ওপেনারের চেয়ে টেল এন্ডারের ব্যাটিং গড় বেশি!

ভাবুন, কি একটা দল, যাদের আট নম্বর ব্যাটারের গড় ওপেনেরের থেকেও বেশি। বিষয়টা নি:সন্দেহে তানজিদ তামিমের জন্য অসম্মানজনক।

একসঙ্গে অনূর্ধ্ব–১৯ দলে খেলেছেন, একসঙ্গে বাংলাদেশকে এনে দিয়েছেন অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ। নামেও আছে কবিতার মতো ছন্দ—তানজিদ হাসান তামিম ও তানজিম হাসান সাকিব।

যুব পর্যায়েই বলা হচ্ছিল, আগামীর তামিম ও সাকিবকে পেয়ে গেছে বাংলাদেশ। কিন্তু জাতীয় দলে এসেও যেন আলাদা করা যাচ্ছে না তাঁদের—এইবার পারফরম্যান্সের দিক থেকেও।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে ম্যাচে দু’জনই ‘ডাক’ মেরেছেন। তবে সেই ব্যর্থতায়ও যেন কিছুটা লাভ হয়েছে তানজিদ তামিমের, কারণ তুলনাটা এখন আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এর আগে দু’জনের ওয়ানডে ব্যাটিং গড় ছিল প্রায় একই—২১ থেকে ২২-এর মধ্যে।

একজন ওপেনার, দলের ইনিংস শুরু করার দায়িত্ব তাঁর কাঁধে; আরেকজন মূলত পেসার, যিনি ব্যাট হাতে কেবল অতিরিক্ত কিছু দিতে পারেন। তবু পরিসংখ্যান বলছে, নামের আগে ‘ব্যাটসম্যান’ লেখা তানজিদের চেয়ে বোলিং অলরাউন্ডার সাকিবই এগিয়ে ছিলেন ব্যাটিং গড়ে!

ভাবুন, কি একটা দল, যাদের আট নম্বর ব্যাটারের গড় ওপেনেরের থেকেও বেশি। বিষয়টা নি:সন্দেহে তানজিদ তামিমের জন্য অসম্মানজনক।

তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একই ম্যাচে দু’জনই আউট হয়েছেন শূন্য রানে। তাতে তানজিদের ব্যাটিং গড় নেমে এসেছে ২১-এর নিচে, আর তানজিমের গড় নেমেছে ১৯-এর নিচে। পরিসংখ্যানে তানজিদ এগোলেও, পারফরম্যান্সে যেন ক্রমেই পিছিয়ে যাচ্ছেন।

ইদানিং তানজিদ তামিমের ব্যাট যেন একেবারে নির্বাক। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে শেষ ১০ ম্যাচে তিনি তিনবার ‘ডাক’ মেরেছেন। পেয়েছেন মাত্র দুটি হাফ সেঞ্চুরি। আধুনিক ক্রিকেটের এই দ্রুতগতির যুগে এমন অনিয়মিত পারফরম্যান্স মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।

২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত সাতটি ওয়ানডে খেলে তাঁর গড় মাত্র ২০.৭১। একবারের বেশি পঞ্চাশ পার করতে পারেননি। এমন পারফরম্যান্সে অন্য দলে হয়তো অনেক আগেই জায়গা হারাতেন। কিন্তু বাংলাদেশে সুযোগ পাচ্ছেন একের পর এক, বারবার ‘লাইফ লাইন’ মিলছে।

প্রশ্ন একটাই—কবে সেই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারবেন তানজিদ তামিম? জাতীয় দলে জায়গা পাকা করতে হলে শুধু নামের ছন্দ নয়, এখন প্রয়োজন ব্যাটে দৃঢ় সুর। নাহলে একসময় হয়তো কবিতার সেই সুন্দর মিলটাই থেকে যাবে শুধু ক্রিকেটের স্মৃতিতে।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Share via
Copy link