বিদায়ের মঞ্চ পাবেন কি মালিক!

শোয়েব মালিক আগেই জানিয়ে রেখেছেন, এই বিশ্বকাপটা খেলেই তিনি বিদায় জানাবেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে। এখন প্রশ্ন হল সেই বিদায়ের মঞ্চটা কি তিনি পাবেন?

সবশেষ গেলো বছর ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডের মাটিতে টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন পাকিস্তানের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান শোয়েব মালিক। তিন ম্যাচ সিরিজে এক ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে করেছিলেন ১১ বলে ১৪ রান। এরপর পাকিস্তান দলে আর দেখা যায়নি এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকে।

দুই মাস বাদেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এর আগে এ বছর কোনো সিরিজেই সুযোগ পাননি তিনি। এটাও নিশ্চিত যে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরিকল্পনায় নেই তিনি। এই অনিশ্চয়তাও পরিষ্কার হয়ে যায় পাকিস্তান ক্রিকেটের প্রধান নির্বাচক মোহাম্মদ ওয়াসিমের কথায়!

শোয়েব মালিককে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে চেয়েছিলেন বর্তমান পাকিস্তান দলের অধিনায়ক বাবর আজম। বাবরের মতে মিডল অর্ডারে শোয়েবের অভিজ্ঞতা দলকে আরো শক্তিশালী করবে। তবে সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে ওয়াসিম জানান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরিকল্পনায় নেই শোয়েব। মূলত শোয়েব মালিকের বয়সের কথা মাথায় রেখেই তাকে দলে বিবেচনা করতে চান না পিসিবি। তাই বাবর আজমের এই অনুরোধ কানে নেয়নি পিসিবি। এমনকি বাবরের কথার জবাবও আর দেননি ওয়াসিম।

সবশেষ পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) ৩৫৪ রান করেন মালিক; যা কিনা টুর্নামেন্টের চতুর্থ সর্বোচ্চ। এছাড়া সম্প্রতি কাশ্মির প্রিমিয়ার লিগে (কেপিএল) সাত ম্যাচে ২৪০ রান করেন তিনি। বয়স বিবেচনায় মালিককে দলে নিয়ে না চাইলেও তার পারফরম্যান্স বলে ভিন্ন কথা।

গত পাঁচ বছরে মালিকের টি-টোয়েন্টির পারফরম্যান্স চোখ ধাঁধাঁনো। গেলো পাঁচ বছরে ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে তাঁর গড় স্ট্রাইক রেট ১৪২ এর উপরে! এছাড়া শেষ পাঁচ বছরে তার ব্যাটিং গড় প্রায় ৪৭! সবশেষ ২০২০ সালে ২ ম্যাচে করেছেন ৭৫ রান। তবুও নির্বাচকদের মনে জায়গা করে নিতে পারেননি শোয়েব মালিক।

চলতি বছর টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের হয়ে বাবর আজম এবং মোহাম্মদ রিজওয়ান ছাড়া শুধুমাত্র ফখর জামানই ফিফটি করেছেন। ওপেনিং জুটি দ্রুত আউট হলেই হুড়মুড়িয়ে ধসে পড়ে মিডল অর্ডার। এমন অবস্থায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভঙ্গুর মিডল অর্ডার নিয়ে যাওয়াটা দলের জন্য মোটেও ভালো সিদ্ধান্ত নয়।

আরব আমিরাতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২৬ ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে মালিকের। এমনকি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ (১১৬) খেলা তিনজনের একজন হলেন মালিক। সব মিলিয়ে দলের এমন অবস্থায় মালিককে ছাড়া বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণা হটকারী সিদ্ধান্তই হবে বটে।

ওপেনিংয়ে বাবর আজম এবং মোহাম্মদ রিজওয়ান ছাড়া পুরো ব্যাটিং লাইনআপে ধারাবাহিক ফর্মে নেই কেউই। ওপেনাররা ব্যর্থ হলে দলের হাল ধরতে অভিজ্ঞ মোহাম্মদ হাফিজ এবং শোয়েব মালিককেই দলে চাইছেন পাকিস্তানি সমর্থকদের একাংশ।

তবে আপাতত সেই সম্ভাবনা নেই সেটা ও এখন নিশ্চিত। ৩৯ বছর বয়সী শোয়েব মালিক তাহলে ক্যারিয়ারের শেষটা দেখেই ফেলেছেন? ২০ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দাপিয়ে বেড়ানো অভিজ্ঞতায় ঠাসা মালিককে ছাড়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যাওয়াটা পাকিস্তানের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে না তো?

১১৬ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৩১ গড়ে ৮ ফিফটিতে ২৩৩৫ রান করেছেন শোয়েব মালিক। ১২৪ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করা শোয়েব মালিক হয়তো বিশ্বকাপে পাকিস্তানের জন্য মিডল অর্ডারে হতে পারতেন  দলের অন্যতম ভরসা।

শোয়েব মালিক আগেই জানিয়ে রেখেছেন, এই বিশ্বকাপটা খেলেই তিনি বিদায় জানাবেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে। এখন প্রশ্ন হল সেই বিদায়ের মঞ্চটা কি তিনি পাবেন?

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...