চোট কাটিয়ে এখনো মাঠে ফিরতে না পারলেও আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলের সাথেই থাকবেন তামিম ইকবাল। ফিট হলে ফিরবেন একাদশেও। পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতে থাকা অভিজ্ঞ এই ওপেনারকে বিশ্বকাপের আগে পুরোপুরি চোট মুক্ত করতে তাই ডাক্তার ও ফিজিওর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন নির্বাচকরা।
মিরপুরে গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে আজ (২১ আগস্ট) এই সব কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান। এই বোর্ড কর্মকর্তা আশাবাদী বিশ্বকাপের আগেই চোট কাটিয়ে উঠতে পারবেন তামিম। আর এজন্য সজাগ রয়েছেন সবাই।
আকরাম বলেন, ‘তামিম দেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। এটা নিয়ে তো কোনো প্রশ্নই আসে না। ও দলের সাথে থাকবে। যদি ফিট থাকে তাহলে তো খেলবেই। ওর সমস্যা চোট। সেটা নিয়ে ডাক্তার এবং ফিজিওর সাথে নির্বাচকরা নিয়মিত কথা বলছে। এটা নিয়ে সবাই সজাগ আছে। আশা করছি ফিট হয়ে যাবে।’
অভিজ্ঞ এই ওপেনার দেশের হয়ে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন দেশের মাটিতে গত বছরের মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এরপর করোনার কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে ছিল বাংলাদেশ। করোনা পরবর্তী
নিউজিল্যান্ড সফরে ওয়ানডে সিরিজ খেললেও পারিবারিক কারণে তামিম খেলেননি টি-টোয়েন্টি সিরিজে।
নিউজিল্যান্ড সিরিজ শেষে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট এবং ওয়ানডে ও জিম্বাবুয়ে সফরে গিয়ে টেস্ট এবং ওয়ানডে সিরিজ খেললেও চোটের কারণে তামিম খেলতে পারেননি টি-টোয়েন্টি সিরিজে। চলতি মাসের শুরুর দিকে অনুষ্ঠিত হওয়া অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ছিলেন না অভিজ্ঞ এই ওপেনার।
তামিম নেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজেও। এই সিরিজ শেষে বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের আর কোন খেলাও নেই। তাই স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে সরাসরি বিশ্বকাপ দিয়ে তামিমের টি-টোয়েন্টিতে ফেরার যৌক্তিকতা নিয়ে। বিশ্বকাপের আগে কোন ম্যাচ না খেলে বড় মঞ্চে পারফরম করতে পারবেন তো তিনি?
তবে অভিজ্ঞ হওয়াতে তামিমকে নিয়ে কোন শঙ্কা নেই আকরাম খানের। আকরাম খান বিশ্বাস করেন ঠিকই পারফরম্যান্স করবেন তামিম। তিনি বলেন, ‘না, আমি সংশয় দেখছি না। যেহেতু প্রতিষ্ঠিত খেলোয়াড় ও খুব ভালো খেলোয়াড়। ও ফিট থাকলে কোনো চিন্তার বিষয় নয়। ও থাকলে আমাদের জন্য তো ভালো।’
বিশ্বকাপের জন্য আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করা হতে পারে। তবে করোনা ও চোটের কারণে বিশ্বকাপের স্কোয়াড আরো বড় হতে পারে। টিম ম্যানেজমেন্টের চাওয়া অনুযায়ী থাকতে পারেন অতিরিক্ত কয়েক জন ক্রিকেটার। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) শর্ত অনুযায়ী সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত ক্রিকেটারদের খরচ বহন করতে হবে বোর্ডকে।
আকরাম খান জানিয়েছেন এটা নিয়ে আপত্তি নেই বোর্ডের। নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্ট চাইলে ব্যবস্থা করবেন তারা। তিনি বলেন, ‘নির্বাচক প্যানেল বা টিম ম্যানেজমেন্ট যদি অতিরিক্ত এক দুই জন নিয়ে যেতে চায় এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা এটা সব সময় করে এসেছি, ভবিষ্যতেও করব।’
আকরাম খান কথা বলেছেন বিশ্বকাপের আগে দেশের মাটিতে খেলা উইকেট নিয়েও। মন্থর ও টার্নিং উইকেট বানিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজেও হয়তো এমন উইকেটেই খেলবে বাংলাদেশ।
কিন্তু বিশ্বকাপের উইকেট থাকে সাধারণতো ফ্ল্যাট। যেখানে রান হয় প্রচুর। তাই প্রশ্ন উঠেছে বিশ্বকাপের আগে এমন উইকেটে খেলার যৌক্তিকতা নিয়ে। অনেকে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছেন বিশ্বকাপের আগে ফ্ল্যাট উইকেটে খেলা উচিত বাংলাদেশের। তবে আকরাম খান জানিয়েছেন এমন উইকেট চেয়ে নেয়নি দল; শুধু ঘরের মাঠের সুবিধা কাজে লাগিয়েছে বাংলাদেশ।
আকরাম খান বলেন, ‘আমরা বলি না আমাদের এমন উইকেট দাও। উইকেট যেমনই হয় আমরা সেখানেই খেলি। এখানে (মিরপুর) হোম অ্যাডভান্টেজ পাওয়া যায়। যে দেশেই খেলা হোক, হোম অ্যাডভান্টেজ সেই দেশের খেলোয়াড়রা নেয়। বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা এই উইকেটে বেশি খেলেছে, অ্যাডভান্টেজ তো থাকবেই।’
জানিয়ে রাখা ভালো, চলতি বছরের অক্টোবর মাসের ১৭ তারিখ থেকে মাঠে গড়াবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসর। এবারের আসর অনুষ্ঠিত হবে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে। মূল পর্বে ১২ দলের লড়াই শেষে বিশ্বকাপ শেষ হবে ১৪ নভেম্বর।