শেষ সাত ওভারে রংপুর রাইডার্সকে করতে হত ৬৩ রান। ব্যাটিং করছেন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ও পাকিস্তানের অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এমন পরিস্থিতি হরহামেশাই তৈরি হয়। এখান থেকে ম্যাচ জেতাটাও খুব কঠিন কিছুনা এই ফরম্যাটে। শুধু সোহান আর মালিককে শেষ পর্যন্ত থাকতে হত।
তবে নুরুল হাসান সোহান আরেকবার ব্যাট হাতে হতাশ করলেন। অনেকদিন ধরেই রান করতে পারছেন না। এবারের বিপিএলেও এখন পর্যন্ত নিজের স্বভাবসূলভ ব্যাটিংটা করতে পারেননি। তবে তাঁকে আজ সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল রংপুরের। এমন সব ম্যাচ বের করে আনাই তাঁর বিশেষত্ব।
তবে ১৮ বল থেকে মাত্র ১০ রান করেই ফিরে গেলেন সোহান। শেষ চার ওভারে রংপুরের তখনো প্রয়োজন ৪০ রান। ক্রিজে একমাত্র আশা হয়ে আছেন শোয়েব মালিক। বাংলাদেশের শামীম পাটোয়ারিও আছেন আরেক প্রান্তে। আর এই দুজনেই দলকে জয় এনে দিলেন। দুজনে মিলে ১৮ বল থেকে করেছেন ৩৩ রানের জুটি।
ওদিকে শোয়েব মালিকও নিজের ইনিংস শুরু করেছিলেন একটু ধীরগতিতেই। প্রথম ২০ বল খেলে করেছিলেন মাত্র ১৪ রান। পরে অবশ্য গিয়ার শিফট করার চেষ্টা করেছেন এই ব্যাটার। আগের ম্যাচেও ঝড়ো ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। আজও কী পারবেন মালিক?
শেষ তিন ওভারে রংপুরকে করতে হবে ৩৫ রান। ওদিকে চট্টগ্রামের উইকেট যেন ঢাকার ঠিক বিপরীত। এখানে প্রথম ম্যাচে রান হলেও দ্বিতীয় ম্যাচে বোলাররাই ভালো করেছে। আগে ব্যাট করে খুলনা করতে পেরেছিল মাত্র ১৩০ রান। তবে সেটাও কঠিন হয়ে উঠলো রংপুরের জন্য।
খুলনার হয়ে নাসুম আহমেদ, নাহিদুল ইসলামরা কিপ্টে বোলিংই করেছেন। নাসুম চার ওভারে ২১ রান দিয়ে নিয়েছেন দুই উইকেট। ওদিকে নাহিদুল কোন উইকেট না পেলেও চার ওভারে খরচ করেছেন মাত্র ১৭ রান।
এমন উইকেটেভ শেষ তিন ওভারে ৩৫ রান করাটা বেশ কঠিনই মনে হচ্ছিল। তবে আঠারোতম ওভারে নজরটা নিজের দিকে টেনে নেন শামীম পাটোয়ারি। এই ব্যাটার শেষ তিন বলে টানা তিন বাউন্ডারি মারেন আহমেদ বাটকে।
এতেই যেন ম্যাচে আবার প্রাণ ফিরে আসে। শেষ দুই ওভারে রংপুরকে করতে হবে ২১ রান। উনিশতম ওভারের শুরুটাও মালিক করলেন শামীমের দেখানো পথেই। এবার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে টানা দুই বাউন্ডারি। প্রথম বলে চারের পর। দ্বিতীয় বলে মাথার ওপর দিয়ে বিশাল ছয়।
এরপর দেখা গেল সেটা আবার নো করেছেন সাইফউদ্দিন। আর সেখানেই ম্যাচটা রংপুরকে তুলে দিয়েছেন সাইফউদ্দিন। শেষ দশ বলে প্রয়োজন মাত্র নয় রান। তবে সেই ওভারেই আবার মালিকের উইকেট তুলে নিয়েছেন সাইফউদ্দিন। শেষ পর্যন্ত ৩৬ বলে ৪৪ রান করতে পেরেছেন এই ব্যাটার।
চট্টগ্রামে তাঁর এই ইনিংসেই ম্যাচে ফিরতে পেরেছে রংপুর। তবুও শেষ ওভারে সাত রান করার কাজটা টেলেন্ডারদের নিয়ে করতে হত শামীমকে। আবারো রংপুর ভক্তদের হৃদয়ে কম্পন। শামীম কি পারবেন জেতাতে?
শামীমকে আর বেশি কিছু করতে হল না। ওয়াহাব রিয়াজের শেষ ওভারে বিশাল এক ছয় মারলেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। তবে দলের জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন শামীম। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ১০ বল থেকে করেছেন ১৬ রান। ফলে চট্টগ্রামে রংপুরের যাত্রাটা জয় দিয়েই শুরু হল।