মনের ভেতরে জ্বলতে থাকা আগুন ভষ্ম করে দিল বাইশ গজ। শাহিন শাহ আফ্রিদির তোপের মুখে সিরিজ জয়ের আশা ধূলিসাৎ হয় নিউজিল্যান্ডের। সেই দূর্ধর্ষ শাহিনের দেখা মেলে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে। চার খানা উইকেট বাগিয়েছেন শাহিন। দলের জয়ের জন্যে তিনি ভুলে যেতে পারেন সবকিছুই।
নিউজিল্যান্ডকে পাকিস্তান ছুড়ে দেয় ১৭৯ রানের লক্ষ্যমাত্রা। সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জয় ছাড়া বিকল্প ছিল না পাকিস্তানের সামনে। কেননা ম্যাচ হারলে, হারতে হতো সিরিজ। নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় সারির দলের বিপক্ষে সিরিজ পরাজয় দারুণভাবে প্রভাবিত করত পাকিস্তানের বিশ্বকাপ প্রস্তুতিতে। তবে তেমন কিছু হতে দেননি শাহিন শাহ আফ্রিদি।
সাম্প্রতিক সময়ে শাহিন শাহ আফ্রিদির সাথে ঘটে গেছে অনেককিছু। বেশ অবহেলিত অনুভব করেছেন তিনি নিশ্চিতরুপেই। কেননা অধিনায়কত্ব পেয়েও তা একপ্রকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে তার কাছ থেকে। সেখানে অবহেলার বিষয়টি ছিল স্পষ্টই।
তবে শাহিন যেন আবারও প্রমাণ করলেন তাকে অবজ্ঞা করা সম্ভব নয়। তিনি এ সময়ের সেরা, তিনি বর্তমান পাকিস্তানের সেরা পেসার। দলকে একেবারে কঠিন মুহূর্ত থেকেও বাচিয়ে নিয়ে আসতে পারেন তিনি বা-হাতের গতিময় বোলিং দিয়ে।
এদিন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং অর্ডারে প্রথম আঘাতটা তিনিই করেন। টম ব্ল্যান্ডেলের উইকেট উপড়ে ফেলে শুরু। স্ট্যাম্পের লাইনে বল পড়ে সে বল বেড়িয়ে যাওয়ার সময় ছুঁয়ে ফেলে স্ট্যাম্প। এমন বোলিংয়ের জন্যেই তো বিশ্বজোরা খ্যাতি কামিয়েছেন।
দ্রুতই ম্যাচ শেষ করবার সূচনাই যেন করতে চেয়েছিলেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। তবে নিউজিল্যান্ড সহজেই কেন হাল ছেড়ে দেবে! টিম সাইফার্ট পালটা আক্রমণ শুরু করেন। তার সাথে জোট বাঁধেন মাইকেল ব্রেসওয়েল। এই দুইজন নিউজিল্যান্ডকে জয়ের কক্ষপথেই রেখেছিলেন। সেখান থেকে অবশ্য পাকিস্তানকে ম্যাচে ফেরান উসামা মির।
টিম সাইফার্টকে আউট করে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন পাকিস্তানি লেগি। এরপরই নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং অর্ডার খানিকটা নড়বড়ে হয়ে পড়ে। তবে সেই নড়বড়ে ব্যাটিং ভীতের উপর দাঁড়িয়ে তাণ্ডব চালাতে শুরু করেন জিমি নিশাম। ৭ বলে ১৬ রান তুলে নেন এই মারকুটে ব্যাটার। তবে অষ্টম বলটায় পরাস্ত হতে হয় তাকে। ব্ল্যাকক্যাপসদের জয়ের সমস্ত সম্ভাবনা তখনই ধুলিসাৎ করে দেন শাহিন আফ্রিদি।
শাদাব খানের কাছে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন নিশাম। এরপর অবশ্য আরও দুই উইকেট শিকার করেন শাহিন। শূন্যরানে ফেরান জ্যাকেরি ফৌকসকে। তারপর লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে আউট করেন ইশ সোদিকে। তাতে করেই ৪টি উইকেট লেখা হয়ে যায় শাহিনের নামের পাশে।
মাত্র ৩০ রান খরচা করেছেন তিনি। পাকিস্তানকে বাচিয়েছেন সিরিজ পরাজয় থেকে। ঘরের মাঠে মান বাচিয়েছেন গোটা দলের। এই কাজটা বেশ ভালভাবেই করে আসছেন তিনি একেবারে ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই। যতই তার সাথে অযাচিত ব্যবহার করা হোক না কেন, তিনি মাঠে নিজের সর্বোচ্চ নিবেদনটুকু নিঙড়ে দিতে কুণ্ঠাবোধ করেন না।