বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের সপ্তাহ খানেক পেড়িয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার কাছে নাস্তানাবুদ হবার পর ভারতীয় ক্রিকেটে কাটাছেড়াও চলছে সমান তালে। দশ বছর ধরে আইসিসি ট্রফি না জেতা ভারতের ক্রিকেটে এক প্রকার দু:সময় যাচ্ছে বলাই যায়।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল হারার সাথে সাথে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে একাদশের বাইরে রাখার বিতর্ক যেন আরো বড় আকার ধারণ করেছে। কিছুদিন আগে অশ্বিন নিজেই ফাইনালে একাদশে না থাকা নিয়ে নিজের অসন্তোষ জানিয়ে আলোচনা যেন আরো উস্কে দিয়েছেন।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে টস করতে নামার পর থেকেই বিতর্ক সঙ্গী অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের। টেস্ট র্যাংকিংয়ে বিশ্বের সেরা বোলার হয়েও ভারতের একাদশে জায়গা হয়নি অশ্বিনের। বিশ্ব সেরা এই বোলারের জন্য তাই ক্যারিয়ারে বিরাট এক ধাক্কা হয়েই এসেছে এই বাদ পড়া।
ক’দিন আগেই ভারতীয় এক সংবাদ মাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে অশ্বিন জানিয়েছিলেন তিনি নিজেও অবাক হয়েছিলেন বাদ পড়ার পর। এবার একাদশের বাইরে থাকার পর সতীর্থদের কাছ থেকে কেমন সাপোর্ট পেয়েছেন সেই প্রশ্ন করা হলে বেশ কৌশলি হয়েই উত্তর দিয়েছেন এই অফস্পিনার।
অশ্বিন জানান, ভারতীয় দলে প্রতিটি জায়গার জন্য তুমুল এই প্রতিযোগিতার কারণে কেউ আর কারো বন্ধু নেই এখন। দলে সবাই এখন সবার সহকর্মী।
অশ্বিন বলেন, ‘এখন এমন একটা সময় যখন সবাই আমার সহকর্মী। একটা সময় যখন ক্রিকেট খেলা হতো তখন সতীর্থরা সবাই ছিল বন্ধু। এখন তা সহকর্মী। এই পরিবর্তনটা এসেছে কারণ এখন সবাই নিজেকে এগিয়ে নিতে চায় এবং পাশের জনের থেকে নিজেকে একধাপ এগিয়ে রাখতে চায় তারা। তাই এখন কারোই আরেক জনকে ‘তুমি কি করছো’ বলার সময়টুকু নেই।’
ভারতীয় দলের ড্রেসিংরুমের পরিবেশ যে ভালো নেই তাই বোঝা গেল অশ্বিনের কথায়। জানান, ভারতীয় দলের হয়ে খেলাটা এখন তাঁর জন্য অনেকটা নি:সঙ্গ যাত্রার মতোই।
অশ্বিন বলেন, ‘আমার মনে হয় ক্রিকেটটা আরো ভালো হয় যখন আপনি কারো সাথে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। যখন আপনি আরেক জনের টেকনিক গুলো বুঝতে পারবেন তখন নিজের জন্য ভালো হয়। কিন্তু এটা যতটা হওয়া উচিত এর খানিকটাও হয় না। কেউ আপনাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসবে না। এটা নি:সঙ্গ এক যাত্রা।’
অশ্বিন আরো বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা ঠিক যে আমি কোনো প্রফেশনাল কোচ বা যে কারো কাছে যেতেই পারি যেখানে আমাকে টাকা পরিশোধ করে গিয়ে অনুশীলন করতে হবে। কিন্তু, আমরা অনেক সময় ভুলে যাই যে ক্রিকেট একটা নিজের ভেতর থেকে শেখা খেলা।’