তামিম ছয় মাসের জন্য টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটা নিয়ে ভাবতে চাননা। তবে তাঁকে নিয়ে অন্যদের ভাবনাটা থামছেই না। এমনকি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও তামিমকে ভাবনার বাইরে রাখা যাচ্ছেনা। এবার বিপিএলের শুরু থেকে যে ছুটে চলেছেন, তামিমের ব্যাট যেন আর থামছেই না। রান পাহাড়ের চূড়ায় উঠেও তামিমের ক্ষুধা যেন মিটছেই না।
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম ব্যাটসম্যান তিনি। এই রায় দেয়ার জন্য ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ হওয়া জরুরি না। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশের ওপেনিংয়ে একমাত্র ভরসা তামিম ইকবাল। এই পুরো সময়টা জুড়ে তাঁর একজন পার্টনার খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে গেছে বাংলাদেশ। তবে এখনো সেই যোগ্য লোকের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এখনো টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভরসার জায়গা এই ওপেনার। তবে গত দুই বছরে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের প্রেক্ষাপটটা বদলেছে। তামিম রান করেছেন এই সময়েও। তবে তাঁর ব্যাটিং করার ধরণ নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের সাথে তামিম আর নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছেন না এমন অভিযোগও আছে।
গতবছর বাংলাদেশের হয়ে কোন টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেননি। তবে এর আগের তিন বছর তামিমের গড় স্ট্রাইকরেট মাত্র ১২০.৮৩। সমস্যাটা ছিল এখানেই। পাওয়ার প্লের সুবিধাটা কাজে লাগাতে পারছিলেন না এই ওপেনার। ফলে ম্যাচের শুরুতেই বাংলাদেশ চাপে পড়ে যেত।
এই বিপিএলের প্রথম দুই ম্যাচেও হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। তবুও দুই ম্যাচেই হেরেছে মিনিস্টার ঢাকা। পরের ম্যাচ গুলোতে অবশ্য তামিম স্ট্রাইকরেট নিয়ে আর প্রশ্ন করার জায়গা রাখেননি। এমনকি সিলেটের বিপক্ষে ঝড়ো এক সেঞ্চুরিও করেছেন। এরপর কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের বিপক্ষে যথাক্রমে ৪৬ ও ৭৩ রানের ইনিংস।
এরই মাঝে বিপিএলের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক হয়ে উঠেছেন তিনি। তবুও তামিম যেন থামতে নারাজ। আজও ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ব্যাট হাতে তামিমের রুদ্রমূর্তি। স্ট্রাইকরেটের সেই সমালোচনাও যেন আর গাঁয়ে মাখতে চাচ্ছেন না এই ব্যাটসম্যান। বিপিএলের এই নয় ম্যাচে এখন পর্যন্ত ব্যাটিং করেছেন ১৩৪.৭২ স্ট্রাইকরেটে।
আজ বরিশালের বিপক্ষে তাঁর ব্যাট থেকে আসলো ৫০ বলে ৬৬ রানের ইনিংস। আজ তামিম ব্যাটিং করেছেন ১৩২.০০ স্ট্রাইকরেটে। ৯ চার ও ১ ছয় দিয়ে সাজিয়েছেন এই ইনিংস। যদিও এই ইনিংসের পরেও খুব একটা ভালো অবস্থায় নেই ঢাকা। রাতের ম্যাচে বরিশালের বিপক্ষে জয় পেতে হলে বোর্ডে আরো কিছু রান জমা করা প্রয়োজন দলটার।
ওদিকে এই ম্যাচের আগেই বিপিএলের রান সংগ্রাহকদের তালিকায় সবার উপরে ছিলেন তামিম ইকবাল। তবে আজ ব্যবধানটা আরো বাড়িয়ে নিলেন। ৯ ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে আসলো ৪০৭ রান। ব্যাটিং করেছেন ৫৮.১৪ গড়ে। এই বিপিএলে একমাত্র তিনিই ৪০০ রান করলেন। এমনকি তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা কলিন ইনগ্রাম তামিমের চেয়ে ৯৮ রান কম করেছেন। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৩০৯ রান।
সবমিলিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তামিমে ব্যাটিং নিয়ে সমালোচনা আছে। বোধকরি তামিম নিজেও সমস্যাটা বোঝেন। সেজন্যই হয়তো নিজেকে এই ফরম্যাটটা থেকে সরিয়ে রেখেছেন। তবে তামিম তাঁকে আলোচনার বাইরেও রাখতে দিচ্ছেন না। এত সমালোচনার মাঝে এখনো তিনিই বাংলাদেশের একমাত্র ওপেনার যার ব্যাটে রানটা আসছে।