বেলা ফুরিয়ে শান্তর প্রশান্তি

স্বস্তির সাথে খানিকটা আক্ষেপও হয়তো আছে, এমন আত্মবিশ্বাসী শান্ত আরো কয়েকটা ম্যাচে দেখা গেলে জয়ের সংখ্যা বাড়তেও পারতো। 

পুরো বছর জুড়ে ওয়ানডেতে রঙিন সময় কাটিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত; বিশ্বকাপে তাই তাঁকে ঘিরে প্রত্যাশাও ছিল অনেক বেশি। কিন্তু প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একটা পঞ্চাশোর্ধ খেলার পরেই ছন্দ হারিয়ে ফেলেন তিনি। টানা ছয় ম্যাচে আউট হয়েছেন সিঙ্গেল ডিজিটে, এর মাঝে দুইবার আবার রানের খাতাই খুলতে পারেননি।

দুঃসময় কাটিয়ে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের গল্প লেখা নাজমুল শান্ত কি আবার আঁধারে হারাচ্ছেন এমন শঙ্কা যখন জেগে উঠেছিল তখনি নিজের সেরা রূপে ফিরতে সক্ষম হলেন তিনি। আর সেজন্য এমন একটা সময় বেছে নিলেন যে সময় তাঁকেই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল দলের।

২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে হলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই। অথচ বরাবরের মতই দুই ওপেনার আউট হয়েছেন শুরুর দিকেই। আরো একবার বিপর্যয়ের মুখোমুখি হওয়া টাইগারদের জয়ের দিকে নিয়ে গিয়েছেন শান্ত, খেলেছেন ১০১ বলে ৯০ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস।

প্রথম দিকে অবশ্য হাত খুলে খেলতে পারেননি এই বাঁ-হাতি। নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়েছে, ধৈর্যের প্রমাণ দেখিয়ে সেটাই করেছেন তিনি। সময় গড়াতেই লঙ্কান বোলারদের শাসন করতে শুরু করেন; একটা পর্যায়ে তাঁর রান ছিল ৩৬ বলে ১৯, অথচ পরের ২৬ বলে করেন ৩৮ রান। তখনি ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নিয়ে নেয় বাংলাদেশ।

ফিফটি করে অবশ্য আত্মতুষ্টিতে ভোগেননি এই তারকা; অহেতুক ঝুঁকিও নেননি। বল বুঝে ব্যাট করেছেন, স্ট্রাইক রোটেটের পাশাপাশি সুযোগ মত বাউন্ডারি আদায় করেছেন। ফলে একদিকে যেমন ইনিংস বড় হয়েছে তেমনি জয়ের দিকে এগিয়েছে টিম টাইগার্স।

আরেক প্রান্ত সাকিব আল হাসানও তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন। দুজনে গড়েছেন ১৬৯ রানের জুটি, আর চলতি বিশ্বকাপে এটিই বাংলাদেশের প্রথম শতরানের জুটি। আগের সর্বোচ্চ ছিল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৯৭ রান, সেখানেও অবদান আছে শান্তর। বলাই যায়, টপ অর্ডারে এই তরুণের ব্যাট হাসলেই জয়ের সম্ভাবনা বাড়ে টাইগাররা।

যদিও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের বলে সাকিব আউট হতে মনোযোগ হারিয়ে ফিরে গিয়েছেন তিনিও। সুযোগ ছিল প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে অভিষেক বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করার কিন্তু সেটা পারলেন না মাত্র দশ রানের জন্য। অবশ্য যা করেছেন তাতেই জয় ভিত পেয়েছে বাংলাদেশ।

বিশ্বকাপের বড় একটা সময় ছন্দহীন ছিলেন নাজমুল শান্ত, সেটার দায় তাঁর যেমন আছে তেমনি আছে টিম ম্যানেজম্যান্টেরও। বারবার পজিশন বদল করে তাঁর স্বাভাবিক খেলাকে বিঘ্নিত করেছে।তবু আসরের শেষদিকে তিনি ফর্মে ফিরেছেন সেটা নিঃসন্দেহে ভক্ত-সমর্থকদের জন্য স্বস্তির; স্বস্তির সাথে খানিকটা আক্ষেপও হয়তো আছে, এমন আত্মবিশ্বাসী শান্ত আরো কয়েকটা ম্যাচে দেখা গেলে জয়ের সংখ্যা বাড়তেও পারতো।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...