যে তামিম অনন্য, স্পর্শের বাইরে

কখনো মাথায় আসে ডান্সিং ডাউন দ্য উইকেটে এসে বোলারকে বেধম পেটানো এক ওপেনার ছবি, কখনো আবার যথেষ্ট স্রেফ একটা কাভার ড্রাইভ। স্মৃতিতে ভাসে ড্যাসিং ওপেনার থেকে পরিণত, পরিপক্ক এক অধিনায়ক হয়ে উঠার গল্পটাও। দেখতে দেখতে তামিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পার করে ফেলেছেন লম্বা একটা সময়। তবে তামিম ইকবাল কখন যে নিজেকে কিংবদন্তির কাতারে নিয়ে গেলেন সেটা কী টের পেলেন? ওয়ানডে ফরম্যাটের এই তামিমকে যে সহজে ছোঁয়া যায়না।

ওয়ানডে ফরম্যাটে প্রায় ১৫ বছরের ক্যারিয়ার তাঁর। পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই তিনি বাংলাদেশের হয়ে ইনিংসটা শুরু করেছেন। ক্যারিয়ারের শুরুতে যে তামিম ছিলেন সেটা এখন আর নেই। নিজের ব্যাটিং সত্বায় পরিবর্তন এনেছেন। আগ্রাসী তামিম গত কয়েকবছরে হয়ে উঠেছেন পরিণত এক ব্যাটসম্যান। ওয়ানডে ফরম্যাটে যার নামের পাশে আছে আট হাজারেরও বেশি রান।

তবে এই দীর্ঘ সময়েও তামিমের একজন যোগ্য সঙ্গী পায়নি বাংলাদেশ। সম্প্রতি লিটন দাস ওয়ানডে ফরম্যাটে তামিমের সাথে নিয়মিত ওপেন করছেন। তবে পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই তামিম একজন যোগ্য সঙ্গীর অভাবে ভুগেছেন। ফলে তাঁকে একপ্রান্ত থেকে দলকে আগলে রাখতে হয়েছে। তা নাহলে হয়তো ওপেনার তামিম ছুঁতে পারতেন আরো অনেক কিছুই।

তবে সেসব আক্ষেপ পিছনে ফেলেই তামিম ছুটেছেন। ওয়ানডে ক্রিকেটে তামিম বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান স্কোরার। তবে তামিম এতেই থামছেন না। প্রতিনিয়িত নিজেকে নিয়ে যাচ্ছেন আরেকটু ধরা ছোয়ার বাইরে। ওয়ানডে ফরম্যাটে বিশ্বের মাত্র নবম ওপেনার হিসেবে আজ ছুঁয়ে ফেললেন আট হাজার রান। যেই তালিকায় আছে শচীন টেন্ডুলকার, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট কিংবা সৌরভ গাঙ্গুলিদের মত নাম।

এছাড়া আজ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে মাঠে নামার আগে খুব একটা ভালো অবস্থায় ছিল না বাংলাদেশ দল। জিম্বাবুয়ের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারায় ক্রিকেটাররা নিশ্চয়ই মানসিক ভাবে খুব একটা সুখকর অবস্থায় ছিলেন না। তবে তামিমরা ওয়ানডে ফরম্যাটে ফিরলেই যেন পালটে যায় দলের চেহার।

এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত দলকে তাঁদের ঘরের মাঠে সিরিজ হারিয়ে এসেছে বাংলাদেশ। ফলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও পরিষ্কার ফেবারিট ছিল বাংলাদেশ। তবুও টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারায় একটা চাপ ছিল। তবে তামিম ইকবাল দলের উপর সেই চাপ পড়তে দেননি একটুও।

ম্যাচের শুরুতেই জিম্বাবুয়ের বোলারদের উপর চেপে বসেছেন এই ওপেনার। অন্য প্রান্তে লিটন একটু ধীরস্থির শুরু করলেও তামিম তা পুষিয়ে দিয়েছেন। আজ দারুণ শুরু করলেও ফিরে গিয়েছেন ৬২ রান করেই। তবে ফেরার আগে ঠিকই ওয়ানডে ফরম্যাটে আট হাজার রানের মাইলফলকটা ছুঁয়ে গিয়েছেন।

এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ থেকেই দারুণ ফর্মে আছেন এই ওপেনার। অধিনায়ক হিসেবে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। শেষ পাঁচ ইনিংসেই তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে তিনটি হাফ সেঞ্চুরি। এরমধ্যে দুইবারই অপরাজিত ছিলেন এই ব্যাটার। ফলে অধিনায়ক ও ব্যাটসম্যান তামিম ছুটেই চলছেন।

ওদিকে আজ তামিম আউট হবার ব্যাটিং লাইন আপের হাল ধরেছিলেন লিটন দাস। ৮৯ বলে ৮১ রানের অসাধারণ এক ইনিংস এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। তবে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠে ছেড়েছেন এই ওপেনার। তবুও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বড় সংগ্রহের পথেই বাংলাদেশ।

 

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link