ভারত-ইংল্যান্ডের প্রথম টেস্ট।
ট্রেন্ট ব্রিজের সবুজ ঘাসের গালিচায় ডিউক বল হাতে প্রস্তুত জেমস অ্যান্ডারসন। এরপর আছে স্টুয়ার্ট ব্রড, ওলি রবিনসনরাও। তার উপর ট্রেন্ট ব্রিজের আকাশ মেঘলা! অ্যান্ডারসন-ব্রডদের জন্য পছন্দের কন্ডিশন। প্রথম ইনিংসে স্বাগতিক ইংল্যান্ডও গুড়িয়ে গেছে মাত্র ১৮৩ রানে!
এই প্রতিকূল পরিবেশেই ফিরে এলেন তিনি। নতুন করে চেনালেন নিজেকে। দুই বছর পর সাদা পোশাকে ব্যাট করতে নেমে লোকেশ রাহুল খেলেছেন ৮৪ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। অ্যান্ডারসন-ব্রডদের দারুণ ভাবে সামলিয়ে ফেরার ম্যাচেই দলের পক্ষে খেলেছেন অনবদ্য এক ইনিংস। এই সবুজ গালিচায় বিপক্ষ কন্ডিশনে ২১৪ বল খেলেন তিনি!
সবশেষ সাদা পোশাকে খেলেছেন ২০১৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। প্রথম ইনিংসে হোল্ডারের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আর দ্বিতীয় ইনিংসে কেমার রোচের বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন রাহুল। দুই ইনিংসেই বাজে ফুটওয়ার্কের কারণে উইকেট দিয়ে আসেন তিনি।
এরপর দল থেকে বাদ পড়লেন! দুই বছর তিনি দলের বাইরে। মাঝে মাত্র ২ বার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দেখা যায় তাকে। এরপর চলতি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ দিয়েই একাদশে ফিরলেন তিনি। আর ফিরেই ইংলিশ কন্ডিশনে খেললেন ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস।
প্রথম ইনিংস শেষে রাহুল বলেন, ‘আমার মধ্যে অনেক চিন্তাই ঘুরপাক খাচ্ছিলো। আমি ভেবেছিলাম লাল বলের ক্রিকেটেও আমি দুই-তিনটি ভিন্ন ধরনের শট খেলতে পারবো। তবে নিজেকে কন্ট্রোল করাও শিখতে হবে যখন উইকেট কঠিন কিংবা চ্যালেঞ্জিং হবে। অথবা যখন ভালো কোনো বোলারের বিপক্ষে বা স্যুইংয়ের বিপক্ষে খেলবো। এমন কন্ডিশনে অবশ্যই আপনাকে দেখেশুনে খেলতে হবে।’
রাহুল বলছিলেন এই বাইরে থাকার সময়টায় তিনি কী শিখেছেন, ‘আমি এই বিষয়গুলোই শিখেছি, এগুলো নিয়েই কাজ করেছি টেস্টে ব্যর্থ হবার পর। আমি জানতাম আমি পারবো। টেস্ট ক্রিকেটে সুযোগ না পাওয়ার পর আমি বাইরে থেকে ক্রিকেট দেখেছি। ম্যাচগুলো দেখা, ব্যাটসম্যানদের ব্যাট করতে দেখা আমার জন্য যথেষ্ট ছিলো। যেকোনো ফরম্যাটেই ক্রিকেট খেলতে হলে শট সিলেকশন অবশ্যই জরুরি। উইকেটে ডিসিপ্লিন ব্যাটিং করতে পেরে বেশ খুশি আমি, সেই সাথে দলকেও একটা ভালো অবস্থানে নিতে পেরে।’
সবশেষ ২০১৮ সালে ইংল্যান্ড সফরে পাঁচ টেস্টেই দলে ছিলেন রাহুল। প্রথম চার টেস্টের কোনো ইনিংসেই ছুঁতে পারেননি চল্লিশের কোটা। জেমস অ্যান্ডারসন-স্টুয়ার্ট ব্রডদের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি তিনি। তবে শেষ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন তিনি।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজর প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২১৭ রান সংগ্রহ করে ভারত। ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেন লোকেশ রাহুল। প্রায় দুই বছর পর দলে ফিরেই নিজের ভুল শুধরে ব্যাট হাতে সেরাটা দিয়ে কামব্যাক ইনিংস স্বরণীয় করে রাখলেন তিনি।