অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার যেখানেই যান, ট্রফি যেন তাঁকে ফলো করে। তাঁর কোচিং পোর্টফোলিও কেবল ভারী নয় — ভয়ংকর ভারী। ট্রফি, সাফল্য, র্যাংকিং — সবখানেই তার ছাপ। যেখানে গেছেন, বদলে দিয়েছেন সেই দলের মানচিত্র। কোনো হাইপ নয়, কোনো ক্যামেরার সামনে কথা বলার ঢং নয় — শুধু ফলাফলে ফোকাস করেন জিম্বাবুয়ের এই গ্রেট। নীরব বিপ্লব যাকে বলে।
ইংল্যান্ডের কোচ হয়ে এসেই বদলে দিয়েছিলেন পুরো সিস্টেম। ২০০৯ সালের অ্যাশেজ জয়, ২০১০ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০১০-১১ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অ্যাশেজ দখল করেন। এরপর ২০১২-১৩ সালে ভারতে এসে টেস্ট সিরিজ জয় — এত অর্জন অনেক কোচের আজীবনের স্বপ্ন।
অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার হয়ে উঠেছিলেন ইংল্যান্ডের ঘরের ছেলে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালও খেলিয়েছেন দলকে, আর ইংল্যান্ড উঠেছিল টেস্ট র্যাংকিংয়ের শীর্ষে। ওয়ানডে র্যাংকিংয়েও কিছুদিন ছিল এক নম্বরে। তখনকার ইংল্যান্ড দল — ঠাণ্ডা মাথায় আগুনে ক্রিকেট খেলত। ফ্লাওয়ার ছিলেন সেই আগুনের স্থপতি।
কিন্তু গল্পটা শুধু আন্তর্জাতিক পর্যায়ে থেমে থাকেনি। তিনি যেন ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের ইতিহাসেরও অন্যতম সেরা কোচ। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) বা পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) যেখানে গিয়েছেন, সেখানেই সাফল্য পেয়েছেন।
ফ্র্যাঞ্চাইজির যাত্রায় পূর্ণতা দিল তাঁকে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। আরসিবির মতো ট্রফি-তৃষ্ণার্ত দলকে এনে দিয়েছেন শিরোপা। ১৮ বছর অপেক্ষার পর শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পেল বিরাট কোহলির দল। এর আগে লখনৌ সুপার জায়ান্টসকে টানা দুইবার প্লে-অফে তুলেছেন। মুলতান সুলতান্সের হয়ে জিতেছেন পিএসএলের শিরোপা। এর বাদে শিরোপা জিতেছেন গালফ জায়ান্টস বা ট্রেন্ট রকেটসের হয়েও।
অথচ ফ্লাওয়ারকে ঘিরে কোনো নাটক নেই, কোনো হেডলাইন নেই, কিন্তু তাঁর হয়ে ফলাফল সবসময় গর্জে ওঠে। তিনি যেখানেই যান, সাফল্যও তাঁকে ফলো করে সেখানে গিয়ে হাজির হয়।