সিক্সার বাবু বিস্ময়

লোকে মনে রাখে ‘নেতিবাচক’ কারণেই। যে রেকর্ডটা ভুলে যেতে চাইবেন বাবু নিজেও। শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামেই এক ওভারে ৩৯ রান দেওয়ার বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা হয়েছিল তাঁর, শেখ জামালের হয়ে ব্যাটিংয়ে ছিলেন তখন জিম্বাবুয়ের এল্টন চিগুম্বুরা। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সবচেয়ে খরুচে ওভারের রেকর্ড তখন সেটা। 

খালি চোখে আসলে তাঁকে গড়পরতাই মনে হবে। সেটা খুব একটা ভুলও নয়। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে খেলছেন ঘরোয়া ক্রিকেট। সেখানে অর্জন বলতে সর্বসাকুল্যে শ দুয়েক উইকেট। ফলে, আলাউদ্দিন বাবুকে নিয়ে খুব একটা আলোচনার সুযোগই নেই।

বাবুকে অবশ্য লোকে মনে রাখে ‘নেতিবাচক’ কারণেই। যে রেকর্ডটা ভুলে যেতে চাইবেন বাবু নিজেও। শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামেই এক ওভারে ৩৯ রান দেওয়ার বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা হয়েছিল তাঁর, শেখ জামালের হয়ে ব্যাটিংয়ে ছিলেন তখন জিম্বাবুয়ের এল্টন চিগুম্বুরা। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সবচেয়ে খরুচে ওভারের রেকর্ড তখন সেটা।

তবে, কিছু ইতিবাচক আলোচনাও করা যেতে পারে তাঁকে নিয়ে। এই মিরপুরেই হ্যাটট্রিক আছে তাঁর। ২০২১ সালে  ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন তিনি। তাঁর তিন শিকার ছিল – মুক্তার আলী, সোহাগ গাজী ও নাবিল সামাদ।

এবার অবশ্য সেই ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষেই ঝড়টা তুললেন তিনি। তবে, ব্যাটার হিসেবে – রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেটা ক্লাবের হয়ে। আলাউদ্দিন বাবুর ব্যাটিংটা আসলে সত্যিই কিছুটা আলোচনার দাবি রাখে।

রংপুরের এই ক্রিকেটারের ব্যাটিং কখনও কখনও এতটাই দানবীয় হয়ে ওঠে যে সেটা চোখ কপালে তুলতে বাধ্য করে। এই যেমন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগেই তিনি এক বিস্ময় রচনা করলেন। লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে ৪৫ বলে করলেন ৮১ রান। স্ট্রাইক রেট ১৮০! সেখানে চারটি বাউন্ডারির সাথে ছক্কাই হাঁকালেন সাতটা।

ছক্কা হাঁকানোয় আসলে বাবু বরাবরই বেশ পারদর্শী। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও (বিপিএল) তিনি নিজের এই দক্ষতার পরিচয়টা দিয়েছিলেন। ২০২১-২২ মৌসুমে তিনি ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক এই টি-টোয়েন্টি লিগে রান তুলেছিলেন ১৬৭.৫৬ স্ট্রাইক রেটে। সেই বিপিএলে সিলেট ফ্র্যাঞ্চাইজি বারবার ব্যর্থ হলেও শেষের দিকে ব্যাট হাতে নিয়ম করেই প্রায় ঝড় তুলতেন বাবু।

এমন কি সব রকম টি-টোয়েন্টিতেও তাঁর স্ট্রাইক রেটটা বেশ আদর্শ – ১৩২-এর ওপরে। জাতীয় দলে টি-টোয়েন্টিতে টিম ম্যানেজমেন্ট শেষের দিকে একজন স্লগারের অভাব বোধ করে। আর এমন কোনো বোলারও এখন বাংলাদেশের সেট আপে খুবই কম আছেন – যারা শেষের দিকে ঝড় তুলতে জানেন। সেখানে এই বাবু হতে পারতেন সমাধান। তাঁকে নিয়ে কাজ করলে আদর্শ পাওয়ার হিটার হয়ে ওঠার সক্ষমতা ছিল তাঁর মধ্যে।

তবে, সমস্যা হল অন্য জায়গায়। তাঁর বোলিংটা কখনওই আন্তর্জাতিক মানের নয়। একবার অবশ্য জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক পেয়েছিলেন। ওই পর্যন্তই আটকে আছে বাবুর স্বপ্ন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...