বাংলাদেশের বিশ্বকাপ নেই, অলিম্পিকে মেডেল নেই, বিজ্ঞান কিংবা প্রযুক্তিতে বলার মত অর্জন নেই তবু বাংলাদেশের একজন বিশ্বসেরা আছেন, বিশ্বের দুয়ারে সবার উপরে লাল সবুজের পতাকাটা রাখার মত একজন আছেন – তিনি সাকিব আল হাসান। তিন ফরম্যাটেই তাঁর সরব উপস্থিতি ঈর্ষান্বিত করবে বাঘা বাঘা কিংবদন্তিদের, তবে বনেদি ফরম্যাট টেস্টে সাকিবের পারফরম্যান্স সবচেয়ে উজ্জ্বল।
২০০৭ সালে অভিষেকের পর থেকে তিনি ম্যাচের পর ম্যাচ উপহার দিয়েছেন দুর্ধর্ষ পারফরম্যান্স। এর মধ্যে সেরা পাঁচ তুলে এনেছে খেলা ৭১।
- বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ (২০০৯)
মাশরাফির চোটের কারণে সাকিব সেবার দলের অধিনায়ক, সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটে বলে সর্বেসর্বা হয়ে উঠেছিলেন। সেই ম্যাচে তাঁর খেলা অপরাজিত ৯৬ রানের ইনিংস এখনো পুলকিত করে সমর্থকদের, এছাড়া বল হাতে একাই আট উইকেট নিয়ে দলের জয় ত্বরান্বিত করেছিলেন তিনি।
- বনাম জিম্বাবুয়ে (২০১৪)
সেদিন ক্রিকেটের আকাশ ছুঁয়ে ফেলেছিলেন সাকিব আল হাসান, একই ম্যাচে সেঞ্চুরি আর দশ উইকেট শিকারের দুর্লভ কীর্তি যোগ হয় তাঁর অর্জনের খাতায়। প্রথম ইনিংসে ১৩৭ রান করেছিলেন তিনি, আর দুই ইনিংসেই পেয়েছিলেন ফাইফার। স্বাভাবিকভাবেই বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ আর ম্যাচসেরার পুরুষ্কার গিয়েছে তাঁর ঝুলিতে।
- বনাম ইংল্যান্ড (২০১৬)
স্যালুট, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে আইকনিক দৃশ্যের অবতারণা ঘটেছিল – বেন স্টোকসকে আউট করে তাঁর উদযাপন এখনো মনের কোণে সযত্নে রেখেছে সবাই। পুরো ম্যাচে সবমিলিয়ে ৯০ রান করেছিলেন তিনি, আর বল হাতে নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট।
- বনাম শ্রীলঙ্কা (২০১৭)
বাংলাদেশের শততম টেস্ট, আর এই টেস্টে নিজের সবচেয়ে ভয়ানক রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন টাইগার তারকা। প্রথম ইনিংসে করেন সেঞ্চুরি, দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে সফল না হলেও পুরো ম্যাচে ছয় উইকেট তুল নিয়ে লঙ্কান বধের উৎসবে নেতৃত্ব দেন তিনিই।
- বনাম অস্ট্রেলিয়া (২০১৭)
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ের রেশ কাটতে না কাটতেই মিরপুরে নাকানিচুবানি খায় মাইটি অস্ট্রেলিয়া – সেটার রূপকার যে সাকিব আল হাসান নিজেই তা বোধহয় এখন আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলাদেশ আগে ব্যাট করতে নামলে তাঁর ব্যাট থেকে আসে ৮৪ রানের ঝকঝকে ইনিংস; তারপর তো বল হাতে অজিদের নাচিয়ে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মত দশ উইকেট অর্জনের স্বাদ নেন তিনি।
সতেরো বছরের ক্যারিয়ারে সাকিব অবশ্য আরো বহু পারফরম্যান্স করেছেন যা নিন্দুকদেরও বাধ্য করবে প্রশংসা করতে। তবে টেস্টে আজীবন পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ তাঁর সেই অবদানের মূল্যায়ন করতে পারলো কই, কত ম্যাচেই তাঁকে অতিমানবীয় পারফরম করেও পরাজিত শিবিরে থাকতে হয়েছে।