সৌম্যের আউটে মিরপুরে তুলকালাম

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে বোলিংয়ে এসেছেন নাসুম আহমেদ। সেই ওভারের প্রথম বলেই একটা নাসুমকে চার মেরেছেন ঢাকা ডোমিনেটর্সের ব্যাটার সৌম্য সরকার। ফিরে আসার চেষ্টা করছিলেন নাসুম। সেই ওভারেই নাসুমকে সুইপ করতে গিয়ে ঠিক ব্যাটে-বলে করতে পারেননি সৌম্য। সাথে সাথেই এলবিডব্লিউর জন্য আবেদন করেন খুলনা টাইগার্স। আর তাঁদের আবেদনে সাড়াও দিলেন অন ফিল্ড আম্পায়ার।

সাথে সাথেই রিভিউ নিয়ে নিলেন সৌম্য সরকার। তাঁর শরীরী ভাষায় স্পষ্ট যে তিনি আউট হননি। বারবার বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন বলটা আগে তাঁর গ্লাভসে লেগেছে। রিভিউ নেয়ার পর অবশ্য সেটা স্পষ্টই দেখা গেল। বলটা সৌম্যের প্যাডে লাগার আগেই তাঁর গ্লাভস স্পর্শ করে।

তবুও বেশি কয়েকবার, বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল দেখে সেটা দেখছিলেন টিভি আম্পায়ার। কয়েক মিনিট ধরে দেখার পর নিজের সিদ্ধান্ত অন ফিল্ড আম্পায়ারকে জানান তিনি। বল আগে গ্লাভসে লাগার পরেও সৌম্যকে আউট ঘোষণা করলেন আম্পায়ার।

আর তাতেই আপত্তি জানালেন সৌম্য সরকার। এতবার করে এবং এত লম্বা সময় ধরে দেখার পরেও আবার কেন আউট দেয়া হল সেটাই বুঝি জানতে চাইছিলেন এই ব্যাটার। আম্পায়ের এমন অদ্ভুত সিদ্ধান্ত কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না সৌম্য সরকার। এই নিয়ে আম্পায়ারকে কিছু একটা বলতেও দেখা যায় তাঁকে।

ওদিকে স্টেডিয়ামে থাকা দর্শকরাও আম্পায়ারের এমন সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছিলেন না। গ্যালারি থেকে তাঁরাও প্রতিবাদ জানান। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম জুড়ে শুরু হয় উত্তেজনা। বিপিএলে আম্পায়ারিং বিতর্ক যেন শেষ হবার নয়।

তবে এরপরই সৌম্য মাঠে রেখে আবার মিনিট খানেক সময় নেন অন ফিল্ড আম্পায়ার। কথা বলেন থার্ড আম্পায়ারের সাথে। প্রায় এক মিনিটের মত আলোচনা শেষে আবার নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন আম্পায়ার। নট আউট ঘোষণা করা হয় সৌম্য সরকারকে।

এতে স্টেডিয়ামের পরিবেশ কিছুটা ঠাণ্ডা হলেও মেনে নিতে পারছিলেন না খুলনার ক্রিকেটাররা। তাঁরা আবার এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান। মাঠেই আম্পায়ারকে ঘিরে ধরেন খুলনার অধিনায়ক ইয়াসির আলী রাব্বি ও সিনিয়র ক্রিকেটার তামিম ইকবাল।

এই সময় আম্পায়ারের সাথে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করতে দেখা যায় তামিম ইকবালকে। বোঝা যাচ্ছিল তিনি কোনভাবেই পরিবর্তিত এই সিদ্ধান্ত মানতে রাজি নন। আম্পায়ারও কিছু একটা বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন। তবে সেটা মানতে পারেননি তামিম ইকবাল।

সব মিলিয়ে প্রায় কয়েক মিনিটের বিরতির পর আবার মাঠে গড়ায় খেলা। এর আগে ব্যাট হাতে খুব বড় স্কোর করতে পারেনি খুলনা টাইগার্স। ঢাকাকে তাঁর মাত্র ১১৪ রানের টার্গেট দিয়েছিল। সেই লক্ষ্যে ধীর স্থির ভাবেই ব্যাট করছিলেন সৌম্যরা। যদিও শেষ পর্যন্ত ১৬ রান করে ওয়াহাব রিয়াজের বলে আউট হন সৌম্য।

যদিও আম্পায়ারিং নিয়ে বিপিএলের এই বিতর্ক নতুন কিছু নয়। প্রতি আসরেই একাধিকবার আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক হয়। এবারও শুরু থেকে সমালোচনা হচ্ছে টুর্নামেন্টটির আম্পায়ারিং নিয়ে। এর আগে ডিআরএস না থাকা নিয়েও হয়েছে একদফা আলোচনা-সমালোচনা।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link