সীমান্তের বাইরে বাংলাদেশ ক্রিকেট কি আদৌ আছে? – তামিম ইকবাল খান সাফল্যের যে গল্প শোনালেন তাতে সে কথাটাই স্পষ্ট হয়ে উঠল আরেকবার। মিরপুরের বাঘ, বাইরে বিড়াল—এই চিরচেনা বাক্যটাই কি তাহলে তামিম ইকবালের কণ্ঠেও প্রতিধ্বনিত হলো? কথার মারপ্যাঁচে যতই গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা হোক, বাস্তবতা কিন্তু ধরা পড়ে গেছে। মিরপুরের বাইরে কি বাংলাদেশ আদৌ কোনো শক্তি?
তামিম বললেন, ‘আমরা যা অর্জন করেছি, তা কোনো ট্রফি জয়ের চেয়ে কম নয়।’ বড় কথা, কিন্তু এই অর্জনটা কী? জয়হীন একটা টুর্নামেন্ট? চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে তো জয় ছাড়াই ফিরল বাংলাদেশ। বছরের পর বছর ধরে পরিসংখ্যানের পাতায় পরাজয়ের সংখ্যা যোগ করা? মিরপুরের চার দেওয়ালের বাইরে গেলে দলের অস্তিত্ব খুঁজে না পাওয়া! আইসিসি ইভেন্টে পারফরম্যান্সের ধারের কাছেও থাকে না বাংলাদেশ। কোনো ক্রিকেট পণ্ডিতও বাংলাদেশকে আলোচনার খাতায় রাখেন না।
অবশ্য তামিম বাকি ক্রিকেট পণ্ডিতদের মত নন। বড় গলায় তিনি যুক্তি দিলেন, ‘১০-১৫ বছর আগে দর্শকরা মিরপুরে আসত হারের প্রস্তুতি নিয়ে, এখন জানে যে বাংলাদেশ জিততেও পারে।” কথাটা যতই বাহবা পাওয়ার মতো শোনাক, ভেতরে ভেতরে আসলে লুকিয়ে আছে ‘সম্ভাবনা’ আর ‘সাফল্যের’ মধ্যকার গভীর পার্থক্য। সম্ভাবনা মানেই তো সাফল্য নয়!
সম্ভাবনার গল্প শোনাতে হলে ইতিহাস উল্টে দেখতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসটা কি বলছে? শেষ জয় কবে? হিসাব কষতে কষতে আপনাকে চলে যেতে হবে ২০২৩ সালের নভেম্বরে! তারপর? চার মাসে একটাও ওয়ানডে জয় নেই, একটা আইসিসি ইভেন্ট কেটে গেল পরাজয়ের বোঝা বয়ে!
এটাই অর্জন? এটাই ট্রফি? এই অদেখা ট্রফির খেসারত দিয়ে আবেগের সাগরে ধুকে ধুকে শেষ হচ্ছেন দেশের ক্রিকেট ভক্তরা।
সিনিয়রদের প্রভাব এতটাই গভীর যে দলটা ঠিক মতো দম নিতেও পারছে না। তার পরও এই সিনিয়রদের জায়গা পাকা। এটাই তাদের সবচেয়ে বড় অর্জন! সময়ের নিয়ম বদলায়, কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেটের সিনিয়রদের রাজত্ব বদলায় না।
মিরপুরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ ‘সম্ভাবনার’ কথা বলে। কিন্তু ক্রিকেট তো শুধু মিরপুর নয়, শুধু দেশের মাঠ নয়। সীমান্তের বাইরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অস্তিত্ব কি আদৌ আছে? তামিমরা সেই অস্তিত্ব খুঁজে পাননি, বরং ক্যারিয়ার শেষে অকারণে তৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন!