ভিনিসিয়াস জুনিয়র, সাত নম্বর জার্সি পেয়েছেন ঠিকই কিন্তু কিলিয়ান এমবাপ্পে আসলে তিনি কি আদৌ দলের মূল তারকা হবেন? এমন প্রশ্ন মৌসুমের শুরু থেকে অহরহ শোনা গিয়েছে। বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে ম্যাচের পর অবশ্য প্রশ্নটা একেবারে হারিয়ে গিয়েছে সমুদ্রের তলদেশে, সবচেয়ে কঠিন নিন্দুকেরও মনে একটু সংশয় জাগবে না। ভিনি কেবল দলের মূল তারকা হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেননি, তিনি এখন মহাতারকাও বটে।
দুই দুইবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন সাম্বা বয়, দু’বারই ফাইনালে গোল করেছেন। কিন্তু মর্যাদার টুর্নামেন্টে কখনো হ্যাটট্রিক করা হয়নি তাঁর। সেই অপূর্ণ বাসনা এবার পূর্ণ হলো, বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করলেন তিনি। তাঁর ঝড়ে খড়কুটোর মত উড়ে গিয়েছে দলটি। এই নিয়ে শেষ তিন ম্যাচে পাঁচ গোল করতে দেখা গেলো তাঁকে।
জার্মানি থেকে স্পেন উড়ে আসার সময় বরুশিয়া নিশ্চয়ই জানতো লেফট উইংয়ে এই ব্রাজিলিয়ান থাকবেন। তাঁকে সামলানোর প্রস্তুতিও নিশ্চয় নিয়েছিল তাঁরা, কিন্তু মাঠে যা ঘটেছে সেটা অলৌকিক কিংবা অতিমানবীয়। আর সেজন্যই সব ট্যাকটিক্স ভুলে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে বরুশিয়ার ডিফেন্ডাররা।
টার্ন, টুইস্ট, স্পিড – মাদ্রিদের যুবরাজ এদিন ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। মনে হচ্ছিলো বল তিনি পা দিয়ে খেলছেন না বরং খেয়াল খুশিমত নাচাচ্ছেন। আর বলের সঙ্গে সঙ্গে নেচে উঠছে পুরো রক্ষণভাগ। দ্বিতীয় গোলটার কথাই ধরা যাক, নিজেদের অর্ধেই বল পেয়েছিলেন তিনি। একটু অপেক্ষা করতে হয়নি তাঁকে, একটু ভাবতে হয়নি। বল নিয়ে সোজা দৌড়ে কাটব্যাক করেছেন অতঃপর বিশ গজ দূর থেকে শট আর গোল।
গোলের আলোচনা বাদ থাকুক, তা তো সবাই দেখেছে বা দেখবে। কিন্তু যে ইম্প্যাক্ট ভিনিসিয়াস দেখিয়েছেন সেটা কতজনে দেখেছে? দল পিছিয়ে পড়েছে, দলের গোল প্রয়োজন এমন জরুরী মুহূর্তে তিনি যেভাবে বটগাছের মত আশ্রয় হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছেন সেটা কোন পরিসংখ্যানে লেখা থাকবে?
পরিসংখ্যানে যাই লেখা থাকুক, সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর দিকে তাকিয়ে থাকা প্রতিটা চোখ অবশ্য জেনে গিয়েছে ভিনিসিয়াস জুনিয়র কি করতে পারেন।