ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে এক ফিনিক্স পাখির উত্থান

টুর্নামেন্টের মাঝ পথে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন শোয়েব মালিক, এরপর শোনা গিয়েছিল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের এই আসরে আর খেলবেন না তিনি। কিন্তু নাটকীয়তার শেষ পর্বে আবারো ফেরেন ফরচুনের বরিশাল জার্সিতে – মাঠের বাইরে এমন কান্ডে বিতর্কের জন্ম দিলেও মাঠে বরাবরের মতই পারফর্মার  মালিককে পাওয়া গেল।

খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে এদিন ব্যাটে বলে উজ্জ্বল ছিলেন তিনি। প্রথম ইনিংসে চার ওভার হাত ঘুরিয়ে নিয়েছিলেন দুই উইকেট, দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে করেছেন ২৫ বলে ৪১ রান। বলা যায়, বরিশালের জয়ে তাঁর অবদান সবচেয়ে বেশি। স্বাভাবিকভাবেই প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে তাঁকে।

পাওয়ার প্লেতেই আক্রমণে এসেছিলেন এই ডানহাতি, নিজের প্রথম ওভারে দিয়েছিলেন আট রান। তবে কাজের কাজটা করেছেন ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারে, এক ছক্কা হজম করা সত্ত্বেও পর পর দুই বলে দুই উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি। তাতেই খুলনার ব্যাটিং লাইন আপে ধ্বস নেমেছিল।

পরবর্তীতে আরো দুই ওভার বল করেছিলেন এই পাক তারকা, কিন্তু রান খরচে দিয়েছেন কিপ্টেমির পরিচয়। তাঁর এই দুই ওভারে কেবল নয় রান নিতে পেরেছিল ব্যাটাররা। সব মিলিয়ে চার ওভারে ২৪ রান দিয়ে দুই উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন তিনি।

এই অলরাউন্ডার এতটুকুতে তুষ্ট হতে পারেননি হয়তো, তাই ব্যাটিংয়ে নেমে নিজের সেরাটাই দিয়েছেন, খেলেছেন ম্যাচ জেতানো ইনিংস। মেহেদি হাসান মিরাজের সঙ্গে তাঁর ৫৫ রানের জুটিই মূলত ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়েছে।

অবশ্য তিনি যখন বাইশ গজে আসেন, দল তখন কিছুটা ব্যাকফুটে। সেজন্য প্রথম দিকে খেলেছেন রয়ে সয়ে, মুশফিকের সঙ্গে তাঁর ৩০ রানের পার্টনারশিপ সেই কথাই বলে। তবে আস্কিং রান রেট বেড়ে যেতেই হাত খুলে খেলতে শুরু করেন এই ব্যাটার।

মিরাজ নামার পর মাত্র আট বল মোকাবিলা করেছেন তিনি, এরই মধ্যে চার ছক্কার পসরা সাজিয়ে ২২ রান করেছেন। জয়সূচক রানও এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে, শেষ ওভারে যখন ১৮ রান প্রয়োজন ছিল তখন দাসুন শানাকার দুই বলে দশ রান তুলে জয় নিশ্চিত করেছিলেন এই অলরাউন্ডার।

সুদীর্ঘ টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে শোয়েব মালিক এমন বিধ্বংসী আর ধারাবাহিক ছিলেন সব সময়। পাকিস্তানের জার্সি কিংবা ফ্রাঞ্চাইজি লিগ যেখানে সুযোগ পেয়েছেন সেখানেই ইম্প্যাক্টফুল পারফরম্যান্স ছিল তাঁর। চলতি বিপিএলে এখন পর্যন্ত সেটার ব্যতিক্রম হয়নি, আগামী দিনগুলোতেও নিশ্চয় হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link