দুয়ারে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, ক্রিকেটের নতুন চ্যাম্পিয়ন খোঁজার মিশন। অথচ বাবর আজমের ব্যাটে সেই চিরচেনা ধার নেই। তিনি আর সেই রাজকীয় ব্যাটসম্যান নন, যার নামেই প্রতিপক্ষের বোলারদের কপালে ভাঁজ পড়ে। তার ব্যাটের ঝলক আর উজ্জ্বল করে না পাকিস্তানকে, রান খরায় যেন এক ছায়া মানুষ হয়ে পড়েছেন বাদশাহ বাবর।
নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চলমান সিরিজে তার পারফরম্যান্স পাকিস্তানের চিন্তার ভাঁজ আরও গভীর করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একবার ভালো শুরু পেলেও ইনিংসটাকে রূপ দিতে পারেননি। বাবরের উইকেট পড়ার পর এক ফখর জামানই চেষ্টা করেছিলেন। এরপর ভেঙে পড়ে পাকিস্তানের টপ অর্ডার। অথচ, এই বাবরই তো একসময় ছিলেন পাকিস্তানের রানের স্থিতিশীল স্তম্ভ!
এর পেছনে কি কেবল ফর্মহীনতা দায়ী, নাকি পাকিস্তানের দলীয় কৌশলও তাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে? বাবর আজমকে জোর করে ওপেনার বানানোর চেষ্টা যে তার খেলায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, সেটি বোঝার জন্য পরিসংখ্যানের গভীরে যেতে হবে না। ওয়ানডেতে তার ওপেনিংয়ের অভিজ্ঞতা প্রায় নেই বললেই চলে।
এক দশক আগে মাত্র দুই ইনিংসে ওপেন করেছিলেন, সেখানেও কোনো স্মরণীয় পারফরম্যান্স ছিল না। তাহলে কেন তাকে নতুন করে ওপেনার বানানোর চেষ্টা? কেন এই অযৌক্তিক পরীক্ষা, তাও কি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় টুর্নামেন্টের আগে? সায়িম আইয়ুবের শূন্যতা পূরণ করানোর জন্য বাবর আজমকে বলি দেওয়া কি বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত?
বাবর আজম পাকিস্তানের সেরা ব্যাটার, তিনি তিন নম্বরেই স্বচ্ছন্দ। এখানে খেলেই তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, এখানেই তিনি ভয়ঙ্কর। বনের সৌন্দর্য তার নিজের জায়গায়, বাবরের সৌন্দর্যও তিন নম্বরে। যদি তাকে তার জায়গায় ফেরানো না হয়, তাহলে পাকিস্তান নিজের সর্বনাশ নিজেই ডেকে আনবে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান। তাঁদের সামনে টানা দ্বিতীয়বার ট্রফি জয়ের হাতছানি। কিন্তু ফর্মহীন বাবর ও তার ভুল জায়গায় ব্যাটিং পাকিস্তানকে কি স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে নেবে, নাকি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দেবে? সময় খুব দ্রুত ফুরিয়ে আসছে, পাকিস্তান কি তাদের সেরা ব্যাটসম্যানকে তার নিজের জায়গায় ফিরিয়ে আনবে, নাকি আরও বড় এক ভুলের অপেক্ষায় থাকবে?