টানা তিনটি রিভার্স সুইপ। থার্ড ম্যান অঞ্চল দিয়ে তিনটি বাউন্ডারি। একটি তো সীমানা পেরিয়েছে বাতাসে ভেসে। কার্যত এসব কিছুই এনামুল হক বিজয়ের এদিনের হাইলাইটস। কিন্তু তা শেষ অবধি স্রেফ ভ্রমের জন্মই দেবে। বিজয় এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ভাল খেলছেন, সেটা অবশ্য বলার অপেক্ষা রাখে না।
কিন্তু সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে মিরপুরে খেলা তার ইনিংসটি নিশ্চিতরুপেই খানিকটা বিরক্তির কারণ হিসেবেই ধরা দিতে পারে অনেকের কাছে। পরিসংখ্যানের খাতায় চোখ বুলালে বেশ মাঝারি মানের ঠিকঠাক ইনিংসই মনে হবে। কেননা প্রায় ১১৫ স্ট্রাইকরেটে ৫৮ বলে ৬৭ রানের ইনিংসটিকে খালি চোখে খারাপ বলবার উপায় নেই।
আবার বিজয়ের স্বপক্ষে যুক্তি দেবে ৫১-৫৪ রানের মধ্যে হারানো দুইটি উইকেট। দ্রুত উইকেট পতনের ফলেই বিজয় খানিকটা অ্যাংকরিং রোল প্লে করেছেন। সেটাই হয়ত ধরে নেওয়া যায়। তবে একজন ওপেনার শেষ অবধি ক্রিজে টিকে থেকে স্রেফ ৬৭টি রান করবেন, তাও আবার ৫৮ বলে!
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের প্রেক্ষাপটে সেটা মেনে নেওয়া দুষ্কর। কেননা শেষ চার বলে তার ব্যাট থেকে আসা তিনটি বাউন্ডারির আগ অবধি তার রান ছিল ৫৫ বলে ৫৩। ৯৬ স্ট্রাইকরেটের ব্যাটিং করে যাচ্ছিলেন তিনি। ইনিংসের শুরু থেকেই এমন স্লথ গতির ইনিংস খেলেছেন বিজয়।
সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্যটি হচ্ছে, বিপিএলের ইতিহাসে অন্যতম স্লথ গতিতে হাফসেঞ্চুরির রেকর্ডেও নিজের নামটি যুক্ত করে ফেলেছেন বিজয়। ৫১ বলে ৫০ রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন এনামুল হক বিজয়। তাতে করে নিশ্চিতরুপেই খুলনা টাইগার্সের সংগ্রহ খানিকটা কমেছে বৈ বাড়েনি।
এনামুলের এই ইনিংসটি নিশ্চিতভাবেই তার পরিসংখ্যানকে সমৃদ্ধ করেছে। এবারের বিপিএলের তৃতীয় সেরা রান সংগ্রাহকে পরিণত হয়েছেন তিনি। তবে পরিসংখ্যানই নিশ্চয়ই শেষ কথা নয়। খুলনা টাইগার্স নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১৫৩ রান নিতে সক্ষম হয়েছে। উইকেট বিবেচনায় অন্তত এই রান যথেষ্ট হওয়ার কথা নয়।
শেষের তিন ওভারে ৫২ রান এসেছে হাবিবুর রহমান সোহান ও বিজয়ের ব্যাট থেকে। তাদের হাতে ছিল আরও সাতটি উইকেট। একজন সেট ব্যাটার হিসেবে বিজয়ের হাতখুলে খেলার কথা এরও বহু আগে থেকে। তবে ১৬-২০ তম ওভারের মাঝে স্রেফ চারটি বাউন্ডারিই মেরেছেন বিজয়। যার তিনটিই তিনি আদায় করেছেন ইনিংসের একেবারে শেষ ওভারে।
সেখানটায় প্রতিপক্ষ বোলার এবং অধিনায়কের গাফিলতির সুযোগটাই নিয়েছেন তিনি। কিন্তু একজন দায়িত্বশীল ব্যাটার হিসেবে আরও খানিকটা আগ্রসী হতেই পারতেন বিজয়। তিনি পুরো ইনিংস জুড়ে সে চেষ্টা করেননি বললেই চলে। এমন ইনিংসগুলোতে দলের উপকারের তুলনায় অপকারই হয় নিশ্চয়ই।