আগ্রাসনের সঙ্গে থাকি, সমালোচনায় যৌক্তিক থাকি

আগ্রাসনের পথে বিনোদন যেমন বেশি, সফল হলে কার্যকারিতা বেশি, তেমনি ঝুঁকিও প্রবল। এই ঘরানায় খেললে কখনও কখনও এরকম দিন আসবেই যে পাওয়ার প্লেতে ৩-৪ উইকেট পড়ে যাবে। কখনও কখনও অল্প রানে দল গুটিয়ে যাবে। এটাই প্রথম নয়, এটাই নিশ্চিতভাবেই শেষও নয়।

ভাই সকল, এখনই চেঁচামেচি শুরু করবেন না দয়া করে।

আগ্রাসনের পথে বিনোদন যেমন বেশি, সফল হলে কার্যকারিতা বেশি, তেমনি ঝুঁকিও প্রবল। এই ঘরানায় খেললে কখনও কখনও এরকম দিন আসবেই যে পাওয়ার প্লেতে ৩-৪ উইকেট পড়ে যাবে। কখনও কখনও অল্প রানে দল গুটিয়ে যাবে। এটাই প্রথম নয়, এটাই নিশ্চিতভাবেই শেষও নয়।

বরং দল যে সত্যিই এই অ্যাপ্রোচটকে বেছে নিয়েছে এবং মন থেকে রপ্ত করার চেষ্টা করছে, সেটির প্রকাশই এদিনের শুরুর দিকের ব্যাটিংয়ে। লিটন আউট হয়েছেন আলগা বলে। শট খেলার ডেলিভারিই ছিল ওটা, স্রেফ এক্সিকিউশন ঠিকমতো হয়নি। শান্তও শট খেলতে গিয়েই আউট হয়েছেন।

লিটন-শান্ত আউট হওয়ার পর রনি-হৃদয় যেভাবে খেলেছেন, সেটিতেই আরও ফুটে উঠেছে, দলের মানসিকতা ঠিক পথেই আছে। কুঁকড়ে না গিয়ে শট খেলে গেছেন রনি। শট খেলতে গিয়েই আউট হয়েছেন।

হৃদয় আগ্রাসী শট খেলতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে বেঁচে গেছেন অল্পের জন্য। পরের বলে স্লগ করে ছক্কা মেরেছেন। এটাকেই অ্যাটিটিউড বলে। ভয়ডরহীন মানসিকতার যে বুলি, সেটির বাস্তব প্রকাশ একেই বলে।

শট খেলতে গিয়েই তারা আউট হয়েছেন। বলতে পারেন, আগ্রাসন আর সাবধানতার আরেকটু ব্যালান্স, শট সিলেকশনে আরেকটু বোধের ছাপ থাকতে পারত। আরও স্মার্ট ক্রিকেট খেলতে পারত। হ্যাঁ, আইডিয়ালি হয়তো পারত। তবে মনে রাখতে হবে, এই দলটা মাত্রই একটা ঘরানায় খেলা শুরু করেছে এবং রপ্ত করার চেষ্টা করছে।

টানা দুই ম্যাচে দুইশ করেছে বলেই তা রপ্ত করে ফেলেনি। সময় লাগবে। আরও কঠিন প্রতিপক্ষ, কন্ডিশন, পরিস্থিতি আসবে। পুরো রপ্ত করাটা অনেক দূরের পথ এখনও। এই ঘরানার জন্য ক্রিকেটারদের স্কিলের পরিধি আরও বাড়ানো, আরও শানিত করতে হবে। নিজেকে এবং নিজেদের আরও জানতে-বুঝতে হবে। সেটার জন্য সময় লাগবে।

কিন্তু এই পথে সফল হতে হলে সবার আগে মানসিকতা অটুট রাখতে হবে। আরেকটু সাবধানে খেললে হয়তো ১৫০ করা যেত। হয়তো তাতে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে জয়ও ধরা দিত। কিন্তু এই অ্যাপ্রোচে ব্যাটিং উইকেটে বড় মঞ্চে বড় দলের সঙ্গে পারা যাবে না। উইকেট-কন্ডিশন ভিন্ন হলে অন্য কথা।

এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ হলো, পথ সঠিক কি না। মনের নানা কোণে সংশয় দানা বাঁধছে কি না। পথ ঠিক থাকলে এবং সংশয় না থাকলে, ধারাবাহিকতাও একটা সময় আসবে। আরও স্মার্ট ক্রিকেট খেলা, আজকের মতো পরিস্থিতি আরও ভালোভাবে সামাল দিতেও শিখবে। সময়ের সঙ্গে প্রয়োজন বুঝে দলেও টুকটাক পরিবর্তন আসবে।

আপাতত, তারা নিজেদের এক্সপ্রেস করতে থাকুক। ডানা মেলে উড়তে চাচ্ছে, এখনই ছেঁটে দেবেন না দয়া করে।

একটা কথা মাথায় রাখা জরুরি, টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ বছরের পর বছর যে তলানিতে পৌঁছে গিয়েছে, আর নিচে নামার কিছু নেই। ‘তাই বলে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে এই অবস্থা’-এই ধরনের কথায় লাভ নেই।

টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ আগেও আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরেছে, নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরেছে, স্কটল্যান্ডের সঙ্গে দুটি খেলে দুটিতেই হেরেছে, হংকংয়ের কাছে হেরেছে, বিশ্বকাপের পর বিশ্বকাপ মূল পর্বে কোনো ম্যাচ জিততে পারেনি। নতুন করে হারানোর আছে সামান্যই।

কাজেই আমরা অস্থির না হই। এই সময়ের দাবি মিটিয়ে একটা মানসিকতায় দলকে গড়ার চেষ্টা চলছে, একটা ঘরানাকে আপন করার চেষ্টা চলছে। এই চেষ্টার সঙ্গে থাকি, সমালোচনায় যৌক্তিক থাকি।

– ফেসবুক থেকে

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...