপভোগ্য ম্যাচ হতে যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link