ছয় নাই ওরে ছয় নাই!

খেলাটা তো সব সময়ই এমন ছিল না। খুব বেশি আগের কথা নয়, যখন ওয়ানডেতে টেনেটুনে ২৫০ করতে পারলেই জয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যেত। সে যাক, আমরা আজকে খুঁজে পেয়েছি এমন পাঁচজন ক্রিকেটার যারা তাঁদের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ন্যূনতম একটা ছয়ও হাঁকাননি।

ক্রিকেটটা এখন বদলে গেছে, হয়েছে মারমার কাটকাট লড়াই। ব্যাটসম্যানেরা তো পারলে প্রথম বল থেকে ছয় হাঁকানো শুরু করেন। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট চলে আসার পর ক্রিকেট মানেই এখন ছক্কার খেলা। তাঁর প্রভাব পড়েছে ওয়ানডেতেও।

কিন্তু খেলাটা তো সব সময়ই এমন ছিল না। খুব বেশি আগের কথা নয়, যখন ওয়ানডেতে টেনেটুনে ২৫০ করতে পারলেই জয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যেত। সে যাক, আমরা আজকে খুঁজে পেয়েছি এমন পাঁচজন ক্রিকেটার যারা তাঁদের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ন্যূনতম একটা ছয়ও হাঁকাননি। দেখা যাক তাঁরা কারা।

  • ক্যালাম ফার্গুসন (অস্ট্রেলিয়া)

ক্যালাম ফার্গুসন তাঁর ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলেছিলেন ২০১১ সালে, অস্ট্রেলিয়ার হয়ে। ২০০৯ সালেই অভিষেকের সময় ফার্গুসনের বয়স ছিল ২৪ বছর। দুই বছরের ক্যারিয়ারে হলুদ জার্সিতে তিনি খেলে ফেলেছিলেন ৩০ ওয়ানডে, করেছিলেন ৪১.৪৩ গড়ে ৬৬৩ রান।

এই ৩০ ম্যাচে কিন্তু গোটা পাঁচেক হাফ সেঞ্চুরিও ছিল তাঁর। যা হোক, ছোট্ট এই ক্যারিয়ারে কোন ছয় মারতে পারেননি তিনি। তা না মারলেও বা কি, ফার্গুসনের ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট কিন্তু  ৮৫!

  • জিওফ বয়কট (ইংল্যান্ড)

জিওফ্রে বয়কট যখন খেলতেন, তখন কিন্তু ওয়ানডের চাইতে টেস্ট ম্যাচ ছিল একটু বেশি জনপ্রিয়। সেই ফরম্যাটে জিওফ বয়কট যে সেরাদের কাতারে ছিলেন তা তো ২২ সেঞ্চুরিতে ৮১১৪ রানেই প্রমাণ মেলে। তবে, ইংল্যান্ডের হয়ে ৩৬ ওয়ানডেতেও সুযোগ পেয়েছিলেন বয়কট, করেছিলেন ১০৮২ রান।

তবে, জিওফ বয়কটের স্ট্রাইক রেট ছিল ৫৩.৫৬। এটা অবশ্য খুব বেশি আশ্চর্যের ব্যাপার না, গোটা ক্যারিয়ারে বয়কট যে কোন ছয়ই মারেননি। তবে, এটা ঠিক যে তিনি ইংল্যান্ডের ইতিহাসেরই সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন।

  • থিলান সামারাবিরা (শ্রীলঙ্কা)

থিলান সামারাবিরা অবশ্য আগের জন মানে জিওফ্রে বয়কটের মত পুরনো যুগের ক্রিকেটার নন। তিনি মোটামুটি আধুনিক যুগের ক্রিকেটার। ক্যারিয়ারজুড়ে সাদা পোশাকে তিনি ছিলেন অনন্য। এই ফরম্যাটে ৪৯ গড়ে ৫০০০ রানও তাঁর যোগ্যতারই প্রমাণ দেয়।

তবে, দীর্ঘ ১২ বছরে তিনি শ্রীলঙ্কার হয়ে ৫৩ ম্যাচে মাঠে নেমেছেন। কিন্তু এই ফরম্যাটে কখনওই সুবিধা করতে পারেননি তিনি, করেছেন সাকুল্যে ৮৬২ রান। শুধু কি তাই, ওয়ানডেতে যে কখনই কোন ছয় মারতে পারেননি তিনি।

  • ডিওন ইব্রাহিম (জিম্বাবুয়ে)

সাবেক জিম্বাবুইয়ান ওপেনিং ব্যাটসম্যান দিওন ইব্রাহিমের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে ২০০১ সালে। তিনি স্বর্ণযুগের জিম্বাবুয়ে দলের সাথে খেলেছেন, আবার দলটির পতনও দেখেছেন। উপরের অন্য সবার মত ওয়ানডে ক্যারিয়ার মোটেও ছোট ছিল না ইব্রাহিমের।

সব মিলিয়ে জিম্বাবুয়ের হয়ে তিনি মাঠে নেমেছেন ৮৯ ওয়ানডেতে। এই ৮৯ ওয়ানডেতে ২০.৬১ গড়ে ১১৪৩ রান করেছেন ইব্রাহিম। গড়টা একটু কম হলেও নামের পাশে এক সেঞ্চুরি আর চার হাফ-সেঞ্চুরি আছে ইব্রাহিমের। তবে মজার ব্যাপার হল, এত কিছুর পরও ৮৯ ওয়ানডেতে কখনই কোন ছক্কা মারতে পারেননি ইব্রাহিম।

  • মনোজ প্রভাকর (ভারত)

সাবেক এই ভারতীয় অলরাউন্ডার অবশ্য কাপিল দেবের সাথে ১৯৯৯ এর সেই কান্ডের পর বেশ পরিচিত নামই। ছিলেন কার্যকরী এক ফাস্ট বোলার, তা সত্ত্বেও ব্যাট হাতে মনোজকে কার্যকরী এক ব্যাটসম্যানই ভাবা হত। ক্যারিয়ারজুড়ে তিনি ওয়ানডেও খেলেছেন উপরের সবার চাইতে বেশি- ১৩০ টি!

ভারতের হয়ে তিন বিশ্বকাপেও মাঠে নেমেছেন তিনি (১৯৮৭, ১৯৯২, ১৯৯৬) । সব মিলিয়ে পঞ্চাশ ওভারের ফরম্যাটে ২ সেঞ্চুরি আর ১১ হাফ-সেঞ্চুরিতে করেছেন ১৮৫৮ রান। এত কিছু করে ফেললেও, ক্যারিয়ারে কখনওই ওয়ানডে ফরম্যাটে ছক্কা মারতে পারেননি মনোজ প্রভাকর।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...