একটা অলৌকিক ঘটনা ঘটে গেছে। ২০১৪ যেন ফিরে এসেছে ২০২৫-এ। অন্তত পাঞ্জাব কিংসের ক্ষেত্রে ঘটেছে তা। ফাইনালে তাদের দুই ভিন্ন অধিনায়কের ব্যাটে ব্যর্থতা। শুধু তাই নয়, সংখ্যাও এক। ২০১৪ সালের ফাইনালে জর্জ বেইলি দুই বলে এক রান করে আউট হয়েছেন। ২০২৫ আসরের ফাইনালে পাঞ্জাবের অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারও ফিরেছেন দুই বলে এক রান করে। দেজা ভ্যু!
কিন্তু বিষাদের এই যন্ত্রনা কি আদোতে ছিল শ্রেয়াসের প্রাপ্য? সম্ভবত নয়। কিন্তু প্রকৃতি হয়ত শ্রেয়াসকে বোঝাতে চেয়েছে- সব পেলে নষ্ট জীবন। তাইতো স্বর্ণালি ওই শিরোপাটা টানা দ্বিতীয়বার হাতের মুঠোয় নেওয়ার সুযোগটা বাস্তব হল না।
কি করেননি শ্রেয়াস আইয়ার? পাঞ্জাব কিংসকে চ্যাম্পিয়ন বানানোর জন্যে নিবেদনের এক ছটাক কমতি রাখেননি। প্রায় প্রতিটা ম্যাচে ব্যাট হাতে সম্মুখভাগে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে তো একা হাতে ম্যাচ জিতিয়ে দলকে তুলেছিলেন স্বপ্নের ফাইনালে।
কিন্তু বিষাদ মেঘময় এক অন্ধকার ছাড়া তার কপালে জুটল না কিছুই। কিন্তু শ্রেয়াস কি উপলব্ধি করতে পারলেন যে তিনি এক পরশ পাথর? তার ছোঁয়াতে যে ভাগ্য বদলের একটা সূচনা ঘটে। যেমন ২০১৯ সালে দিল্লি ক্যাপিটালস সাত বছর বাদে উঠেছিল প্লে-অফে শ্রেয়াসের নেতৃত্বে। পরের বছর ফাইনাল খেলে দিল্লি ১৩ মৌসুম অপেক্ষার পর। দলনেতা তখও সেই শ্রেয়াস আইয়ার।
এরপর তিনি গেলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের ডেরায়। সেখানে তিনি হলেন চ্যাম্পিয়ন। কলকাতাকে শিরোপা জেতালেন এক দশকের অপেক্ষা শেষে। আর এবার পাঞ্জাব কিংসের হয়ে মাঠ মাতালেন, দলকে ফাইনালে তুললেন ১১ বছর পর। পাঞ্জাবের প্রথম শিরোপা জয়ের নায়কও তিনি বনে যেতে পারতেন, কিন্তু হল না তা আর শেষ অবধি।
মৌসুম জুড়ে ৬০৪ রান করেছেন নিজে ব্যাট হাতে। ছয়টা হাফসেঞ্চুরিতে লিখেছেন পাঞ্জাবের জয়ের ভাগ্য। প্রথম পর্বে দলকে রেখেছিলেন শীর্ষে, সবার উপরে। কিন্তু অন্তিম লগ্নে সব যেন কর্পূরের মত উবে গেল। হাত ছোঁয়া দূরত্বের শিরোপা এক মুহূর্তের মধ্যে ভ্যানিশ। ওটার মালিক যে এখন অন্য কেউ।
তবে শ্রেয়াসের দৃঢ়চেতা চরিত্র হয়ত তাকে আরও ক্ষুধার্ত করে তুলবে। তিনি আবার ফিরবেন নতুন মিশন নিয়ে। নিস্তব্ধ চোখজোড়া যেন অবিশ্বাস্য আর আক্ষেপের বিষাদসিন্ধু এঁকে যায়। পৃথিবীর নিজ অক্ষের ঘূর্ণন শেষে, আবার না হয় আলো আসবে। ততদিন শ্রেয়াসকে নিতে হবে নি:শ্বাস।