গোধূলি লগ্নের দূর্ভাগা এক্সপ্রেস

২০১১ বিশ্বকাপের কথা, নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল পরাক্রমশালী পাকিস্তান। আগে ব্যাটিং করতে নামা কিউইরা শুরুতেই হারান ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে, পাওয়ার প্লের পরেই ফিরে যান আরেক ব্যাটার জেমি হাউ। ফলে চাপে পড়ে যায় দলটি, সেই চাপ আরো বাড়ানোর জন্য অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি বোলিংয়ে নিয়ে আসেন নিজের সেরা বোলার, শোয়েব আখতারকে।

নিজের কাজটা ভালোভাবেই করেছেন শোয়েব আখতার, রস টেইলরকে বাধ্য করেছিলেন ক্যাচ দিতে। আউটসুইং করে বেরিয়ে যাওয়া বলটা টেইলরের ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটরক্ষক কামরান আকমলের দিকে ধেয়ে আসে।

কিন্তু, পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক প্রথমে ক্যাচ ধরার চেষ্টা করলেও পরে দাঁড়িয়ে যান, স্লিপে থাকা ইউনুস খানও আকমলকে জায়গা দিতে সরে দাঁড়ান – সেই সুযোগে দুজনের মাঝখান দিয়ে বল চলে যায় সীমানা দড়ির দিকে।

এক বল পরে আবারো কিউই ব্যাটার ক্যাচ দেন উইকেটের পিছনে। এবার বলটা ঠিকঠাক গ্লাভসবন্দী করলেও পরক্ষণেই কামরান আকমলের হাত ফসকে বেরিয়ে যায় সেটি।

দুইবার জীবন পাওয়া রস টেইলর সেদিন তাণ্ডব চালিয়েছিলেন, ইনিংসের শেষপর্যন্ত অপরাজিত থেকে ১২৪ বলে করেছিলেন ১৩১ রান। ম্যাচটা নিউজিল্যান্ড জিতে নিয়েছিল ১১০ রানের বিশাল ব্যবধানে, স্বাভাবিকভাবেই ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছিলেন ব্ল্যাক ক্যাপ তারকা।

বড় পরাজয়ে বিস্মিত পাকিস্তান ম্যানেজম্যান্টের রোষাণলে অবশ্য কামরান আকমল পড়েননি। বরং নয় ওভারে ৭০ রান খরচ করা শোয়েব আখতারকে পরের ম্যাচে সাইড বেঞ্চে রেখেই একাদশ সাজায় তাঁরা। শুধু পরের ম্যাচেই টুর্নামেন্টের বাকি অংশ আর মাঠে নামা হয়নি তাঁর। অথচ দুই দু’টি ক্যাচ মিস করা কামরান ঠিকই খেলেছেন বাকি সব ম্যাচ।

বিশ্বকাপ শেষে অবশ্য অবসর নিয়ে নিয়েছিলেন শোয়েব আক্তার, আর কখনোই পাকিস্তানের সবুজ জার্সি গায়ে জড়ানো হয়নি তাঁর। তাই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ম্যাচটাই এই পেসারের শেষ ম্যাচ হয়ে আছে; বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের শেষে এসে কি অবহেলার মধ্য দিয়েই যেতে হয়েছে তাঁকে; ভাগ্য ছাড়া আর কাকেই বা দোষ দিবেন রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link