বর্ণবাদী আচরণ কিংবা বৈষম্যমূলক আচরণে ঘৃণা সারা বিশ্বেরই। পুরো বিশ্বেই বর্তমানে বেশ বড় একটি ইস্যু এটি। ক্রিকেটাররাও ক্রিকেট মাঠে হাঁটু গেড়ে বর্ণবাদ ও বৈষ্যবাদী আচরণের প্রতি ঘৃণা জানান। তবে বেশ কিছু ক্রিকেটার আছেন যারা কিনা বর্ণবাদী কিংবা বৈষম্যমূলক আচরণ করে শাস্তির শিকার হয়েছেন। সম্প্রতি এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে ইংলিশ পেসার ওলি রবিনসন। তবে তিনিই প্রথম নন।
- হার্দিক পান্ডিয়া (ভারত)
ভারতীয় অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া কফি উইথ করন নামক এক চ্যাট শো তে বৈষম্যমূলক মন্তব্য করে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছিলেন। ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক করণ জোহরের আমন্ত্রণে সেই শো’তে যান হার্দিক ও লোকেশ রাহুল। মেয়েদের প্রতি তার মন্তব্য বৈষম্যবাদী হওয়ায় ২০১৯-২০ মৌসুমে ভারতের অস্ট্রেলিয়া সফরে তাকে নিষিদ্ধ করা হয়। এবং ২০ লাখ রুপি জরিমানাও করা হয় তাদের দুইজনকে। অবশ্য দুইজনই নিজেদের ভুলের জন্য পরবর্তীতে ক্ষমা চান।
- সরফরাজ আহমেদ (পাকিস্তান)
সাবেক পাকিস্তানি অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ একবার বর্ণবাদী আচরণ করে বিপাকে পড়েছিলেন। ২০১৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডার ফেলুকায়োর সাথে বর্ণবাদী আচরণ করেন সরফরাজ। সরফরাজ ফেলুকায়োকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, ‘অ্যাই কালো! তোমার মা আজ কোথায় বসেছে? আজ নিজের জন্য কি দোয়া করতে বলে এসেছো?’
এরপর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) তাকে চার ম্যাচ নিষিদ্ধ করে। পরবর্তীতে ব্যক্তিগত টুইটার একাউন্ট থেকে অবশ্য ফেলুকায়োর কাছে ক্ষমাও চান সরফরাজ। এবং সেখানে ফেলুকায়োকে ‘কৃপাময়’ আখ্যা দিয়ে ক্ষমা চান।
- হরভজন সিং (ভারত)
সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু সায়মন্ডসকে একবার ‘বানর’ বলে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন সাবেক ভারতীয় স্পিনার হরভজন সিং। ২০০৭-০৮ মৌসুমে ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজে এই কান্ড ঘটে ৷ এটিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ‘মাঙ্কি গেট স্ক্যান্ডাল’ হিসেবেই জানে সবাই।
সায়মন্ডসকে বানর বলায় তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ম্যাচ রেফারি মাইক প্রক্টোর হরভজনকে নিষিদ্ধ করে৷ মাইক সেই ঘটনা সম্পর্কে বলেন, ‘আমি নিশ্চিত হতে পেরেছি যে হরভজন সায়মন্ডসকে এই শব্দ বলেছে ৷ এবং সে এটা বলে একটা বৈষম্য দেখাতে চেয়েছে যেটা একটা ঘৃণ্য কান্ড।
- ওলি রবিনসন (ইংল্যান্ড)
ইংলিশ পেসার ওলি রবিনসন বর্ণবাদী এবং বৈষম্যমূলক কমেন্টের কারণে সম্প্রতি তাকে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল থেকে বাদ দেওয়া হয়৷ জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার আট বছর আগে যখন তিনি কৈশর ছিলেন টুইটারে বৈষম্যবাদী কমেন্ট করেন! যেটি ইংল্যান্ড দলে ডাক পাওয়ার পর সম্প্রতি ভাইরাল হয়। এরপর ইংল্যান্ড এন্ড ওয়ালস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) থেকে তাকে নিষিদ্ধ করা হয়।
ওলি রবিনসন এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি আমার বৈষম্যবাদী কমেন্টের জন্য লজ্জিত যেটা আমি আট বছর আগে করেছিলাম। যেটা সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে। আমি এটা পরিষ্কার করতে চাই আমি বর্ণবাদী নই কিংবা আমি বৈষম্যবাদী নই।’
- সুনীল গাভাস্কার (ভারত)
বিরাট কোহলির স্ত্রী ও বলিউড তারকা আনুশকা শর্মার প্রসঙ্গে একটা মন্তব্য করে সমালোচিত হন সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কার। ২০২০ সালের আইপিএল ম্যাচে পাঞ্জাবের বিপক্ষে ব্যাঙ্গালুরুর ম্যাচ চলাকালে গাভাস্কার বলেন, ‘লকডাউন ছিল। তখন কোন কোহলিকে শুধু আনুশকার বল মোকাবেলা করতে দেখলাম, তাতে আর কিই বা প্র্যাকটিস হবে।’
বিষয়টা এতই গুরুতর হয়ে যায়, যখন আনুশকা এই বৈষম্যবাদী মন্তব্যের বিরুদ্ধে খোলা চিঠি লেখেন। যদিও, পরে আত্মপক্ষ সমর্থন করে সুনীল গাভাস্কার নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দেন।