আফগানিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচটাতে একেবারে পাত্তাই পায়নি শ্রীলঙ্কা। এশিয়া কাপে উড়ন্ত শুরু পেয়েছিল আফগানরা। এবার সুপার ফোরেও প্রথম ম্যাচটা আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মধ্যেই। দুই ম্যাচেই জিতে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে আফগানিস্তান। আবার বাংলাদেশকে হারিয়ে লঙ্কানরা মোমেন্টামটা খুঁজে পেয়েছিল। হ্যাঁ, যতই সেই জয়ে ভাগ্যের ছোয়া থাকুক না কেন।
ফলে প্রথমবারের মত এবার আর একতরফা ম্যাচ নয়। আজ লড়াইটা হয়েছে সমানে সমানে। শুরুতে অবশ্য সেদিনের মেজাজেই ব্যাট করতে নেমেছিল আফগানিস্তান। শারজাহ’র উইকেটে ঝড় তুলেন আফগান ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ। তাঁর ৪৫ বলে ৮৪ রানের ইনিংসে স্কোর বোর্ডে বড় সংগ্রহ আফগানিস্তানের।
শারজাহ’র মাঠটা ছোট হলেও দুবাইয়ের মত অতটা ব্যাটিং সহায়ক নয়। ফলে ১৭৬ রানের টার্গেট লংকানদের জন্য সহজ ছিল না। তবে টার্গেট দেখে ভরকে যাননি লংকান ব্যাটাররা। বরং ম্যাচটাকে যতটা সম্ভব গভীরে নিয়ে যাবার চেষ্টা করেছেন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। কুশাল মেন্ডিসরা ভিত্তিটা গড়ে দিয়েছেন।
এরপর সেই ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে চাবুক চালিয়েছেন ভানুকা রাজাপাকশে কিংবা ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গারা। মুজিবুর রহমান, রাশিদ খানদের নিয়ে গড়া ভয়ংকর বোলিং লাইন আপটাও যেন অসহায় হয়ে উঠলো। অবশ্য ফিল্ডিংটাও বেশ ভুগিয়েছে আফগানদের। সহজ দুটি ক্যাচ ছেড়ে দিয়েছে তাঁরা। তবুও বোর্ডে ১৭৫ রান থাকায় লড়াইটা শেষ অবধিই গড়িয়েছে।
আফগানিস্তানের মূল বোলার রাশিদ খান আজ তফাতটা গড়ে দিতে পারেননি। চার ওভার বোলিং করে তিনি খরচ করেছেন ৩৯ রান। উইকেটে পেয়েছেন মাত্র একটি। রাশিদ খানকে রুখে দিতে পারাতেই কাজটা আরো সহজ হয়েছে শ্রীলঙ্কার জন্য। এছাড়া ইনিংসের ১৬ তম ওভারেই মূলত ম্যাচটা নিজেদের দিকে করে নেয় তাঁরা।
এছাড়া আগের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৮৪ রান তাড়া করার আত্মবিশ্বাসটা তো ছিলই। সেটাই বোধহয় আজ কাজে দিল আফগানিস্তানের বিপক্ষে। আফগানিস্তানের দেয়া ১৭৬ রানের টার্গেটটা তাড়া পার করে ফেললো চার উইকেট হাতে রেখেই। ফলে প্রথম ম্যাচের প্রতিশোধটাও খুব ভালো করেই নিল লিংকনরা।
টানা দুই ম্যাচ জিতে এখন এশিয়া কাপে নিজেদের উপস্থিতিটা বেশ ভালো ভাবেই বোঝাচ্ছে দাসুন শানাকার দল। অথচ এশিয়া কাপের শুরুটা একেবারেই ভালো হয়নি তাঁদের। প্রথম ম্যাচে অমন ভাবে হারের পর আবার ঘুড়ে দাড়ানোর সাহসটা দেখিয়েছে।
শ্রীলঙ্কার বোলিং লাইন আপটা এখন বেশ শক্তিশালী। তবে এবার এশিয়া কাপে তাঁদের ব্যাটসম্যানরাও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মেজাজটা ভালো ভাবেই দেখাচ্ছে। বড় আসরে চাপের মুহূর্তেও ভেঙে না পড়ে সাহসটা দেখাচ্ছেন।
সেজন্যই তলানিতে থাকা আত্মবিশ্বাস নিয়েও এভাবে ফিরতে পারলো দলটা। এমনকি শেষ দুই ম্যাচেই তাঁরা রীতিমত রেকর্ড গড়ে জিতেছে। এশিয়া কাপে ১৮৪ কিংবা ১৭৬ রানের টার্গেট চেজ করে আর কেউ জিতেনি। ফলে সর্বোচ্চ দুটি রান তাড়ার রেকর্ডই এখন শ্রীলঙ্কার দখলে। আবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১৭৬ রান তাড়া করে জেতাটা নতুন রেকর্ড। সবমিলিয়ে লংকান ক্রিকেটাররা যেন তাঁদের হারানো সাহসটা খুঁজে পেয়েছেন।