এক বনে কখনো দুই রাজা হয় না, কথাটা সত্যি। মাঝে মাঝে একই বনে একাধিক যোগ্য প্রার্থী আসলেও ছায়া হয়ে থাকতে হয় বাকিদের। ক্রিকেটেও ঘটে এমনটা, একই প্রজন্মে এমন দু’জন স্কোয়াডে আসেন যারা হয়তো ভিন্ন যুগে জন্ম নিলে রাজ করতে পারতেন। কিন্তু ভাগ্যের কাছে হেরে ছায়া হয়ে থাকতে হলো।
এমন দুর্ভাগা ক্রিকেটারের সংখ্যা নেহাত কম নয়। তবু খেলা ৭১ চেষ্টা করেছে সবচেয়ে দুর্ভাগাদের খুঁজে বের করতে।
- স্টুয়ার্ট ল (অস্ট্রেলিয়া)
স্টুয়ার্ট ল নি:সন্দেহে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে দুর্দান্ত ব্যাটসম্যানদের মধ্যে একজন। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে তিনি পঞ্চাশের বেশি গড়ে ২৭০৮০ রান করেছিলেন। কিন্তু স্টিভ ওয়াহ, মার্ক ওয়াহ, রিকি পন্টিংদের ভীড়ে তাঁকে সুযোগ দেয়া হয় সম্ভব হয়নি নির্বাচকদের। মাত্র একটা টেস্ট খেলেই তাই ইতি টানতে হয়েছে ক্যারিয়ারের।
ওয়ানডেতে বেশ কয়েক ম্যাচ খেললেও সেটা লয়ের প্রতিভার প্রতি সুবিচার হয়নি। শেষপর্যন্ত দুর্ভাগ্য মেনে নিয়েই সরে যেতে হয়েছে তাঁকে।
- অমল মজুমদার (ভারত)
অস্ট্রেলিয়ার যেমন আছে স্টুয়ার্ট ল, তেমনি ভারতের আছে অমল মজুমদার। তিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে রীতিমতো কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন, তবু সুযোগ আসেনি জাতীয় দলে। পাবেন ই বা কিভাবে, তখন তো দলে ছিলেন শচীন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড়, সৌরভ গাঙ্গুলির মত কিংবদন্তিরা।
সবমিলিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রায় পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই গড়ে এগারো হাজারের বেশি রান করেছেন অমল। অন্য যুগে জন্মালে এমন ব্যাটার নির্ঘাত অটো চয়েজ থাকতেন একাদশে।
- ব্র্যাড হজ (অস্ট্রেলিয়া)
একবিংশ শতাব্দীর দিকে আরো একজন দুর্ভাগা ক্রিকেটার ব্র্যাড হজ। প্রতিভা আর ধারাবাহিকতার অনন্য সমন্বয় ছিল তাঁর মাঝে; এমনকি টেস্ট ক্যারিয়ারে একটা ডাবল সেঞ্চুরিও আছে তাঁর। কিন্তু ছয় ম্যাচ খেলেই সমাপ্তি ঘটেছে হজের পথচলা। এই ব্যাটার নির্ঘাত আক্ষেপ করবেন কেন বিধাতা তাঁকে এ যুগে পাঠিয়ছে।
স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল (অস্ট্রেলিয়া)
শেন ওয়ার্নের সঙ্গে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়েছিল স্টুয়ার্ট ম্যাকগিলকে। এরপর বোধহয় বলার আর কিছু থাকে না; কেবল ওয়ার্ন চোটে থাকলে কিংবা বিশ্রামে থাকলে ম্যাচ খেলার সুযোগ পেতেন তিনি।
অথচ এসসিজিতে তাঁর রেকর্ড কিংবদন্তি লেগ স্পিনারের চেয়েও ভাল ছিল – মাত্র ৪৪ টেস্ট ক্যারিয়ারে ২০৮ পেয়েছিলেন ম্যাকগিল, হয়তো ওয়ার্ন যুগে না আসলে আরো বেশি কিছু অর্জন করতে পারতেন তিনি।
- রঙ্গানা হেরাথ (শ্রীলঙ্কা)
ওয়ার্ন-ম্যাকগিল দ্বৈরথের লঙ্কান প্রতিচ্ছবি বলা যায় রঙ্গানা হেরাথ বনাম মুত্তিয়া মুরালিধরনের দ্বৈরথকে। অবিশ্বাস্য প্রতিভা নিয়ে জাতীয় দলের রাডারে আসলেও মুরালির কারণে মেইন বোলার হতে পারেননি কখনো। তবু অনেকবার ম্যাচ উইনিং পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন এই স্পিনার, ৮৯ ম্যাচে নিয়েছেন ৪১৫ উইকেট। কি জানি, অন্য প্রজন্মে খেললে নিশ্চয়ই পরিসংখ্যান আরো সমৃদ্ধ হতো।