আইপিএলে দামী ক্রিকেটার মানেই ‘দামী’ নয়!

ফুটবলের ট্রান্সফার ফি নিয়ে ক্রীড়ামোদীদের আগ্রহের জায়গাটা থাকে গোটা বছর জুড়েই। সাম্প্রতিক বছর গুলোতে ক্রিকেটে সে জায়গাই যেন নিতে যাচ্ছে আইপিএলের নিলাম। অঙ্ক যত বেশি, প্রত্যাশার চাপও ঠিক ততটাই। তবে আইপিএলের দামী ক্রিকেটাররা কি আসলেও আসরের 'দামী' ক্রিকেটার হতে পারেন? ইতিহাস অবশ্য মিশ্র তথ্য দিচ্ছে। 

ফুটবলের ট্রান্সফার ফি নিয়ে ক্রীড়ামোদীদের আগ্রহের জায়গাটা থাকে গোটা বছর জুড়েই। সাম্প্রতিক বছর গুলোতে ক্রিকেটে সে জায়গাই যেন নিতে যাচ্ছে আইপিএলের নিলাম। অঙ্ক যত বেশি, প্রত্যাশার চাপও ঠিক ততটাই। তবে আইপিএলের দামী ক্রিকেটাররা কি আসলেও আসরের ‘দামী’ ক্রিকেটার হতে পারেন? ইতিহাস অবশ্য মিশ্র তথ্য দিচ্ছে।

এই যেমন ২০২০ আইপিএলের সবচেয়ে দামী ক্রিকেটার প্যাট কামিন্সের কথাই টেনে আনা যেতে পারে। সাড়ে ১৫ কোটি রুপিতে বলিউড কিংবদন্তি শাহরুখ খানের ফ্র্যাঞ্চাইজি কলকাতা নাইট রাউডার্সে যাওয়ার পর যে রকম পারফরম্যান্স ছিল অস্ট্রেলিয়ান ফাস্ট বোলারের, তাতে তাঁকে কোনো মতে গড়পড়তা তকমা দেওয়া যায়।

পেসার কামিন্সের ওপরই কলকাতার ভরসা বেশি ছিল। কিন্তু বোলার হয়েও প্রথম ৫ ম্যাচে সাড়ে ১৫ কোটির কামিন্স ছিলেন উইকেটশূন্য। যদিও দিল্লী ক্যাপিটালসের বিপক্ষে ১৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বেতনের প্রতি সুবিচার করেছিলেন।

এরপর একটি ম্যাচে উইকেটশূন্য থাকার পর চেন্নাইয়ের বিপক্ষে নিয়েছিলেন আরও ২ উইকেট। সর্বসাকূল্যে ১৩ ম্যাচে তাঁর উইকেট ৮টি। ব্যাট হাতে অবশ্য মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের বিপক্ষে অপরাজিত ৫৩ রানের ইনিংস তাঁর মুখ রক্ষা করেছিল। কিন্তু সে আসরের সবচেয়ে দামী ক্রিকেটারটি আদতে ফ্লপই ছিলেন।

কামিন্সের মতো ২০২০ আইপিএলটা স্মৃতিপট থেকে মুছে ফেলতে চাইবেন অস্ট্রেলিয়ার তারকা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও। ১০.৭ কোটি রুপিতে দলে নিয়েছিল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। ম্যাক্সওয়েলকে নিয়ে তাদের প্রত্যাশা ছিল আকাশসম। কিন্তু বিধি বাম! ম্যাক্সওয়েল সে আসরে বলার মতো তেমন কিছুই করতে পারেননি।  ১৩ ইনিংসে মোটে ১০৮ রান করেছিলেন তিনি।

এ তো গেল পুরনো আসরের কথা। সবশেষ আইপিএলের সবচেয়ে দামী তারকা ছিলেন স্যাম কারেন। ১৮ কোটি ৫০ লক্ষ রুপির রেকর্ড মূল্যে তাঁকে দলে নিয়েছিল পাঞ্জাব কিংস। কিন্তু এ আসরে ব্যাট হাতে ১ ফিফটিতে ২৭৬ রান করলেও বল হাতে ১৪ ম্যাচে ১০ উইকেট নিতে পেরেছিলেন এ ইংলিশ ক্রিকেটার।

স্যাম কারেন তবুও অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্স করেছিলেন। তবে তাঁর আগে যিনি আইপিএলের দামী ক্রিকেটার ছিলেন, সেই ক্রিস মরিসও দামী ক্রিকেটারের ছাপ রাখতে পারেননি। ২০২১ আইপিএলের নিলামে ১৬.২৫ কোটি দিয়ে ক্রিস মরিসকে কিনেছিল রাজস্থান রয়্যালস। তবে সে আসরে বল হাতে ১৫ উইকেট নিলেও বেশ খরুচে ছিলেন তিনি।

২০২১ আইপিএলে তাঁর ইকোনমি রেট ছিল ৯.১৭। আর ব্যাট হাতে ১১ ইনিংসে মোটে ৬৭ রান যোগ করতে পেরেছিলেন প্রোটিয়া এ ক্রিকেটার। তবে সবচাইতে বিব্রতকর তথ্য হলো, ওই আসরের সবচেয়ে দামী ক্রিকেটার ক্রিস মরিস এরপর আর আইপিএলেই খেলার সুযোগ পাননি।

২০২৩ আইপিএলে রেকর্ড ২৪.৭৫ কোটি রুপিতে মিশেল স্টার্ককে দলে ভিড়িয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। সাম্প্রতিক আসরগুলোর দামী ক্রিকেটাররা যে আভাস দিচ্ছে, এই চিত্র বদলানোর দায়িত্ব থাকছে অজি এই পেসারের উপর।

স্টার্ক পারবেন কি পারবেন না, তা সময়ই বলে দিবে। তবে এ কথা এখন প্রমাণিতই বটে, আইপিএলে দামী ক্রিকেটার মানেই ‘দামী’ নয়। বরং ফ্লপ হওয়ারও আশঙ্কা থাকে প্রবল।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...