কিংবদন্তি ম্যানুয়াল নয়ার অবসরে গেলেন। স্বভাবতই দায়িত্ব পাবার কথা বার্সেলোনা আর জার্মান ফ্যান দের বহু প্রতীক্ষিত মার্ক আন্দ্রে টার স্টেগানের। তবে জাতীয় গোলবার যেন তাঁর ভাগ্যেই সইল না। বাধ সাধলো এবার ইনজুরি। প্যাটেলা টেন্ডনের ইনজুরিতে পুরো মৌসুমটাই মাটি ৩২ বছর বয়সী এই গোলরক্ষকের। সেক্ষেত্রে জার্মানদের ভাবতে হবে বিকল্পের কথা।
বিকল্পের কথা ভাবলে প্রথমেই নাম আসে অলিভার বাউম্যানের। গত ইউরোতেও নয়ার আর টার স্টেগানের পর তৃতীয় কিপার হিসেবে দলে ছিলেন টিএসজি হফেনহাইম দলের এই গোলরক্ষক। চলতি মৌসুমেও বুন্দেসলিগায় তাঁর সময়টা ভালই যাচ্ছে। যেখানে ৫২ শতাংশ শটই থামানে সার্থক হয়েছেন ৩৪ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক। তবে নেই কোনো ক্লিন শিট। ২২ সালের এক সাক্ষাতকারে এও জানিয়েছেন যে মূল একাদশে অভিষেকের জন্য এখনও মুখিয়ে আছেন তিনি।
বাউম্যানের পর কারও কথা উল্লেখ করলে তিনি হবেন আলেক্সান্ডার ন্যুবেল। এফসি বায়ার্ন মিউনিখের এই গোল রক্ষক লোনে আছেন ভিএফবি স্টাটগার্টে। ২৭ বছর বয়েসী এই গোলরক্ষক এই সিজনে প্রতি ৯০ মিনিটে কন্সিড করেছেন ১.৭৫ টি। ম্যাচ প্রতি ৬৩ শতাংশ শট সেভ করেছেন তিনি।
মূল দল বায়ার্ন হওয়াতে অনেকেই তাঁকে নয়্যারের উত্তরসূরি বিবেচনা করছেন। এই দুই ক্লাবের বাইরেও তাঁর শালকে আর মোনাকোতে খেলারও অভিজ্ঞতা আছে। এর বাইরেও তাঁর বীরত্বের ১১ সেভের জোড়েই স্টাটগার্ট দল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ নিশ্চিত করে। এসব কিছুর বাইরেও জাতীয় দলের প্রভিশনাল দলে তাঁকে নেয়া হয় ফোর্থ চয়েজ গোলরক্ষক হিসেবে।
বাউম্যান বা ন্যুবেল ছাড়াও জার্মান দলের আরেক বিকল্প হতে পারেন বার্ন্ড লেনো। ক্লাব ক্যারিয়ারের শুরুটা তাঁর ভিএফবি স্টাটগার্টের দ্বিতীয় দলে। তবে আলো ছড়ান লেভারকুজেন জার্সিতে। যেখানে ৩০৪ এপিয়ারেন্সে তাঁর ক্লিন শিট ১০০ টি। এছাড়াও তিনি আর্সেনাল দলে ১২৫ খেলায় রেখেছেন ৩৭ ক্লিন শিট। বর্তমান ক্লাব ফুলহামেও তাঁর আছে ১৯ টি ক্লিন শিট। তবে একটা দিকে তাঁকে আগের দুই গোলরক্ষকের থেকে এগিয়ে রাখা যায়। জাতীয় দলের জার্সিতে তাঁর নামের পাশে আছে ৯ ম্যাচে তিন ক্লিনশিট। ২০১৬ সালে অভিষেক হয় তাঁর।
অভিজ্ঞ কিপারদের মাঝে আরও এক কিপারকে বিবেচনায় নেয়া যেতে পারে। তিনি হচ্ছেন কেভিন ট্র্যাপ। বর্তমানে তিনি আইনট্র্যাক্ট ফ্রাংকফুট দলের অধিনায়ক। এছাড়াও কিছুদিন খেলেছেন পিএসজি দলে। দুই দল মিলে খেলেছেন ৪৪২ ম্যাচ যাতে তাঁর আছে ১২৮ টি ক্লিনশিট। এর বাইরে ২০১৭ সালে অভিষেকের পর জার্মান জার্সিতে তাঁর রয়েছে ৯ ম্যাচে দুই ক্লিন শিট।
এতক্ষণ তো সব অভিজ্ঞ গোলরক্ষণ বিকল্প নিয়ে কথা বললাম। এবার তাহলে আসি তরুণ গোলরক্ষকদের দিকে। এস সি ফ্রাইবার্গ দলের বাইশ বছর বয়সী গোলরক্ষক নোয়া আতুবলু ।বেশ ভাল পারফর্ম করছেন বুন্দেসলিগাতে। ৫১ ম্যাচে তাঁর ক্লিনশিট ১৭ টি। এর বাইরে অনুর্ধ্ব-২১ জার্মানি জার্সিতে খেলেছেন ২৩ সালের ইউএফা ইউরো। নাইজেরিয়ান বংশোদ্ভূত আতুবলু এর আগে জার্মান দলের হয়েই অনূর্ধ্ব-১৪ এবং ১৭ ও খেলেছেন।
তবে অবসরের পরেও জার্মান শিবিরে চলছে গুঞ্জন। এখনও জাতীয় দলের দোর খোলা ৩৮ বছর বয়সী নয়্যারের। তিনি বলেন, ‘শারীরিক ভাবে আমি বেশ ভাল অনুভব করছি। বিশেষ করে ২৬ সালের ইউএসে,কানাডা ও মেক্সিকো বিশ্বকাপকেও আমি বেশ আবেদনময় মনে করি।’ সেক্ষেত্রে জাতীয় দলে তাঁর ডাক পরলে ফিরিয়ে দেয়াটা বেশ কঠিন হবে বিশ্বকাপজয়ী এই গোলরক্ষকের।
সামনেই ২৬ বিশ্বকাপের ইউরোপ অঞ্চলের কোয়ালিফায়ার। ন্যাগলেসম্যানের হাতে রয়েছে অনেকগুলো বিকল্প। তাঁর মধ্য থেকে কে হবেন ভবিষ্যত জার্মান গোল বারের প্রহর? সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে সময়ের অপেক্ষা করার বিকল্প নেই।